শ্রোতাবন্ধুরা, সারা বিশ্বে পিকিং ডাক খুবই বিখ্যাত। চীনের সবচেয়ে সুস্বাদু খাবার কি-এ প্রশ্নের উত্তরে সবাই প্রথমে বলবে পিকিং ডাক। এতো যার নাম ডাক সেই পিকিং ডাকের বিশেষত্ব কি? পেইচিংয়ে কোথায় কোথায় সবচেয়ে সুস্বাদু পিকিং ডাক পাওয়া যায়? আজকের " চলুন বেড়িয়ে আসি" অনুযায়ী আমরা পিকিং ডাকের রসালো স্বাদ নেবো। কথায় আছে ঘ্রাণে-অর্ধভোজন। আজ আমরা শ্রবনেই অর্ধভোজন সেরে নেবে।
৫৪ বছর বয়স্ক ওয়াং রুং ৩০ বছর ধরে পিকিং ডাক রান্না করছেন। যখন তার বয়স মাত্র ১৭ , তখন পেইচিং 'ছুয়ান চু তে' পিকিং ডাক রেস্টুরেন্টে তার কাজ শুরু । সেই তরুণ এখন 'ছুয়ান চু তে' 'হে ফিং মেন' পিকিং ডাক রেস্টুরেন্টের প্রধান বাবুর্চি । তিনি বলেন, পেইচিং অলিম্পিক গেমস প্রায় চলে এসেছে । এবার অলিম্পিক গেমস দেখার জন্য পেইচিংয়ে এসে সকল বিদেশী মন ভরে পিকিং ডাকের স্বাদ নিতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদী। তিনি বলেন:" পিকিং ডাক হচ্ছে বর্তমানে চীনের সবচেয়ে বিখ্যাত খাবারগুলোর মধ্যে অন্যতম। চীনে একটি কথা আছে যে, মহাপ্রাচীরে না উঠলে কেউ সত্যিকার সাহসী পুরুষ নয়। তেমনি পিকিং ডাক না খেলে আজীবন বঞ্চিত থেকে যাবে। সুতরাং চীনের রাজধানি পেইচিং বিশেষ করে অলিম্পিক গেমসের স্বাগতিক নগরী --পেইচিংয়ে আসলে , বিভিন্ন অলিম্পিক প্রতিযোগিতা দেখা ছাড়াও আপনারা নিশ্চয় মহাপ্রাচীরে যাওয়া আর পিকিং ডাক খাওয়ার সুযোগ হারাবেন না ।"
চীনে 'ছুয়ান চু তে' পিকিং ডাক রেস্টুরেন্টের ইতিহাস ১৪০ বছরেরও বেশি সময়ের । পেইচিং শহরের কেন্দ্রস্থলের 'ছুয়ান চু তে' 'হে ফিং মেন' পিকিং ডাক রেস্টুরেন্ট ১৯৭৯ সালে চালু হয়। বিশ্বে এর ব্যাপকতা যেমন , তেমনি জনপ্রিয়। এ রেস্টুরেন্ট প্রতিদিন মোট ৩ হাজারেরও বেশি দেশি-বিদশী পর্যটককে টেনে আনে। তিনি বলেন:" আসালামু আলাইকুম, আপনারা এদিকে আসুন ।"
' ছুয়ান চু তে' হচ্ছে পিকিং ডাকেরই একটি অন্য নাম। ' ছুয়ান চু তে' পিকিং ডাক রেস্টুরেন্টের বিশেষত্ব নিয়ে কথা বলার সময় ওয়াং রুং কে দেখতে বেশ গর্বিত মনে হচ্ছিল। তিনি বলেন:" আমাদের রেস্টুরেন্টে এসে অতিথিরা যদি একটি রান্না করা আস্ত পিকিং ডাক খেতে চান তাহলে সেটা হবে একটা বড় সমস্যা । সাধারণত আমাদের বাবুর্চি বা তার সাহায্যকারীরা অতিথিদের সামনে আস্ত পিকিং ডাক কেটে কেটে সাজিয়ে দিয়ে যান। অতিথিরা উত্সাহী হলে নিজেরাও পিকিং ডাক কেটে বা ভেঙে খেতে পারেন। খাওয়ার আগে যেমন জিবে পানি আসে তেমনি খাওয়ার পর তৃপ্ত হয় রসনা।"
' ছুয়ান চু তে' রেস্টুরেন্টে পিকিং ডাক কাটার তিনটি পদ্ধতি আছে। এর মধ্যে বিশেষ করে একটি পদ্ধতি নিয়ে আমরা কথা বলবো। এ পদ্ধতিতে পিকিং ডাক কাটার পর প্রতিটি অংশ দেখতে মনে হয় গাছের পাতার মতো। এ সম্পর্কে একটি গল্পও আছে। ওয়াং রুং বলেন:" এটি ১৯৬৯ সালের কথা। তখন চীনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাইয়ের আমন্ত্রণে ' ছুয়ান চু তে' রেস্তোরাঁয় বিদেশী অতিথিরা খাবার খেতে আসেন। তাদের কাটাচামচ ব্যবহার বেশি সুবিধাজনক। কারণ চপস্টিক্স ব্যবহারে তারা অনভ্যস্ত। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই বাবুর্চিকে পিকিং ডাকটি পাতার মতো ফালি ফালি করে কাটার জন্য বলেন। এভাবে পিকিং ডাক চালের আটার রুটির সাথে খেলে যেমন সুবিধা হয় তেমনি স্বাদও বেড়ে যায় ।"
1 2
|