সুর ও বানী: চীনের বিখ্যাত গীতিকার ইয়ান সু
  2016-02-18 19:43:27  cri


গত ১২ ফেব্রুয়ারি চীনের বিখ্যাত সাহিত্যিক, নাট্যকার ও গীতিকার ইয়ান সু রোগে আক্রান্ত হয়ে বেইজিংয়ে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। তিনি শিল্পী জীবনে এক হাজারেও বেশি গান এবং অন্যান্য কর্ম সৃষ্টি করেছেন। এর মধ্যে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ সামরিক বিষয় নিয়ে লেখা। কারণ ইয়ান সু একজন সামরিক অফিসার। তিনি চীন এবং চীনের সেনাবাহিনীকে ভীষণ ভালোবাসতেন। তিনি বলেছেন, 'আমি সামরিক পোশাক পরতে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করি। সামরিক গান লিখতে ভীষণ আনন্দ পাই।' তাহলে বন্ধুরা, আজকের 'সুর ও বানী' আসরে ইয়ান সু রচিত বেশ কিছু গান আপনাদের শুনাবো।

চীনের বিখ্যাত সাহিত্যিক ও গীতিকার ইয়ান সু

প্রিয় শ্রোতা, ১৯৬২ সালে ইয়ান সু বিয়ে করেন। বিয়ের সময় ছুটিতে তিনি গীতিনাট্য 'চিয়াং চিয়ে' রচনা শুরু করেন।

ইয়ান সু'র স্ত্রী এ স্মৃতি স্মরণ করে বলেন, 'গীতিনাট্য 'চিয়াং চিয়ে' এবং পিকিং অপেরা 'লাল শিলা' রচনার জন্য ইয়ান সু তিনবার দক্ষিণ চীনে গিয়েছিলেন। তিনি দু'বার সিছুয়ানে গিয়েছিলেন। সে সময় জেলখানায় গিয়ে বিপ্লবীদের জীবন সম্পর্কে ধারণা নেন তিনি। তিনি জেলখানায় সাত দিন অবস্থান করেন। তারপর দু'বছর সময় ব্যয় করে তিনি এ গীতিনাট্য রচনা করেন। রচনার পর বার বার তিনি গীতিনাট্যটি সংশোধন করেছেন।'

১৯৬৪ সালের সেপ্টেম্বরে 'চিয়াং চিয়ে' গীতিনাট্যটি প্রদর্শন হবার পর পরই সারা চীনে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। সে বছর এ গীতিনাট্য টানা দুই'শ বার প্রদর্শিত হয়। এ গীতিনাট্যের প্রধান গান 'বরই ফুলের প্রশংসা' প্রতিটি পরিবারে শোনা যেতো।

১৯৬৪ সালে এ গীতিনাট্য প্রকাশিত হবার পর দ্রুতই জনপ্রিয়তা লাভ করে। ব্যাপক সুনাম ছড়িয়ে পরে। বিশেষ করে এ গীতিনাট্যের মধ্যে 'বরই ফুলের প্রশংসা' নামের গানটি সবার মুখে মুখে প্রচলিত হয় যায়।

'চিয়াং চিয়ে' গীতিনাট্যটির প্রদর্শনী দেখে মুগ্ধ হয়ে চীনের মহান নেতা মাও জে তোং ইয়ান সু'র সাথে সাক্ষাত্ করেন। সাক্ষাত্কালে চেয়ারম্যান মাও ইয়ান সুকে নিজের লেখা বই উপহার দেন। এ সময় ইয়ান বলেন, 'আমি অবশ্যই ভালোভাবে কাজ করার প্রয়াস চালাবো।' এ কথার মানে হলো ইয়ান সু আজীবন সুন্দর কাজ করা প্রতিশ্রুতি দান করেছিলেন।

বন্ধুরা, এখন শুনুন এ গীতিনাট্যের প্রধান গান 'বরই ফুলের প্রশংসা'।

ইয়ান সুর আসল নাম ছিলো ইয়ান চি ইয়াং। তিনি ১৯৩০ সালের ৯ মে চীনের হ্যপেই প্রদেশের বাওডিং শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫০ সালে ২০ বছর বয়সে ইয়ান সু যুব সাংস্কৃতিক দলে যোগ দেন। তিনি সে দলের উপপ্রধান ছিলেন। এ দলে তিনি অভিনয় করতেন, নাচ পরিবেশন করতেন, গান গাইতেন এবং পরিচালনা করতেন। ব্যান্ড দলের সহকারি ছিলেন তিনি। অর্থাত্ তিনি সব কাজ করতে পারতেন।

১৯৬৪ সালে 'আমি স্বদেশের নীল আকাশ ভালোবাসি' এবং 'সিছুয়ানে যাওয়া' নামে ইয়ান সু'র দুইটি গান তৃতীয় চীনের গণমুক্তি ফৌজের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সেরা গানের পুরস্কার পায়।

বন্ধুরা, শুনুন 'আমি স্বদেশের নীল আকাশ ভালোবাসি' গানটি। গেয়েছেন হান হোং।

1 2 3
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040