থাইল্যান্ডে কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের চীনা ভাষা জানার দক্ষ ব্যক্তি গঠন
সম্প্রতি থাইল্যান্ডের সামুদ্রিক রেশমপথ কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট এবং দেশটির সুমেই শহরের এক পেশাগত প্রযুক্তি স্কুলের মধ্যে সহযোগিতামূলক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যাতে 'চীনা ভাষা প্লাস পর্যটন প্রশাসন' বিষয়ক দক্ষ ব্যক্তি গড়ে তোলা যায়।
রেশমপথ ইনস্টিটিউটের পরিষদের চেয়ারম্যান জাওখুন থোংচাই দীর্ঘকাল ধরে চীন ও থাইল্যান্ডের সাংস্কৃতিক বিনিময় ও শিক্ষার আদান-প্রদানে ভূমিকা পালন করে আসছেন। ২০০৬ সালে তিনি বিশ্বের সর্বপ্রথম কনফুসিয়াস ক্লাসরুম স্থাপন করেন এবং ২০১৫ সালে উচ্চ বিদ্যালয় ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের যৌথ প্রশাসিত নতুন রেশমপথ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন, যা থাইল্যান্ডের যুবকদের চীনা ভাষা শেখায় বিরাট অবদান রেখেছে। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি পেশাগত প্রযুক্তি স্কুলের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের জন্য 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের ইতিহাস ও তাত্পর্য তুলে ধরেন। তিনি শিক্ষার্থীদের ভালোভাবে পেশাগত দক্ষতা ও চীনা ভাষা চর্চায় উত্সাহ দেন, যাতে 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের উন্নয়নে প্রস্তুতি নেওয়া যায়। তিনি বলেন,
'চীন সরকার ও সামুদ্রিক রেশমপথ কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে থাইল্যান্ডের পেশাগত প্রশিক্ষণে সহায়তা দেওয়া হয়, যাতে শিক্ষার্থীরা নৈতিক ও পেশাগত দক্ষতা অর্জনকারী ব্যক্তিতে পরিণত হতে পারে। রেশমপথ ইনস্টিটিউট ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন দক্ষতা অর্জনে বিশ্বের সাথে সংযোগসেতু স্থাপন করবে। শিক্ষার্থীদের যথেষ্ঠ জ্ঞান ও দক্ষতা শক্তিশালী করতে হবে।'
থাইল্যান্ডের সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী সুথেপ থাগসুবান এ স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও বোর্ডের চেয়ারম্যান। 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের বড় সুযোগ দেখে তিনি রেশমপথ কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের সঙ্গে সহযোগিতা চালু করেন এবং 'চীনা ভাষা প্লাস পেশাগত দক্ষতা' ধারণা থাইল্যান্ডের পেশাগত প্রযুক্তি স্কুলে বয়ে আনেন। কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের বৃত্তি নিয়ে দেশের শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থীরা চীনে পড়াশোনা করতে সক্ষম, পাশাপাশি 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের সংযোগের ফলে দেশে ব্যাপক পেশাগত প্রযুক্তিগত দক্ষ ব্যক্তি তৈরি করা সম্ভব। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সুথেপ বলেন,
'রেশমপথ কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট এবং থাইল্যান্ডের পেশাগত প্রযুক্তি স্কুলের সহযোগিতাচুক্তি শুধু স্কুলের প্রশিক্ষণের মান উন্নীত করা নয়, বরং স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা চীনের শ্রেষ্ঠ উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার সুযোগ পেতে এবং শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থীরা চীনে বৃত্তি নিয়ে লেখাপড়া করতে সক্ষম। ২০১৪ সালে চীন সরকারের আমন্ত্রণে জাওখুন থোংচাই 'চীনের রাষ্ট্রীয় পেশাগত প্রশিক্ষণ সংস্কার ও সৃজনশীল পরীক্ষা এলাকার আন্তর্জাতিক সহযোগিতাবিষয়ক উপদেষ্টা' নির্বাচিত হন। কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট এবং উপদেষ্টা থোংচাইয়ের যৌথ প্রয়াসে আমাদের স্কুল থাইল্যান্ডের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ পেশাগত প্রযুক্তি স্কুলে পরিণত হবে বলে বিশ্বাস করি। এই প্রক্রিয়ায় নৈতিক ও আন্তর্জাতিক দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তি প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্ভব।'
উল্লেখ্য, রেশমপথ কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট এবং চীনের থিয়ানচিন পৌর সরকারের যৌথ উদ্যোগে স্থাপিত বৃত্তির মাধ্যমে থাইল্যান্ডের ৪.০ কৌশলগত উন্নয়ন ও পূর্বাঞ্চলের অর্থনৈতিক করিডোর নির্মাণে পেশাদার দক্ষ প্রযুক্তি কর্মী গঠনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থীদের থিয়ানচিন নর্মাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চীনা ভাষা শিখতে পাঠানো হয়,পরে তারা থিয়ানচিন পেশাগত প্রযুক্তি স্কুলে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেয়। বর্তমানে 'চীনা ভাষা প্লাস দ্রুতগতির ট্রেন চালানো', 'চীনা ভাষা প্লাস ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট', 'চীনা ভাষা প্লাস অনলাইন ব্যবসায়'সহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এ সম্পর্কে থাইল্যান্ডের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত চীনা মহাপরিচালক ম্যাডাম ওয়াং শাং স্যুয়ে বলেন,
'রেশমপথ ইনস্টিটিউটের বৈশিষ্ট্য হল পেশাগত প্রশিক্ষণ এবং থাইল্যান্ডের উন্নয়ন কৌশল ও চীনের 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের সংযোগে সহায়তা দেওয়া। এ পরিকল্পনায় ৭টি প্রধান বিষয় রয়েছে। এর মধ্যে আছে রেলপথ পরিবহন, বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও পর্যটন প্রশাসন। আগে কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের লুবান কারখানায় থাইল্যান্ডের দ্রুতগতি ট্রেনের চালকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, বর্তমানে আমরা থাইল্যান্ডের পর্যটনকে প্রাধান্য দিয়ে 'চীনা ভাষা প্লাস পর্যটন' বিষয়ক পেশাগত ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ দেই।'
চীন ও থাইল্যান্ডের সহযোগিতার গভীর উন্নয়নে থাইল্যান্ডের উন্নয়ন কৌশল ও 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের সংযোগের ফলে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে ব্যাপক চীনা ভাষা বোঝার পেশাগত প্রযুক্তি কর্মী প্রয়োজন। বিশেষ করে দ্রুতগতির ট্রেন, বিমান ও মহাকাশ, রোবট, জ্বালানি সম্পদ প্রযুক্তি, মাল পরিবহন, বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও পর্যটনসহ বিভিন্ন খাতে। রেশমপথ ইনস্টিটিউট থাইল্যান্ডের 'চীনা ভাষা প্লাস' দক্ষ ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণে ব্যাপক অবদান রাখবে বলে ধারণা করা হয়।
প্রিয় শ্রোতা, সময় দ্রুত চলে যায়। আমাদের আজকের অনুষ্ঠানও এখানেই শেষ করতে হবে। এ অনুষ্ঠান সম্পর্কে কোনো মতামত থাকলে আমাদের চিঠি লিখতে ভুলবেন না। আমাদের যোগাযোগ ঠিকানা ben@cri.com.cn,caoyanhua@cri.com.cn
সময় মতো আমাদের অনুষ্ঠান শুনতে না পারলে বা শুনতে মিস করলে আমাদের ওয়েবসাইটে তা শুনতে পারবেন। ওয়েবসাইটের ঠিকানা: www.bengali.cri.cn
(সুবর্ণা/টুটুল/স্বর্ণা)