ফিলিস্তিনে চীনা ভাষার শিক্ষকের কর্ম-জীবন, ফিলিস্তিনি সুরকার রামজি'র গল্প ও চিকত্সা বীমার মাধ্যমে চীনের দরিদ্র পরিবারের জীবন উন্নত করা
  2019-02-18 15:52:10  cri

 


ফিলিস্তিনে চীনা ভাষার শিক্ষকের কর্ম-জীবন

ফিলিস্তিনের বিখ্যাত বিরজেইত ইউনিভার্সিটি (বিজেডইউ) রামাল্লাহ'র নিকটবর্তী পশ্চিম তীরের বিরজেইত শহরে অবস্থিত। চীনের হুপেই প্রদেশের বিজ্ঞান কলেজের শিক্ষক স্যু লি কুও ফিলিস্তিনে আসা প্রথম দলের চীনা শিক্ষকদের একজন। তিনি দু'বছর আগে রামাল্লাহ পৌঁছে তাঁর কর্ম-জীবন শুরু করেন।

চল্লিশোর্ধ বয়সী শিক্ষক স্যু কলেজ থেকে পাস করার পর গ্রামে শিক্ষক হিসেবে চাকরি শুরু করেন। পরে তিনি নিজস্বভাবে ফরাসি ভাষা নিয়ে লেখাপড়া করেন। ২০০৩ সালে তিনি হুপেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি ভাষা একাডেমিতে ভর্তি হন। ২০০৬ সালে তিনি হুপেই বিজ্ঞান কলেজে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ২০১১ সালে তিনি আফগানিস্তানে চীনা ভাষার শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। ফিলিস্তিনে শিক্ষক জীবন সম্পর্কে তিনি বলেন,

'২০১০ সালে চীনের হানবানের শিক্ষক নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি। ২০১১ সালে আমাকে আফগানিস্তানে চীনা ভাষার শিক্ষক হিসেবে পাঠানো হয়। সেখানে প্রায় ৯ মাস কাজ করার পর নিরাপত্তাজনিত কারণে স্থানীয় স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন আমি আফ্রিকার ক্যামেরুনে দু'বছরের মতো চীনা ভাষার শিক্ষক হিসেবে কাজ করি। ২০১৪ সালে দেশে ফিরে যাই। ২০১৭ সালে আমাকে ফিলিস্তিনে পাঠানো হয়।'

স্যু আরো বলেন, ২০১৭ সালে বিরজেইত বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পর মাত্র ২৭ জন শিক্ষার্থী চীনা ভাষার ক্লাস বাছাই করে। বর্তমানে এক সেমিস্টারে আড়াই শো জনেরও বেশি শিক্ষার্থী চীনা ভাষা পড়ছে।

'এখানে আমার দায়িত্ব অনেক বেশি। চীনা ভাষার উচ্চারণ, অক্ষর লেখার পদ্ধতি, চীনা সংস্কৃতি ও চলচ্চিত্রের পরিচয় দেওয়া এবং ব্রাশ দিয়ে হস্তলিপিসহ অনেক বিষয় বুঝিয়ে দিতে হয়। বর্তমানে অনেক ছাত্রছাত্রী চীনা ভাষা শিখতে আগ্রহী। তারা চীনা ভাষাকে মজার একটি ভাষা মনে করে। যে-কোনো শিক্ষার্থী চীনা ভাষা শিখতে চাইলে আমরা তাদের স্বাগত জানাই।'

স্যু বলেন, ফিলিস্তিনে চাকরি করার সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ভিসা। এছাড়া, স্থানীয় অঞ্চলে দ্রব্যমূল্যের দামও অনেক বেশি। তিনি ছুটির সময় বই পড়েন আর আরবি ভাষা শেখেন। ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীরা চীনা ভাষার ক্লাস শুনতে পছন্দ করেন, তা স্যু'র জন্য সবচেয়ে আনন্দের ব্যাপার। তিনি বলেন,

'আমি ছুটির দিনে সবসময় বই পড়ি আর শাকসবজি চাষ করি, ইন্টারনেটে পরিবারের সাথে কথা বলি এবং রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে বেড়াতে আশেপাশের লোকদের সাথে কথা বলি। ভালভাবে সময় ব্যবস্থাপনা করতে না পারলে একাকীত্ব বোধ হয়। এখানে সুশৃঙ্খলভাবে জীবনযাপন করি। প্রতিদিন ভোরে জেগে উঠি, তখন বাইরে অন্ধকার। এসময় আমি শরীর চর্চা করি। আসলে একাকীত্ব সহ্য করতে পারলে কোনো সমস্যা নেই এখানে।'

বিদেশে থাকা চীনাদের মতো শিক্ষক স্যুও বাসায় শাকসবজি চাষ করেন। বৃষ্টির পর সবুজ কচি শাক দেখে অনেক খুশি হন তিনি। স্যু বলেন,

'ফিলিস্তিনে আসার পর এখানকার মাটি দেখে বাগান তৈরি করি। কারণ স্থানীয় অঞ্চলে শাকসবজি খুবই কম। তাই এখানে সবজি চাষের সিদ্ধান্ত নেই এবং এ কাজের মাধ্যমে চমত্কার সময়ও কাটাতে পারি। এমন কাজ সত্যিই অনেক মজার।'


1  2  3  
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040