কাজানে রুশ কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র
সম্প্রতি ৪৫তম বিশ্ব দক্ষতা প্রতিযোগিতা তাতারস্তান প্রজাতন্ত্রের রাজধানী কাজানে আয়োজিত হয়। বিশ্বের কারিগরি দক্ষতা সংস্থার ৬৯টি সদস্যদেশ ও অঞ্চলের ১৩৫৫ জন প্রতিনিধি এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেন এবং নিজ নিজ বৈশিষ্ট্যময় সামর্থ্য তুলে ধরেন।
কারিগরি দক্ষ ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ পদ্ধতি জানার জন্য চীনা সাংবাদিকরা চীনের প্রতিনিধি দলের সাথে স্থানীয় প্রযুক্তিগত স্কুলে যান এবং স্থানীয় রুশ কারিগরি প্রশিক্ষণের কমনীয়তা উপভোগ করেন।
কাজান ১৮২ বহুমুখী দক্ষ কর্মী স্কুল গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে স্কুলে ১৮০০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী ও ১০০ জনেরও বেশি শিক্ষক রয়েছেন। শিক্ষার্থীরা স্নাতক হওয়ার পর মস্কো ও সেন্টপিটার্সবুর্গে চাকরি করেন।
চীনা প্রতিনিধি দল গাড়ি থেকে নামার পর স্থানীয় কাজান মেয়ে ও শিক্ষার্থীরা তাদের জাতীয় পোশাক পড়ে চীনা দলটিকে স্বাগত জানান। এ সম্পর্কে স্কুলের ইংরেজি শিক্ষক কুজার বলেন, কারিগরি দক্ষতা অর্জনের সাথে সাথে সামাজিক মার্জিত আচরণ ও অতিথিপরায়ণতাও শিখতে হবে, তা ভবিষ্যত কর্মসংস্থানের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ।
স্কুলের দুই তলার এক ক্লাসরুমের বড় টেবিলে গোলাকারের ময়দা তাল এবং সাদা ও হলুদ ফলের মিশ্রণ দেখা যায়। এখানে সবাই পরিষ্কার কাপড় পরে স্থানীয় খাবার ত্রিভুজ রুটি তৈরি করতে পারে।শিক্ষক কুজার ও অন্য কয়েকজন শিক্ষক সবাইকে ডাকেন। ঘূর্ণায়মান পিন দিয়ে ময়দা তাল হালকা করে গোলাকারে পরিণত হয়,ভিতরে কিছু ফলের পেস্ট দিয়ে ত্রিভুজ আকারের রুটি তৈরি করা হয়।
চীনা প্রতিনিধি দলের একজন কর্মী হাতে রুটি তৈরি করে বলেন, এ খাবার চীনা ডাম্পলিংয়ের মতো, তবে ডাম্পলিংয়ে শুধু একবার ময়দা অর্ধেক ভাঁজ করা হয়, এ পদ্ধতির সঙ্গে তুলনা করলে দুই খাবারের কিছু পার্থক্য রয়েছে।
রান্নার বিষয়গুলো শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেক জনপ্রিয়। এছাড়া, তারা নিজের হাত দিয়ে সুস্বাদু খাবার রান্নার মাধ্যমে খাবার অর্জনের কষ্টও ভালোভাবে বুঝতে সক্ষম। শিক্ষক কুজার এ কথা বলেন।
লেজার মুদ্রণ কোর্স স্কুলের আরেকটি বৈশিষ্ট্যপূর্ণ মেজর। কোরেল ড্র সফ্টওয়্যার দিয়ে ছবি আঁকেন শিক্ষার্থীরা। এভাবে কল্পনার দক্ষতা ও শিল্পকলা বিবেচনার সামর্থ্য উন্নীত করতে সক্ষম। নির্মিত ছবিতে নিজের নাম যুক্ত করে লেজার প্রিন্টারের মধ্যে কাঠের বোর্ড রাখে তারপর প্রিন্ট করে। কম সময়ের মধ্যে কাঠের গন্ধ মিশে চমত্কার ডিজাইনের স্মারকগ্রন্থ তৈরি করা হয়।
খেলাধুলার ওপর বেশ গুরুত্ব দেয় স্কুলটি। স্টেডিয়ামে নিয়মিতভাবে দড়ি টানাটানি, দু'জনের যৌথ দৌড়াদৌড়ি, চোখ বন্ধ করে বালতি ধাক্কা দেওয়াসহ বিভিন্ন খেলাধুলা আয়োজিত হয়।
সংগীত ক্লাসরুমে সবাই একসাথে গান গায় আর নৃত্য করে। চীনা অতিথিদের রুশ ঐতিহ্যবাহী নৃত্যের মাধ্যমে অভ্যর্থনা জানানো হয়, তারা স্কুলের আয়োজকদের সাথে বিনিময় করেন এবং রুশ সংগীতের বিশেষ কমনীয়তা উপভোগ করেন।
হাত দক্ষতার চর্চা, কল্পনার দক্ষতা, শারীরিক দক্ষতা এবং শিল্পকলার প্রশিক্ষণ বিভিন্ন বিষয় রুশ কারিগরি প্রশিক্ষণ তত্ত্বের সাথে জড়িত। প্রতিটি খেলাধুলার কার্যক্রম কারিগরি প্রশিক্ষণের মান ও দক্ষতার সাথে জড়িত। এসবের মাধ্যমে শুধু দক্ষতা অর্জন নয়, বরং রুশ ঐতিহ্যিক সংস্কৃতিও জানা যায়।
প্রিয় শ্রোতা, সময় দ্রুত চলে যায়। আমাদের আজকের অনুষ্ঠানও এখানেই শেষ করতে হবে। এ অনুষ্ঠান সম্পর্কে কোনো মতামত থাকলে আমাদের চিঠি লিখতে ভুলবেন না। আমাদের যোগাযোগ ঠিকানা ben@cri.com.cn,caoyanhua@cri.com.cn
সময় মতো আমাদের অনুষ্ঠান শুনতে না পারলে বা শুনতে মিস করলে আমাদের ওয়েবসাইটে তা শুনতে পারবেন। ওয়েবসাইটের ঠিকানা: www.bengali.cri.cn
তাহলে এবার বিদায় নিচ্ছি, সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, থাকুন সুন্দর ও আনন্দে। আগামী সপ্তাহের একই দিনে একই সময়ে আবারো কথা হবে। যাই চিয়ান। (সুবর্ণা/টুটুল/মুক্তা)