চীনের প্রতি গ্রিসের ছাত্রছাত্রীদের আবেগ, মালভূমির অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম, চীনা বিমান বাহিনীর সহায়তায় স্নাতক তিব্বতি মেয়েদের সংক্ষিপ্ত সাক্ষাত্কার
  2019-11-18 15:21:10  cri

 


সম্প্রতি গ্রিস ও ব্রাজিল সফর করেন চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। সফরকালে 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের কাঠামোতে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও অবকাঠামো নির্মাণসহ বিভিন্ন খাতের সহযোগিতা জোরদার করার বিষয়ে একমত হন নেতৃবৃন্দরা। আজকের অনুষ্ঠানের শুরুতে চীনের প্রতি গ্রিসের ছাত্রছাত্রীদের আবেগ সম্পর্কে প্রতিবেদন শোনাবো। এর পর চীনের মালভূমির অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম, চীনা বিমান বাহিনীর সহায়তায় স্নাতক তিব্বতি মেয়েদের সংক্ষিপ্ত সাক্ষাত্কার ও চরম দরিদ্র গ্রামের উন্নয়ন সম্পর্কিত তথ্য তুলে ধরবো।

চীনের প্রতি গ্রিসের ছাত্রছাত্রীদের আবেগ

১১ বছর পর এবার গ্রিস সফর করেন চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং, তা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ। চীনে লেখাপড়া করা গ্রিসের ছাত্রছাত্রীরা গ্রিস ও চীনের সহযোগিতার সুউজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করেন, কারণ তা প্রত্যেকের সাথেই ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত।

গ্রিসের মেয়ে আননা বলেন, 'আমি ভালোভাবে চীনা ভাষা শিখতে চাই, লেখাপড়া শেষে চীনা ভাষার শিক্ষক হিসেবে কাজ করতে চাই'। দু'দেশের জনগণের যোগাযোগের সেতু হিসেবে কাজ করা তার একটি স্বপ্ন।

বেইজিং ভাষা ও সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয় অর্থাত্ বিএলসিইউ'র আন্তর্জাতিক শিক্ষা বিভাগের একজন মাস্টার্সের শিক্ষার্থী তিনি। গত ৫ বছর ধরে তিনি চীনে লেখাপড়া করছেন। চীনা চা ও চীনা লেখিকা সানমাওয়ের উপন্যাস 'সাহালার গল্প' বেশ পছন্দ করেন তিনি এবং ধীরে ধীরে চীনের জীবনযাপনেও অভ্যস্ত হয়ে যান।

আননার বাবা কাপড় ব্যবসার কারণে বহুবার চীনে যাওয়া আসা করেন। পিতার উত্সাহে ছোটবেলা থেকে চীনে আসার ধারণা সৃষ্টি করেন আননা। চীন ও গ্রিসের যোগাযোগ ব্যাপক বেড়েছে, পিরাওয়ে বন্দরসহ বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রিসের জনগণের জীবনযাপনে পরিবর্তন ঘটেছে ও কল্যাণ সৃষ্টি হয়েছে, দু'দেশের সাংস্কৃতিক বিনিময়ও ঘনিষ্ঠতর হয়েছে।

বর্তমানে গ্রিসে চীনা ভাষা শেখার প্রবণতা অনেক। তা থেকে চীন ও প্রাচ্য সভ্যতার আগ্রহ দেখা যায় এবং দু'দেশের সহযোগিতার প্রভাবও প্রতিফলিত হয়। আননা সাংবাদিককে এ কথা বলেন।

ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী নিক একজন দক্ষ প্রকৌশলী। চীনের উন্নয়ন তাকে বেশ মুগ্ধ করেছে। চলতি বছর তিনি ব্রিটেনে লেখাপড়ার সুযোগ ছেড়ে দিয়ে চীনে তার পড়াশোনার জীবন শুরু করেন।

এ সম্পর্কে নিক বলেন, বিজ্ঞান প্রযুক্তির নব্যতাপ্রবর্তনে গুরুত্ব দেয় চীন, সাথে সাথে অবকাঠামো নির্মাণে বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করে, চীনের উন্নয়নের গতি বিস্ময়কর। চীনে লেখাপড়া করলে অবশ্যই অনেক জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম। চীন ও গ্রিসের বিনিময় ঘনিষ্ঠতর হবার সাথে সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কও ব্যাপক উন্নত হবে বলে বিশ্বাস করেন তিনি।

গ্রিসের ছেলে রিক্সের চীনের প্রতি আবেগ একটি চীনা চলচ্চিত্রের সাথে জড়িত। 'ক্রুচিং টাইগার, হিডেন ড্রাগন' চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি চীনা ভাষার আমেজ অনুভব করেন। রিক্স বলেন, তখন চীন সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না, তবে চীনা ভাষার বৈশিষ্ট্য আর প্রাচ্য সংস্কৃতি তার জন্য অনেক আকর্ষণীয় ব্যাপার।

তখন থেকে শিক্ষক ও বইয়ের মাধ্যমে চীনা ভাষা শিখতে শুরু করেন তিনি। চীনে আসার প্রতি তার আবেগ অনেক বাড়তে থাকে। তখন থেকে চীনা ভাষা ও ঐতিহ্যিক সংস্কৃতি, চীনের সুদীর্ঘকালের ইতিহাস তিনি চীনে এসে স্বচোখে দেখতে চান।

বর্তমানে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনা ভাষা বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র ক্রিস। দৈববাণী থেকে নির্বোধ গল্প ও চীনা সংস্কৃতি সম্পর্কে অনেক জানতে পেরেছেন ক্রিস এবং চমত্কার চীনা ভাষার কারণে চীনে নিযুক্ত গ্রিসের দূতাবাসের একজন অনুবাদকে পরিণত হয়েছেন।

২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো চীনে আসেন ক্রিস,বর্তমানে চীনকে তিনি তার দ্বিতীয় জন্মস্থান হিসেবে আখ্যায়িত করেন। গ্রিসের একজন সাধারণ যুবক যিনি আগে কখনো ইউরোপের বাইরের দেশে যান নি। চীনের সাথে এমন ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন না হলে আজকের আরামদায়ক জীবনযাপন অনুভব করা সম্ভব হতো না।

গত কয়েক বছরে চীন ও গ্রিস যৌথভাবে 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগ নির্মাণ করে এবং দু'দেশের আর্থ-বাণিজ্য, শিক্ষা, বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও সংস্কৃতির বিনিময় দিন দিন ঘনিষ্ঠতর হয়। এ বিষয়টি ক্রিসের জন্য বেশি আনন্দের। কারণ সংশ্লিষ্ট ব্যবসা সম্পর্কে তার অনুবাদ কাজ দিন দিন বাড়ছে, বিনিময় খাতও ব্যাপক সম্প্রসারিত হচ্ছে।

এ সম্পর্কে ক্রিস বলেন, গ্রিস ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের সম্মুখীন হয়েছিলো, যা দেশের জনগণের জন্য বড় আঘাত। তাই চীনের সাথে সহযোগিতা জোরদারের মাধ্যমে গ্রিসের অর্থনীতির উন্নয়নে ব্যাপক কল্যাণ বয়ে আনা যাবে।


1  2  3  
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040