নারী ও কন্যাশিশুদের শিক্ষাগ্রহণ নিয়ে চীনা ফার্স্ট লেডির ভাষণ, চীনে ব্রিটেনের ঐতিহ্যবাহী স্কুলের শাখা ক্যাম্পাস স্থাপন ও চীনের উচ্চবিদ্যালয়ে বহুভাষার ক্লাস স্থাপন
  2019-04-15 16:22:59  cri

 


বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠানে নারী ও কন্যাশিশুদের শিক্ষাগ্রহণ নিয়ে চীনা ফার্স্ট লেডির ভাষণ, চীনে ব্রিটেনের ঐতিহ্যবাহী স্কুলের শাখা ক্যাম্পাস স্থাপন ও চীনের উচ্চবিদ্যালয়ে বহুভাষার ক্লাস স্থাপন নিয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরবো।

সম্প্রতি প্যারিসে ইউনেস্কোর সদরদপ্তরে নারী ও কন্যাশিশুদের শিক্ষাগ্রহণ-বিষয়ক বিশেষ সম্মেলন আয়োজিত হয়। সংস্থাটির নারী ও কন্যাশিশুদের শিক্ষা-সম্পর্কিত শুভেচ্ছা দূত, চীনা ফার্স্ট লেডি ম্যাডাম ফেং লি ইউয়ান গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেন। ভাষণে ইউনেস্কো এবং 'নারী ও কন্যাশিশুদের শিক্ষাদান' পুরস্কার বিজয়ীদের সংশ্লিষ্ট প্রয়াস আর চীনের অর্জিত সাফল্য তুলে ধরে ম্যাডাম ফেং বলেন, গত ৫ বছর ধরে তিনি সংশ্লিষ্ট কাজের প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন, বিশেষ করে তিনি 'ছুনলেই পরিকল্পনা' চালু করতে উত্সাহ দেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, নারী ও কন্যাশিশুদের শিক্ষাদান পবিত্র কর্তব্য, এতে আরো বেশি লোকের সমর্থন ও মনোযোগ প্রয়োজন। জ্ঞান ও দক্ষতা নারীদের ভাগ্য পরিবর্তনের শক্তিশালী উপাদান। সমান ও গুণগতমানের শিক্ষা গ্রহণ করলে প্রত্যেক নারীর চমত্কার জীবন কাটানোর সুযোগ থাকবে। ইউনেস্কোর সংশ্লিষ্ট পুরস্কার বিতরণ সমর্থন এবং 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের কাঠামোতে আন্তর্জাতিক শিক্ষা বিনিময় ও সহযোগিতায় সুযোগ দেবে চীন, যাতে আরো বেশি নারী ও কন্যাশিশুদের সুন্দর জীবন বাস্তবায়নে সহায়তা দেওয়া যায়।

২০১৫ সালে চীন সরকারের প্রস্তাব ও অর্থায়নে 'নারী ও কন্যাশিশুদের শিক্ষা পুরস্কার' প্রতিষ্ঠা করে ইউনেস্কো। এ সম্পর্কে ইউনেস্কোর শিক্ষা বিষয়ক সহকারী মহাপরিচালক স্টেফানিয়া গিয়ান্নিনি চীনের প্রয়াসের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, অন্যান্য দেশের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বেইজিং। তিনি বলেন,

'নারী ও কন্যাশিশুদের শিক্ষা গ্রহণ শিক্ষার অসমতা ও শিক্ষার লিঙ্গ সমতা বাস্তবায়নে সহায়ক এবং ২০৩০ জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন প্রক্রিয়ার জন্য অনুকূল। বর্তমানে শিক্ষা খাতে ইউনেস্কো ও চীনের সহযোগিতা অতি ঘনিষ্ঠ, বিশেষ করে নারী ও কন্যাশিশুদের শিক্ষা কর্তব্যের উন্নয়নে। এ খাতে চীন ব্যাপক প্রচেষ্টা চালিয়েছে, আর চীনের এ প্রয়াস শুধু নির্দিষ্ট আলোচ্য বিষয়ে নয়, বরং গবেষণা, বিজ্ঞান, কন্যাশিশুদের শিক্ষাদান ও গবেষকদের প্রশিক্ষণে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।'

এ পুরস্কার স্থাপন করার পর থেকে ইন্দোনেশিয়া, জিম্বাবুয়ে, দক্ষিণ আফ্রিকা, পেরু, থাইল্যান্ড, জ্যামাইকা ও মিসরসহ ৭টি দেশের মেয়ে ও নারী প্রতিষ্ঠান বিজয়ী হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার মেয়ে নাদিয়া মুসাজি ২০১৭ সালে এ পুরস্কার লাভ করেন। তাঁর প্রতিষ্ঠান নারীদের বিজ্ঞান ও প্রকৌশল প্রযুক্তির শিক্ষা গ্রহণে সহায়তা দেয়। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির শিক্ষা গ্রহণ অতি গুরুত্বপূর্ণ, চীনের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রাধান্য সবার শেখা উচিত। তিনি বলেন,

'বর্তমানে বিশ্বে এআই ও রোবর্ট প্রযুক্তি প্রচলিত, নারীদের উচিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ডিজাইনারে পরিণত হওয়া। চীনের শিক্ষা ব্যবস্থার কাছ থেকে ব্যাপক জ্ঞান শেখা দরকার, বিশেষ করে নব্যতাপ্রবর্তন, বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও প্রকৌশলের দিকে। আমি খেয়াল করি যে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নব্যতাপ্রবর্তনে অনেক নারী অংশ নেন। এ শিক্ষা গ্রহণের ভূমিকা অতি গুরুত্বপূর্ণ, চীন নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করেছে।'

জ্যামাইকা নারী কেন্দ্র তহবিল 'অপ্রাপ্ত বয়সী মায়েদের স্কুলে ফিরে যেতে সহায়তা দেওয়ার' জন্য ২০১৮ সালের পুরস্কার বিজয়ীতে পরিণত হয়। এ প্রকল্পে এ ধরনের মায়েদের পুনরায় স্কুলে ফিরে বাধ্যতামূলক শিক্ষা গ্রহণ করা ও উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ অর্জনে প্রচেষ্টা চালাতে সহায়তা দেওয়া হয়। যাতে বাস্তব জীবনযাপনে প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন এবং চাকরি করতে পারেন। এ সম্পর্কে তহবিলের নির্বাহী পরিচালক ড. জোয়ে সিম্পসন বলেন, তাঁর কর্মগ্রুপের পুরস্কার বিজয়ী হওয়া দারুণ আনন্দদায়ক ব্যাপার। ৫০ হাজার মার্কিন ডলারের বৃত্তি তাঁদের ভবিষ্যত কাজের জন্য সহায়ক। তিনি বলেন,

'অতীতে আমাদের বাজেটের কারণে সীমাবদ্ধতা দেখা দেয়। ইউনেস্কো ও চীনের সহায়তায় এ বৃত্তির মাধ্যমে অনলাইনে তথ্য প্রচার ও আরো বেশি মায়েদের স্কুলে ফিরে যাওয়া সম্ভব। তাই এ পুরস্কার স্থাপনে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি এবং আমাদের কাজে চীনের সহায়তায় ধন্যবাদ জানাই।'

নারী ও কন্যাশিশুদের শিক্ষা গ্রহণ জাতিসংঘের ২০৩০ টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও ইউনেস্কোর প্রধান দায়িত্ব। এ সম্পর্কে ম্যাডাম গিয়ান্নিনি বলেন, ইউনেস্কোর গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতামূলক অংশীদার হিসেবে চীনের সাথে ভবিষ্যত সহযোগিতার প্রতি আশাবাদী তিনি। তিনি বলেন,

'ভবিষ্যতে চীনের সাথে সহযোগিতার জোরদারে তিনি আশাবাদী, তিনি নতুন দফার সহযোগিতা চালু করতে চান। যেমন আফ্রিকায় 'শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রকল্প' আর এআই প্রযুক্তির প্রশিক্ষণ প্রকল্প। মে মাসে বেইজিংয়ে বিশ্ব এআই প্রশিক্ষণ সম্মেলন শুরু হবে, তাতে ইউনেস্কোও প্রচেষ্টা চালাবে।'


1  2  3  
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040