v চীনের বিশ্ব কোষv চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগ
ওয়াং ছিয়াং হুয়া --চীনাদের মতাদর্শ মুক্তি দেয়ার ব্যাপারে ব্যাপক অবদান রেখেছেন
2008-11-14 20:18:49

শ্রোতাবন্ধুরা, ১৯৭৮ সালে প্রকাশিত " বাস্তবতা হচ্ছে সত্যতা পরীক্ষা দেয়ার একমাত্র মানদন্ড" নামক একটি প্রবন্ধ সারা চীনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছিল। এ প্রবন্ধে সত্যতার মানদন্ড সম্পর্কে ব্যাপক আলোচনা করা হয়েছে। এটি চীনের সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে মতাদর্শগত এবং তত্ত্বগত প্রস্তুতির সূত্র পাত করেছে।

এ প্রবন্ধের লেখক হচ্ছেন " কুয়াং মিং পত্রিকা"-এর তত্কালীণ সম্পাদক ওয়াং ছিয়াং হুয়া । ৩০ বছর তিনি সংবাদ পত্রের জগতে জীবন কাটিয়েছে। এখন আমাদের সংবাদদাতা ওয়াং ছিয়াং হুয়ার বাসায় গিয়ে তার সাক্ষাত্কার নিয়েছেন। বন্ধুরা, আজকের " তাহাদের কথা" অনুষ্ঠানে আমারা তার বিষয় নিয়েই আলোচনা করবো।

৭৫ বছরের বয়স্ক ওয়াং ছিয়াং হুয়া একজন হালকা-পাতালা মানুষ। বয়স বেশি হলেও তিনি এখন বই পড়তে পছন্দ করেন। সাক্ষাত্কারে তিনি বহুবার সেকালের বইপত্র নিয়ে আমাদের সংবাদদাতার সঙ্গে আলোচনা করেছেন।

১৯৭৭ সালে " কুয়াং মিং পত্রিকা"-এর একজন সম্পাদক হিসেবে চীনের নান চিংয়ে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে তিনি উপস্থাপিত ছিলেন। সম্মেলনে নান চিং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হু ফু মিং " উত্পাদনের শক্তি হচ্ছে সর্বাধিক অবস্থানের ভিত্তি" সংক্রান্ত বিশ্লেষণ ধর্মী তত্ত্ব উপস্থাপিত করেছেন। এ তত্ত্বটি আসলে সঠিক। তবে সেসময় ছিল চীনের " সাংস্কৃতিক বিপ্লব" শেষের বছর।

প্রায় ১০ বছরের রাজনৈতিক মেরুকরণের কর্মকান্ড নয়া চীনের একমাত্র শীর্ষ নেতা মাও সে তুংয়ের উদ্যোগে বাস্তবায়িত হয়। তবে বিপ্লব বিরোধী গোষ্ঠী তা ব্যবহার করে চীনের খুবই গুরুতর ক্ষতি করেছিল । সেসময় চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় নেতারা দুই পর্যায়ের ধারণা পোষণ করতেন আর তা হলো মাও সে তুংয়ের নির্ধারিত নীতিগুলো , যার প্রতি সবাই নিশ্চিতভাবে অবিচল থাকেন।

আরেকটি মাও সে তুংয়ের নির্দেশনা , যা সবাই নিশ্চিতভাবে মেনে চলবেন। সুতরাং, অনেকেই হু ফু মিংয়ের উপস্থাপিত এই নতুন তত্ত্বের সমালোচনা করেন। কিন্তু সম্মেলনের পর, ওয়াং ছিয়াং হুয়া এ নতুন ধারণার প্রতি তার সম্মতি প্রকাশ করেন। তিনি বলেন: " আমি হু মিং ফু'র ধারণার সাথে একমত থাকার কথা তাকে জানিয়েছি। পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিত আরো কয়েকটি সেমিনারে অনেক বিখ্যাত পন্ডিতগণও এ ধরণের ধারণার উপস্থাপন করেছিলেন। সুতরাং, আমি আপনার মতকে অনেক সমর্থন করি। যেমন ভাবা তেমন কাজ আমি তাকে এ সম্পর্কে একটি প্রবন্ধ লেখার কথা বলেছি। বলতে পারেন কেন তাকে বাছাই করেছি? আসলে আমি মনে করি, এ মানুষের মতাদর্শ বেশ উন্মুক্ত এবং তার সঠিক তত্ত্বগত ভিত্তি রয়েছে।"

এভাবে হু ফু মিং নিজের দু'টি প্রবন্ধ ওয়াং ছিয়াং হুয়ার কাছে পাঠিয়েছেন।প্রবন্ধ দু'টি দেখার পর, ওয়াং ছিয়াং হুয়া এর অন্যতম " বাস্তবতা হচ্ছে সত্যতা পরীক্ষা দেয়ার একমাত্র মানদন্ড" নামক প্রবন্ধটি প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেন। " কুয়াং মিং পত্রিকা"-এর তত্কালীন প্রধান সম্পাদক ইয়াং সি কুয়াং এ প্রবন্ধ দেখার পর এর অনেক প্রশংসা করেছেন। তিনি মনে করেন, এ প্রবন্ধ কৌশলগত দিক থেকে অনেক সহায়ক । একটু সংশোধনের পর এ প্রবন্ধ পত্রিকার প্রথম পাতার প্রথম ফলামে ছাপা রাখা উচিত।

১৯৭৮ সালের ১১ মে এ প্রবন্ধ " কুয়াং মিং পত্রিকা"-এর প্রথম পাতার প্রথম ফলামে প্রকাশিত হয়। সেদিন সন্ধ্যায় চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা--সিন হুয়া পুনরায় এ প্রবন্ধ প্রকাশ করে। দ্বিতীয় দিনেও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সংবাদমাধ্যমও পরপরই এ প্রবন্ধ প্রকাশ করে। এভাবে সারা চীনের বিভিন্ন প্রদেশ, শহর এবং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের কমিউনিস্ট পার্টির পত্রিকাও এ প্রবন্ধের প্রকাশ করে।

1 2
  • সাক্ষাত্কার
  • সর্বশেষ সংবাদ
  • অন-লাইন জরীপ
     
    © China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
    16A Shijingshan Road, Beijing, China