গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার ৩৫তম বার্ষিকীর উদযাপনী অনুষ্ঠান বিস্ময়কর: ইরানি চিকিত্সক আলি ঘাদিরি
গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার ৭০তম বার্ষিকী উদযাপন চীনের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনকারী বিদেশি বন্ধুদের জন্যও অতি আনন্দদায়ক ব্যাপার। সম্প্রতি ইরান-চীন মৈত্রী সমিতির বিজ্ঞান প্রযুক্তি কমিটির সদস্য, চক্ষুরোগবিষয়ক চিকিত্সক আলি ঘাদিরি সিআরআইয়ের সাংবাদিককে এক সাক্ষাত্কার দেন এবং চীনে লেখাপড়ার অভিজ্ঞতা স্মরণ করেন তিনি। প্রায় ১০ বছর চীনে জীবন কাটিয়েছেন আলি। ১৯৮৪ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার ৩৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি। এ সম্পর্কে তিনি বলেন,
'পয়লা অক্টোবর আমার জন্য দারুণ সুন্দর মুহূর্ত। ১৯৮৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর আমি বেইজিংয়ে আসি এবং একই বছরের পয়লা অক্টোবর অতিথি হিসেবে থিয়ানআনমেন মহাচত্বরে জাতীয় দিবসের উদযাপনী অনুষ্ঠান ও কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণ করি। অনুষ্ঠান অতি বড় আকারের, আমি তখনকার ছবিও সংরক্ষণ করেছি। প্রতিবার ছবি দেখার সময় বিস্ময়কর সুশৃঙ্খল কুচকাওয়াজের দৃশ্য স্মরণ করি। তখন ভাবি আরেকবার চীনের জাতীয় দিবসের উদযাপনী অনুষ্ঠানে অংশ নিতে চাই।'
গত শতাব্দীর ৮০ দশকে ইরানের অনেক ছাত্রছাত্রী চীনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতে আসেন। তাঁদের মধ্যে অনেকে মেডিকেল মেজর বাছাই করেন এবং ঘাদিরিও তাঁদের মধ্যে একজন। লেখাপড়া শেষ করে তিনি স্বদেশে চিকিত্সা কাজ করার সাথে সাথে ইরান-চীন মৈত্রী সমিতির বিজ্ঞান প্রযুক্তি কমিটির সদস্য হন এবং দু'দেশের মৈত্রীর উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেন। যদিও গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার ৭০তম বার্ষিকীতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকতে পারবেন না, তবে তিনি অবশ্যই টেলিভিশনে লাইভ অনুষ্ঠান দেখবেন এবং আনন্দদায়ক আমেজ অনুভব করবেন। তিনি বলেন,
'বেইজিংয়ে আসার পর আমি বিএলসিইউতে চীনা ভাষা শিখি। এক বছর পর লিয়াওনিং প্রদেশের শেনইয়াং শহরে চীনের মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিত্সা বিভাগে লেখাপড়া শুরু করি। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক একাডেমিতে চক্ষু চিকিত্সা মেজর শিখি আর ইন্টার্নশিপ করি। ১৯৯৩ সালে আমি ইরানে ফিরে গিয়ে চিকিত্সক হিসেবে কাজ শুরু করি।'
শেনইয়াংয়ে দশ বছরের মতো সময় কাটান ঘাদিরি। এ জীবনযাপনের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, 'তখন খাওয়া ভালো, লেখাপড়া ভালো আর খেলাধুলাও ভালো।' শেনইয়াংয়ের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান আর খাবার সম্পর্কে তিনি ভালোভাবে জানেন। তা থেকে বোঝা যায়, শেনইয়াং তার মনে গুরুত্বপূর্ণ ছাপ ফেলেছে। তিনি বলেন,
'২০১০ সালে স্নাতক হওয়ার পর প্রথমবারের মতো চীনে ফিরে আসি এবং ১৭ দিন থাকি। বেইজিং, শাংহাই, হাংচৌ আর শেনইয়াং সব জায়গায় যাই। শেনইয়াং যেন আমার দ্বিতীয় জন্মস্থানের মতো, অধিকাংশ সময় আমি ওখানে ছিলাম। চীনের পরিবর্তন অতি বেশি, বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও সামাজিক উন্নয়ন আমার ধারণার চেয়ে অনেক বেশি।'
এবার চীন সফরে তিনি আবার শেনইয়াংয়ে চীনের মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যান। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ছাত্র হিসেবে তিনি চীনা ভাষার মাধ্যমে লেখাপড়ার সুন্দর মুহূর্ত স্মরণ করেন এবং সুযোগ পেলে আবার চীনে এসে লেখাপড়া করার আশা প্রকাশ করেন।