খাবার খাওয়ার পর পর্যটকরা বাসে করে বিটা হ্রদে যেতে পারেন । যাওয়ার পথে চোখজুড়ে দেখতে পারেন নানা ধরনের সবুজ দৃশ্যের অপরূপ মহিমা । দেখতে পারেন দু'একটি ইয়াক গরু প্রাচীনকালের গাছের নিচ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে । কালো রঙয়ের চামড়া সুর্যালোকে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে । দেখতে স্বাস্থ্যবান ও প্রাণচঞ্চল । গাছের শাখায় 'গাছের গোঁফের ' মত পরজীবি উদ্ভিদ দেখা যায় । স্থানীয় লোকজন বলেন, এ ধরনের উদ্ভিদ যাকে বলা হয় পারাসাইটস , থাকায় পরিবেশের গুণগতমান ভালো থাকে । গাছ গোঁফ থাকার জায়গায় বায়ুর পরিবেশ অবশ্যই ভালো ।
বিটা হ্রদে পৌঁছার পর,পর্যটকরা জাহাজে করে হ্রদের চারপাশের সুন্দর সব দৃশ্যাবলি উপভোগ করতে পারবেন । হ্রদের পানি স্বচ্ছ থাকার কারণে জাহাজের উপর থেকে হ্রদের ১০ মিটারেরও বেশি গভীরে থাকা মাছগুলোকে স্পষ্ট দেখা যায় । হ্রদের চারপাশে অনেক আজালিয়া ফুল রয়েছে । প্রতি বছর ড্রাগন জাহাজ উত্সব অথবা এপ্রিল / মে মাসে আজালিয়া ফুল ফোটে । জানা গেছে, তখন অনেক মাছ হ্রদের পানিতে পড়ে যাওয়া আজালিয়া ফুল খেতে পানির উপরে ভেসে থাকে । এ ফুলের মধ্যে কিছুটা বিষাক্ত উপাদান থাকায় মাছগুলো তা খাওয়ার পর ঘন্টা দু'এক সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ভেসে থাকে, দেখতে মনে হবে যেন নেশায় ভেসে বেড়াচ্ছে । বিটা হ্রদের 'আজালিয়া ফুল মাছকে নেশা করার এ চমত্কার দৃশ্য সত্যিই মনে রাখার মত ।
খুবই মজার তাই নাকি ছালাউদ্দিন। খ. হ্যাঁ, ইয়ান হুয়া ।ক.তাহলে তা তো । এটি সত্যিই মজার । হ্রদের কেন্দ্রীয় স্থানে একটি ছোট দ্বীপ আছে । প্রাচীনকালে এটি ছিল তিব্বতী বীরপুরুষ রাজা গেসার ভূতকে দমন করার স্থান । দ্বীপে বৌদ্ধ ধর্মের মন্দিরও রয়েছে । এ সুন্দর ও চমত্কার দ্বীপটি হল জাতীয় পার্কের একটি সংরক্ষিত এলাকা । দ্বীপের সব উদ্ভিদ ও পশুপাখি ভালভাবে সংরক্ষণ করা হয় । কারণ এ দ্বীপে বৌদ্ধ ধর্মের মন্দির থাকার পাশাপাশি তা বিশেষজ্ঞদের সাব মেরু অঞ্চলের উদ্ভিদ ও পশুপাখির গবেষণার স্থানে পরিণত হয়েছে । চমত্কার রূপকথার সঙ্গে দর্শনীয় স্থান আর সংরক্ষিত নিবিড় পরিবেশ পর্যটকদের তিব্বতের পাহাড়ের অতুলনীয় সৌন্দর্যকে উপভোগ করতে সাহায্য করে । চেচিয়াং প্রদেশের পর্যটক ছেন লিংফেং বলেন, আমার খুব ভালো লাগছে । হ্রদ, পানি, পাহাড় সবই শান্ত , দৃশ্যও খুবই সুন্দর। শহরে থাকার অস্থিরতা মোটেই এখানে নেই । এ এক ভিন্ন জগত ।
শহরের অধিবাসীদের জন্য পোতাসো জাতীয় পার্ক অবশ্যই একটি সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ এবং মনকে জুড়িয়ে দেয়ার একটি ভালো স্থান । এখানে প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখার পাশাপাশি তিব্বতি জাতির রীতিনীতিও জানতে পারবেন । পার্কে দু'টি তিব্বতী গ্রাম রয়েছে । হ্রদ পরিদর্শনের পর যদি সময় পান , তাহলে এ দু'টি গ্রামে গিয়ে ঘুরে বেড়াতে পারেন । ধর্মীয় ঘর ও বাইরের প্রার্থনার চক্রসহ বিভিন্ন তিব্বতীয় ঐতিহ্য গ্রামে দেখা যায় । যদি স্থানীয় কৃষকের বাসায় যান, তবে তাঁরা আপনাদের জন্য তিব্বত জাতির রীতিনীতি পরিচয় দেবার পাশাপাশি আপ্যায়ণও করবেন । এ সম্পর্কে গাইড জাশি বলেছেন, আমাদের বাসায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল--মাঝের স্তম্ভটি । কারো কারো বাসায় মাঝের এ স্তম্ভটি সবচেয়ে বড় । এর অর্থ হলো তার বাড়িটি সবচেয়ে ধনীর ব্যক্তির ঘর । সাধারণত তিব্বতি বর্ষ বা কারো বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান থাকলে, আমরা সেসময় এ মাঝের স্তম্ভটি ঘিরে নাচ গান করি ।
1 2 |