v চীনের বিশ্ব কোষv চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগ
পেইচিংয়ের সর্বত্রগামী সাবওয়ে
2008-08-05 15:44:50

    শহরে যাতায়াতের জন্য পেইচিংবাসীর প্রথম পছন্দ পাতাল রেল বা সাবওয়ে ।এই সাবওয়েতে যাওয়া যায় না এমন কোনো জায়গা পেইচিংয়ে নেই।সহজে এবং দ্রুত পৌঁছানোর সুবিধার কারণে পেইচিংয়ের সাবওয়ে এত জনপ্রিয়। শ্রোতাবন্ধুরা, যদি আপনারা পেইচিং অলিম্পিক গেমসের সময় পেইচিং-এ ভ্রমন করতে চান বা প্রতিযোগিতা দেখতে চান, তাহলে সাবওয়ের চেয়ে ভালো বিকল্প আর নেই। আজকের 'চলুন বেড়িয়ে আসি' অনুষ্ঠানে আমরা আপনাদেরকে পেইচিংয়ের সাবওয়েতে ভ্রমণের একটা দিক নির্দেশনা দেয়ার চেষ্টা করবো। পেইচিং-এ সাবওয়েতে চড়তে চাইলে যে সব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে সেগুলোও আপনাদেরকে জানাবো।

    বর্তমানে পেইচিংয়ে মোট ৫টি পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত সাবওয়ে লাইন আছে। এ সব লাইনের মোট দৈর্ঘ্য ১শ' ৪০ কিলোমিটারেরও বেশি। এর মধ্যে পা থোং লাইনের সঙ্গে যুক্ত লাইন-১ চলে গেছে পেইচিং শহরের পূর্ব থেকে পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত। এই দুই লাইনের দৈর্ঘ্য প্রায় ৫০ কিলোমিটার। লাইন-৫ যুক্ত করেছে শহরের দক্ষিণ থেকে উত্তর প্রান্ত । লাইন-২ দেখতে বর্গাকৃতির। শহরের কেন্দ্রস্থলকে ঘিরে রয়েছে এই লাইনটি। এই লাইনে উঠে বসে থাকলে আপনি ৪০ মিনিটের মাথায় যেখান থেকে উঠেছিলেন সেখানেই নিজেকে আবার আবিষ্কার করবেন। এই লাইনে রয়েছে অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান। লাইন-১৩ ঘিরে রয়েছে পেইচিংয়ের উত্তরাঞ্চল। এই ৫টি লাইন ছাড়াও পেইচিং অলিম্পিক গেমসের আগে আরো ৩টি নতুন লাইন চালু হবে। এর মধ্যে বিশেষভাবে বলতে হবে অলিম্পিক শাখা লাইনের কথা। কারণ এই লাইনটি যুক্ত করেছে প্রধান অলিম্পিক স্টেডিয়ামগুলো।

    বর্তমানে চালু ৫টি লাইনে পেইচিংয়ের বিভিন্ন অঞ্চলের স্টপেজের সংখ্যা প্রায় ১০০। এর মধ্যে রয়েছে ১০টি ট্রান্সফার স্টেশন। উল্লেখযোগ্য ট্রান্সফার স্টেশনগুলো হচ্ছে ফুশিংমেন, শিজিমেন ও তুংতান স্টেশন। এসব ট্রান্সফার স্টেশনে যাত্রীসংখ্যা অনেক বেশি। বলা যায় প্রায় স্রোতের মতো। ট্রান্সফার স্টেশনগুলো দিয়ে অনায়াসে মানুষ লাইন বদল করে তার কাঙ্ক্ষিত লাইনে যেতে পারে। হু নান থেকে পেইচিংয়ে প্রশিক্ষণ নিতে আসা মাদাম স্যুইং সংবাদদাতাকে জানিয়েছেন, পেইচিংয়ে থাকার সময় তিনি সাধারণত সাবওয়েতে করে বাইরে যান। তিনি বলেন,

    যেখানে আমি থাকছি সেটা লাইন-২এর ছাংছুনজিয়ে স্টেশনের খুব কাছে। এখান থেকে পাপাওশান স্টেশনে পৌঁছতে সময় লাগে মাত্র আধা ঘন্টা। পাপাওশান স্টেশনের পাশেই আমার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। সাবওয়েতে করে শপিং আর ভ্রমণ করতে যাওয়া খুবই সুবিধাজনক।

    বিভিন্ন লাইন মূলত ভোর ৫টা থেকে রাত ১১/১২ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। অলিম্পিক চলাকালে এই সময় কিছুটা বাড়ানো হবে। অলিম্পিকের উদ্বোধনী ও সমাপনী দিনে লাইনগুলো অবিরাম ২৪ ঘন্টা চালু থাকবে।

    এখন যেমনটা চলছে তেমনি আরো কিছুকাল এক টিকিটে 'যতক্ষণ, যতবার, যত খুশি যাও' নিয়ম চালু থাকবে। তবে মাটির নীচ থেকে ওপরে উঠলেই আবার নতুন টিকিট কিনে ঢুকতে হবে। আপনি যে কোনো সাবওয়ে স্টেশনে ঢুকলেই দেখতে পাবেন সারি সারি টিকিট মেশিন এবং একই সঙ্গে টিকিট কাউন্টার। এসব স্বয়ংক্রিয় মেশিনে চীনা এবং ইংরেজি ভাষা। সুতরাং বিদেশিদের চিন্তার কোনো কারণই নেই। তবে খেয়াল রাখবেন মেশিন কেবল ১ ইউয়ানের ধাতব মুদ্রা অথবা ৫ ও ১০ ইউয়ানের নোটই গ্রহণ করে। টিকিট কেনার পর চেকিং মেশিনে ছোঁয়ালেই তালা খুলে যাবে, আপনি অনায়াসে ঢুকে যেতে পারবেন ভেতরে। পেইচিং রেলওয়ে রানিং লিমিটেড কম্পানির দায়িত্বশীল কর্মকর্তা চিয়া পোং বলেন,

    যাত্রীদের চাপের হিসাব মাথায় রেখে সে অনুযায়ী মেশিন বসানো হয়েছে। ব্যস্ত স্টেশনগুলোতে ৩০টিরও বেশি মেশিন বসানো হয়েছে। ছোট এবং কম ব্যস্ত স্টেশনে বসানো হয়েছে ৫টি থেকে ৬টি করে। মেশিনগুলোর পাশাপাশি আমরা মানব চালিত টিকিট কাউন্টারও রেখেছি। এসব কারণে বর্তমানে আমরা যাত্রীদের চাহিদা পূরণ করতে পারছি।

    আপনাদেরকে একটু সতর্ক থাকতে হবে, যে টিকিট দিয়ে ঢুকেছেন সেই টিকিটটি কোনো মতেই হারানো চলবে না। কারণ গন্তব্যে পৌঁছানোর পর মেশিনের তালা খুলে বাইরে বেরোনোর জন্য ঐ টিকিটটাই আবার ব্যবহার করতে হবে। বলতে পারেন টিকিটটি আপনার ঢোকা আর বেরোনোর চাবি।

    আবার ফিরে আসি ৩টি নতুন লাইন প্রসঙ্গে। আলাদা আলাদাভাবে এগুলো হচ্ছে উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় লাইন-১০, এয়ারপোর্ট লাইন এবং অলিম্পিক শাখা লাইন। এখন বিশেষ করে অলিম্পিক শাখা লাইন নিয়ে কিছু কথা বলবো। ৪.৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ লাইনে রয়েছে ৪টি স্টেশন । এগুলো হচ্ছে পেই থু ছেং, অলিম্পিক ক্রীড়া কেন্দ্র, অলিম্পিক পার্ক এবং ফরেস্ট পার্ক। খেলোয়াড় ও দর্শকরা এ লাইন ধরে সহজেই আশেপাশের স্টেডিয়ামগুলোতে যেতে পারবেন।


1 2 3
  • সাক্ষাত্কার
  • সর্বশেষ সংবাদ
  • অন-লাইন জরীপ
     
    © China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
    16A Shijingshan Road, Beijing, China