লিন ছোং
লিন ছোং হলেন 'পানি প্রান্তের' একটি চরিত্র। তিনি ৮ লাখ সরকারি বাহিনীর মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষক। তার স্ত্রী অপূর্ব সুন্দরী। দু'জন পরস্পরকে খুব ভালোবাসেন। পরিবারের আর্থিক অবস্থাও বেশ ভালো।
একদিন প্রধানমন্ত্রী কাও ছিউ'র পালিত পুত্রের লিন ছোংয়ের স্ত্রীর সঙ্গে দেখা হয়। তার স্ত্রী সুন্দর দেখে কাও ছিউ'র পালিত পুত্র তাকে অপমান করে। লিন ছোং এ ঘটনা জেনে খুব বিক্ষুব্ধ হন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কথা ভেবে তিনি এ অপমান সহ্য করেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী কাও ছিউর পুত্র লিন ছোংয়ের স্ত্রীকে পাওয়ার জন্য নানা ষড়যন্ত্র করে। লিন ছোংকে নানা কষ্ট দেয়। লিন ছোং প্রথমে সব মেনে নেয়। সে ভাবে, হয়তো একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে। বাসায় ফিরে গিয়ে আবার স্ত্রীর সঙ্গে দেখা হবে। শেষ পর্যন্ত কাও ছিউ লিন ছোংকে হত্যা করার আদেশ দেয় এবং তার স্ত্রীও আত্মহত্যা করে। এ ভাবে ধাপে ধাপে তিনি লিয়াং শান পাহাড়ে উঠে বিদ্রোহ করেন।
'পানি প্রান্তর' উপন্যাসের চীনা নাম হলো 'সুই হু চুয়ান'। বিদ্রোহীদের বিদ্রোহের জায়গাগুলোকে 'লিয়াং শান' বলা হয়। তত্কালীন সরকারের কাছে লিয়াং শানের যোদ্ধারা বিদ্রোহী বাহিনী হলেও জনসাধারণের চোখে তারা মহাবীর বা হিরো।
চীনের মহান নেতা মাও ছে তোং 'পানি প্রান্তর' উপন্যাসটি পড়তে পছন্দ করতেন। তার বিপ্লবী জীবনে 'পানি প্রান্তর' উপন্যাসের প্রভাবও পড়েছে। তিনি বার বার এ বই পড়তেন এবং বিশ্লেষণ করতেন। প্রাচীনকালের এই কৃষকদের বিপ্লবের কাহিনী চীনের আধুনিক বিপ্লবের ওপরও বিশেষ ভূমিকা রেখেছে।
প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, এতোক্ষণ আপনারা চীনের প্রাচীনকালের বিখ্যাত উপন্যাস 'পানি প্রান্তর' এর সংক্ষিপ্ত পরিচয় ও এ সম্পর্কিত কয়েকটি গান শুনলেন।
আসলে বিশাল এই উপন্যাসটি আমি 'সুর ও বানী' আসরে বিস্তারিতভাবে আপনাদের ব্যাখ্যা করতে পারিনি বলে খারাপ লাগছে। তবে আশা করছি, ভবিষ্যতে এ সব সাহিত্যের বাংলা অনুবাদও হবে। তখন আপনারা ভালো করে এ চমত্কার উপন্যাসগুলো পড়ে চীনের সাহিত্যের রস উপভোগ করবেন।
বন্ধুরা, আজকের সুর ও বানী এ পর্যন্তই। ভালো থাকুন সবাই। আবার কথা হবে। (ইয়ু/মান্না)