চীন-জার্মান পেশাগত প্রশিক্ষণ সহযোগিতার নতুন উন্নয়ন
সম্প্রতি চীন-জার্মান পেশাগত প্রশিক্ষণ-সংক্রান্ত এক সৃজনশীল ফোরাম বার্লিনে আয়োজিত হয়। চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী সুন ছুন লান এবং জার্মান ফেডারেল শিক্ষামন্ত্রী আনজা কার্লিকজেক যৌথভাবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেন এবং ভাষণ দেন।
ভাষণে চীনা উপ-প্রধানমন্ত্রী সুন বলেন, ২০১৪ সালে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং জার্মানি সফর করার পর থেকে দ্বিপাক্ষিক সার্বিক কৌশলগত অংশীদারি সম্পর্কের গভীর উন্নয়ন বাস্তবায়িত হয়েছে। বর্তমানে পেশাগত প্রশিক্ষণ দু'দেশের শিক্ষা বিনিময়ের আকর্ষণীয় বিষয় হয়ে উঠেছে। এটি দু'দেশের নেতৃবৃন্দের গুরুত্বপূর্ণ মতৈক্য। উপ-প্রধানমন্ত্রী সুন বলেন,
'পেশাগত প্রশিক্ষণ উন্নয়নের ওপর ব্যাপক গুরুত্ব দেয় চীন সরকার। চীনে বিশ্বের বৃহত্তম পেশাগত প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাও গড়ে তোলা হয়েছে। বর্তমানে চীনে পেশাগত প্রশিক্ষণ স্কুলের সংখ্যা ১১ হাজার ৭০০টি, এতে শিক্ষার্থী সংখ্যা ২ কোটি ৬৮ লাখেরও বেশি। জার্মানির পেশাগত প্রশিক্ষণের ইতিহাস ২০০ বছরেরও বেশি। এর প্রশিক্ষিত পরিশ্রম ও নিষ্ঠাবান শিল্পী মনোভাব জার্মানিকে একটি সৃজনশীল শক্তিশালী দেশ ও নির্মাণকারী বড় দেশের অবস্থান স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ সমর্থন দেয়। চীনে পেশাগত প্রশিক্ষণে সহযোগিতা করা বিদেশি অংশীদারের অন্যতম হলো জার্মানি। ১৯৮০ সালে দু'দেশের দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতামূলক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। জার্মানির বিভিন্ন মহলের সাথে পেশাগত প্রশিক্ষণ সহযোগিতা জোরদার করতে এবং যৌথভাবে দ্বিপাক্ষিক পেশাগত প্রশিক্ষণ সহযোগিতা সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় চীন।'
সুন আরো বলেন, এ ফোরামের সুযোগ কাজে লাগিয়ে পেশাগত প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা, শিক্ষকদের মান উন্নীত করা, শিল্প ও প্রশিক্ষণ সংমিশ্রণ এবং মানদণ্ড জোরদারসহ বিভিন্ন খাতে সহযোগিতা সম্প্রসারিত করা হবে, যাতে দু'দেশের পেশাগত প্রশিক্ষণের নতুন উন্নয়ন বাস্তবায়ন করা যায়। তিনি বলেন,
'পেশাগত প্রশিক্ষণ সহযোগিতা জোরদার করা, দু'দেশের নেতার মতৈক্য বাস্তবায়ন করা, নিয়মিতভাবে নীতিমালার সংলাপ চালু করা এবং পেশাগত প্রশিক্ষণের কৌশলগত পরিকল্পনা, নীতি-প্রণয়ন ও ব্যবস্থা গঠনে সহযোগিতা জোরদার করা হবে। দু'দেশের শিক্ষা ও শিল্প মহলের যৌথ প্রয়াসে দ্বিপাক্ষিক পেশাগত প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা উন্নত করা এবং বহুমুখী ও ব্যাপক সহযোগিতামূলক প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা হবে। এ ছাড়া, দু'দেশের পেশাগত স্কুলের পারস্পরিক বিনিময় জোরদার করা, দক্ষ ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষার গবেষণায় সহযোগিতা করাসহ বহু পদ্ধতিতে দু'দেশের যুবকদের আদান-প্রদান বাস্তবায়ন করা হবে, যাতে দু'দেশের মৈত্রী উন্নয়নে আরো বেশি দূত প্রশিক্ষণ দেওয়া যায়।'
কার্লিকজেকের দৃষ্টিতে পেশাগত গুণগতমানসম্পন্ন ব্যক্তির উন্নয়ন, দেশের সমৃদ্ধি ও অর্থনীতির বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই দু'দেশের পেশাগত প্রশিক্ষণ সহযোগিতার গুরুত্ব শুধু পেশাগত প্রশিক্ষণ মান উন্নীত করা নয়, বরং তা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নেও সহায়ক। তিনি বলেন,
'পরস্পরে কাছ থেকে অভিজ্ঞতা শেখা ও প্রাধান্য পরিপূরক করা দ্বিপাক্ষিক পারস্পরিক উপকারিতার ভিত্তি এবং নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে সক্ষম, তাই পারস্পরিক বিনিময় ও যোগাযোগের ডিজিটাল বিশ্ব গড়ে তোলা অতি প্রয়োজনীয়। শুধু আজকের ফোরাম নয়, বরং চীন ও জার্মানির বিভিন্ন খাতের সহযোগিতায় পারস্পরিক সমঝোতা গভীরতর করা উচিত।'
ফোরামে চীন ও জার্মান সরকারের কর্মকর্তা, পেশাগত প্রশিক্ষণ স্কুল,গবেষণা সংস্থা ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানের দেড় শতাধিক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। তারা পেশাগত প্রশিক্ষণ উন্নয়নের ব্যবস্থা, নীতিমালা ও বাস্তব অভিজ্ঞতা নিয়ে গভীর আলোচনা করেন।