সাংবাদিক আহমাতজানের গল্প
চীনের সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের কাশি শহরের একটি রেস্তোরাঁয় সাংবাদিক আহমাতজান সারাদিনের কাজ শেষ করে সিআরআইয়ের সাংবাদিকের সাথে দেখা করেন। নিয়মিত বাইরে যাওয়ার কারণে তার মুখ একটু কালো আর কথা বলার গতিও দ্রুত। আহমাতজান বলেন,
'আমি অনেক জিনিস ত্যাগ করে আজকের জীবনযাপনের পথ ঠিক করেছি। যদি আমি চীনের অন্যান্য উন্নত শহরে থাকি আর সেখানে চাকরি করি, তাহলে সম্ভবত আমার জীবন আরো সমৃদ্ধ হবে, উন্নত হবে। তবে আমি সে পথ বেছে নেইনি। আমি জন্মস্থানে ফিরে এসে ব্যাপকভাবে আমার দক্ষতা প্রয়োগ করেছি। আমার কাজের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে নিজের দক্ষতাও ব্যাপক উন্নত হয়েছে।'
আহমাতজানের বোন পরীক্ষায় পাস করে মূলভূভাগের উন্নত শহরের শ্রেষ্ঠ উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি হন। প্রতিবার বাসায় ফিরে তিনি লেখাপড়া ও জীবনযাপনের নতুন পরিবর্তনের কথা তুলে ধরেন। বোনের কথা শুনে আহমাতজানও উন্নত শহরে লেখাপড়ার সিদ্ধান্ত নেন। আহমাতজান বলেন,
'২০০৭ সালে ১৫ বছর বয়সে আমার উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষা শুরু হয়। তখন ক্লাসের শিক্ষকরা বাবা মায়ের মতো আমাদের দেখাশোনা করেন। বিভিন্ন ছুটির সময় শিক্ষকরা আমাদের সাথে থাকেন, আমাদের যত্ন নেন। যখন আমি বাসা মিস করতাম, তখন শিক্ষক ও সহপাঠীদের সাথে রান্না করতাম, উত্সব করতাম, এমন অভিজ্ঞতা আমার সারাজীবনের শ্রেষ্ঠ ব্যাপার।'
বেইজিং ছাংপিং এলাকার দুই নম্বর বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাহায্যে আহমাতজান তার উচ্চবিদ্যালয়ের লেখাপড়া সম্পন্ন করেন। ২০১১ সালে তিনি শাংহাই থুংচি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিমান প্রকৌশল বিষয়ে ভর্তি হন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি গণমাধ্যম কমিউনিটির দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে তথ্যসম্প্রচারে অনেক কাজ করেন। তখন থেকে গণমাধ্যমের কাজের প্রতি তিনি অনেক আগ্রহী হয়ে ওঠেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পর তিনি জন্মস্থান কাশিতে ফিরে যান। সেখানে স্থানীয় অঞ্চলের বেতারে সাংবাদিক হিসেবে যোগদান করেন। তিনি বলেন,
'এখানে কাজ করে আমি অনেক আনন্দিত। প্রতিদিন রাতে বেতারে খবর প্রচার করি বা সংবাদ রচনা করি, আমার পরিবার ও বন্ধুরা সবাই তা দেখে বা শোনে, এটি আমার কাছে খুবই গর্বের ব্যাপার।'
স্থানীয় অঞ্চলের মরুভূমি পর্যটন উত্সব সম্পর্কে খবর প্রচার করার জন্য তিনি ক্যামেরা নিয়ে মরুভূমিতে সাক্ষাত্কার নেন। স্থানীয় অঞ্চলের গ্রামবাসীদের জীবনযাপনের পরিবর্তন নিয়ে তিনি ব্যাপক সাক্ষাত্কার নিয়েছেন। তিনি ক্যামেরা দিয়ে গণমাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে চীন সরকারের ব্যাপক নীতিমালার বিস্তারিত পরিচয় তুলে ধরেন। যাতে স্থানীয় গ্রামবাসীদের দারিদ্র্যমুক্ত বাস্তবায়ন করা যায়।
সম্প্রতি আহমাতজান নিজের চেষ্টায় ৪ বছরের সংবাদ-বিষয়ক স্নাতক কোর্স সম্পন্ন করেন। তিনি সাংবাদিকের সনদও অর্জন করেন। নিজের মূল্য ও দক্ষতার উন্নয়ন নিয়ে তিনি বলেন,
'চীন সরকারের সমর্থনে আমার উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ হয়। তাই আমি সবসময়ই আমার জন্মস্থানের উন্নয়নে অবদান রাখতে চাই।'
সুপ্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, সময় দ্রুত চলে যায়, আজকের অনুষ্ঠানও তাড়াতাড়ি শেষ হবে। আমাদের অনুষ্ঠান সম্পর্কে কোনো মতামত থাকলে চিঠি লিখতে ভুলবেন না। আমাদের যোগাযোগ ঠিকানা ben@cri.com.cn ,caoyanhua@cri.com.cn
সময়মতো আমাদের অনুষ্ঠান শুনতে না পারলে বা শুনতে মিস কলে আমাদের বাংলা বিভাগের ওয়েবসাইটে শুনতে পারবেন। আমাদের ওয়েবসাইটের ঠিকানা www.bengali.cri.cn.
তাহলে এবার বিদায় নিচ্ছি। আগামী সপ্তাহে একই সময়ে একই দিনে আবার কথা হবে। সবাই ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন। থাকুন সুস্থ ও আনন্দে। যাইচিয়ান। (সুবর্ণা/টুটুল)