আখিল পরেশর, চায়না মিডিয়া গ্রুপ (সিএমজি)-র চীন আন্তর্জাতিক বেতারের হিন্দি বিভাগের বিশেষজ্ঞ। 'স্বর্ণ সহজে পাওয়া যায়, তবে এমন ভাল বন্ধু সহজে পাওয়া যায় না'—এই চীনা প্রবাদটি তার ভালো লাগে। তার মতে এটা বন্ধুত্বের প্রতি চীনা মানুষের মনোভারের প্রতিফলন। চীনা মানুষ বন্ধুত্বের ওপর গুরুত্ব দেয় এবং চীনাদের মতে একজন ভাল বন্ধু সহজে পাওয়া যায় না। যদি আপনি একজন চীনা মানুষের বন্ধু হন, তাহলে আপনি এ বন্ধুর ওপর বেশ গুরুত্ব দেবেন। কারণ, এ বন্ধুত্ব চিরকালের মতো থাকবে।
আখিল বলেন, "আমি ৯ বছর ধরে চীনে আছি। চীনাদের সঙ্গে থাকলে আমি সবসময় নিজের দেশে থাকার মতো অনুভব করি। চীনা মানুষ খুব বন্ধুত্বপূর্ণ। উন্মুক্ত একটি মন দিয়ে চীনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে সহজে তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব হতে পারে। তারাও সবসময় বন্ধুদেরকে সাহায্য করতে ভালবাসে।
মিঃ হুয়াং আমার একজন বন্ধু। আমরা দু'জন গত বছর পরিচিত হয়েছি। তিনি ভারত সম্পর্কে অনেক জানেন। বিশেষ করে ভারতীয় সংস্কৃতি ও বলিউডের সম্পর্কিত তার বেশ ভাল লাগে। আমরা দু'জন মাঝে মাঝে খাবার খাই বা কফি খাই। গত বসন্ত উত্সবে তিনি আমার পরিবারকে ডিনারে আমন্ত্রণ জানান। আমরাও তাকে ভারতীয় খাবার খাওয়াতে চেয়েছিলাম। তবে কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে এ সব পরিকল্পনা পিছিয়ে দেওয়া হয়।
মহামারীর কারণে সবাইকে ঘরে থাকতে হয় এবং সামাজিক ব্যবধান রাখতে হয়। মহামারীর শুরুতে মাস্কসহ প্রতিরোধক-সামগ্রীর অভাব ছিল। আমার বন্ধু হুয়াং আমাকে ফোন করে বলেন, 'ভাই, কেমন আছো? মাস্ক লাগবে? আমি তোমাকে কিছু মাস্ক পাঠব।' আমি বলি, 'আমার মাস্ক আছে, ধন্যবাদ।' তবে পরের দিন আমি একটি বক্স পাই। খুলে দেখি ৫ প্যাক মাস্ক, ২০টি গ্লাভস এবং দুই বোতল বিজাণুনাশক। সঙ্গে একটি নোট, সেখানে লেখা আছে, 'আমার প্রিয় বন্ধু, আমি জানি এখন তোমার মাস্ক লাগবে না। তবে প্রস্তুতি থাকা ভালো। আমরা একসাথে এবার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করব। সাবধান হও, নিরাপদে থাকো।' তার চিঠি দেখে আমি খুব অভিভূত হয়েছি। তার নিঃস্বার্থ ভালবাসা অনুভব করি আমি। যদিও আমরা সামনা-সামনি এখন দেখা করতে পারি না, কিন্তু আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বে কোনো কমতি নেই। এখন বেইজিংয়ে অবস্থা ভাল এবং আমরা দু'জন একটি ভারতীয় রেস্টুরেন্টে দেখা করার পরিকল্পনা করছি। আমি বলতে চাই, চীনা বন্ধু মানে চিরকালের বন্ধু।"