v চীনের বিশ্ব কোষv চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগ
মমতাতয়ী মা ওয়াং চিনলিয়েন
2008-10-07 20:31:31

    মাদাম ওয়াং চিনলিয়েন চিয়াংসি প্রদেশের কানচৌ শহরের কানচৌ জেলার শাতিচেন থানার কেন্দ্রীয় প্রাথমিক স্কুলের একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ।তিনি গত ১০-১২ বছর ধরে যাদের বাবা মা শহরে মজুরী খাটতে গেছেন এমন প্রায় ২০০ ছেলেমেয়ের জন্য একটি আরামদায়ক ও উষ্ণ বাড়ি গড়ে তুলেছেন । এই বাড়িটা হল কানসিয়েন জেলার শাতিচেন থানার " শিশু কেন্দ্র" ।

    শিশু কেন্দ্রটি গ্রামের একটি সাধারণ প্রাঙ্গনে অবস্থিত । সুখী ছেলেমেয়েরা আনন্দের সঙ্গে খেলাধুলা করছিল আর ছেলেমেয়েদের মমতাময়ী মা ওয়াং চিনলিয়েন প্রাঙ্গনের এক কোণে কিছু ভেষজ ওষুধ রোদে শুকাছিলেন । তিনি বলেন, সেগুলো জ্বর ও শিশুদের হাত-পা ও মুখের রোগের ওষুধ । নির্দিষ্ট সময়ে কিছু তরল ওষুধ খাওয়ালে বেশ উপকার হবে ।

    এখন শিশু কেন্দ্রটিতে প্রায় ৫০জন ছেলেমেয়ে আছে ।এই সব ছেলেমেয়েকে ভালভাবে দেখাশোনা করার জন্য ওয়াং চিনলিয়েন প্রতিদিন সকাল ৫টায় উঠে হাত-মুখ ধোঁয়ার পানি গরম করেন , নাস্তা প্রস্তুত করেন এবং ছেলেমেয়েরা খেয়েদেয়ে স্কুলে যাওয়ার পর তিনি তাদের কাপড়চোপড় ধুঁয়ে দেন এবং দুপুরের খাবার তৈরী করেন। রাতে তিনি ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করতে সাহায্য করেন ।

    শুরুতে শিক্ষক হিসেবে নিজের দায়িত্বের কথা ভেবে ওয়াং চিনলিয়েন বাবা মা কাছে নেই এমন সব ছেলেমেয়ের ওপর খুব মনোযোগ দেন । বেশি বেশি মানুষ শহরে মজুরের কাজ করতে যাওয়ার সাথেসাথে গ্রামে রয়ে যাওয়া ছেলেমেয়ের সংখ্যাও বেড়ে যাচ্ছে । দীর্ঘকাল ধরে বাবা মা কাছে নেই বলে বাবা মার স্নেহের অভাবে অনেক ছেলেমেয়ের চরিত্র বা মানসিক সমস্যা দেখা দেয় । তারা স্কুলে যেতে চায় না, অমিশুক হয়ে পড়ে এবং সহজে ক্ষেপে যায় । তাদের অসদাচরণ ওয়াং চিনলিয়েনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। তখন থেকে তিনি ছেলেমেয়েদের ত্রুটি সংশোধনে সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নেন ।  

   এত কম বয়সী ছেলেমেয়ের অসদাচরণ দেখে আমার দুঃখ লাগতে থাকে । একজন শিক্ষক হিসেবে আমি অবশ্যই তাদেরকে সাহায্য করব । ১৯৯৫ সালে বাবা মা শহরে মজুরের কাজ করতে যাওয়ায একটি ছাত্রের লেখাপড়ার মান দিনদিন খারাপ হয়ে যাচ্ছে দেখে তিনি নিজ উদ্যোগে জীবনযাপনের যাবতীয় বিষয়ে তাকে যত্ন নিতে থাকেন এবং লেখাপড়ায় সাহায্য করেন । অবশেষে ছাত্রটির লেখাপড়ার উন্নতি হয়েছে । ব্যাপারটা জেনে ছেলেটির বাবা মা শিক্ষক ওয়াংয়ের কাছে খুব কৃতজ্ঞ এবং শিক্ষক ওয়াং ছেলেকে নিজের কাছে রাখবেন বলে অনুরোধ করেন । শিক্ষক ওয়াংয়ের বাড়িতে ছেলেটি বসবাস শুরু করে । এর পর শহরে মজুরের কাজ করতে যাওয়া অনেকে শিক্ষক ওয়াংয়ের সাহায্য চেয়েছেন । ১৯৯৫ সাল থেকে একের পর এক ছেলে বা মেয়ে শিক্ষক ওয়াংয়ের বাড়িতে প্রবেশ করতে থাকে । এক, দুই, তিন, দশ , বারো--এভাবেই কান সিয়েন জেলার শিশু কেন্দ্রটি গড়ে ওঠে ।

1 2
  • সাক্ষাত্কার
  • সর্বশেষ সংবাদ
  • অন-লাইন জরীপ
     
    © China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
    16A Shijingshan Road, Beijing, China