অধ্যাপক পান সংবাদদাতাকে বলেছেন, শ্বেত টোপর হনুমান খুব সময় মেনে চলে। প্রতি দিন সকাল, দুপুর ও সন্ধ্যায় তারা পাহাড়ে নিয়মিত খাওয়া দাওয়া ও খেলাধূলা করে। দুপুরবেলা তারা বিশ্রাম নেয় এবং রাতে গুহায় ফিরে গভীর ঘুম দেয়। এ সব সংবেদনশীল জীবজন্তুর ওপরে মাঠ পর্যায়ে কয়েক দশক ধরে গবেষণা করা অধ্যাপক পান বলেছেন, ধীরে ধীরে এসব বিলুপ্তির হুমকির মুখে থাকা প্রজাতিকে পুনরুদ্ধারের সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে বেঁচে থাকার জন্য তাদের আগের পরিবেশ ও জায়গা ফিরিয়ে দেয়া।
শ্বেত টোপর হনুমানের বেঁচে থাকার জায়গা ফিরিয়ে দেয়ার জন্য ছোং চুও পৌর সরকার অনেক কাজ করেছে। গত শতাব্দীর গোটা ৯০ দশকে ছোং চুও পৌর সরকার মাটি কাটা ও বৃক্ষনিধন নিষিদ্ধ, মিথেন গ্যাস জলাশয় নির্মাণ, গ্রামবাসীর পাহাড়ে কাঠ কাটা কমানো এবং তাদেরকে আখ, ভুট্টা ও ধান চাষ করতে উত্সাহ দিয়ে আয় বাড়াতে সাহায্য করেছে। ভর্তুকি পাওয়ার পাশাপাশি কৃষকদের জীবনের মানও উন্নত হয়েছে। এছাড়াও মানবজাতি ও হনুমানের মধ্যে জায়গা দখলের প্রতিযোগিতা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রাকৃতিক পরিবেশও দিন দিন ভালো হয়ে যাচ্ছে। হনুমানের বেঁচে থাকার উপযোগী জায়গাও ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধার ও সম্প্রসারিত হচ্ছে। ফলে এই প্রজাতির সংখ্যাও ধীরে ধীরে বাড়ছে। এখন হনুমানের সংখ্যা ৭শ'রও বেশি। বর্তমানে স্থানীয় গ্রামবাসীরা সচেতনভাবে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও হনুমান সংরক্ষণ করেন। গ্রামবাসী চাও বলেন,
এখন আমরা পাহাড়ে কাঠ কাটি না। হনুমানকে একটি ভালো পরিবেশ দেয়ার জন্য ভালোভাবে প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ করি।
২০০২ সালে ছোং চুওতে শ্বেত টোপর হনুমান প্রাকৃতিক পার্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকে সেখানে প্রাকৃতিক পর্যটনও বিকশিত হয়েছে। শ্রোতাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, এতো কষ্টে পুনরুদ্ধার হওয়া হনুমানের বাঁচার উপযোগী পরিবেশ পর্যটন উন্নয়নের কারণে আবার নষ্ট হয়ে যাবে কি না? এ ব্যাপারে অধ্যাপক পান বলেন,
এই জাত সংরক্ষণের পাশাপাশি আমরা স্থানীয় জনসাধারণের জীবন ধীরে ধীরে উন্নত করতে পারি। প্রাকৃতিক পর্যটন এখন একটি নতুন সুযোগ। একজন বিজ্ঞানী হিসেবে আমি ছোংচুও ও এর নিকটবর্তী অঞ্চলে প্রাকৃতিক পর্যটনের বিকাশকে বিশেষভাবে সমর্থন করি। প্রাকৃতিক পর্যটন এ জায়গাটিকে আরো সুন্দর করে তুলবে। আমাদের বংশধরের জীবন আমাদের বর্তমান জীবনের চেয়ে আরো সুন্দর হবে।
এর পাশাপাশি অধ্যাপক পান বলেছেন, প্রাকৃতিক পর্যটন উন্নয়নের ভালো দিক হচ্ছে এর স্পষ্ট লক্ষ্য থাকে এবং এটি ভালোভাবে সংগঠিত করা হয়। এতে উন্নয়নের বাড়াবাড়ির সুযোগ নেই। এর ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশ কলংকিত হবে না এবং পুরো প্রকৃতির টেকসই উন্নয়ন হবে।
প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, মিষ্টি শ্বেত টোপর হনুমান হচ্ছে মানবজাতির বন্ধু। কুয়াং সি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে স্থানীয় গ্রামবাসী হনুমানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সহাবস্থান করে একটি উত্তম প্রাকৃতিক ছবি গড়ে তুলেছে। আজকের বিশেষ অনুষ্ঠানের শেষ প্রান্তে চলে এসেছি আমরা সবশেষে আমি আজকের দুটি প্রশ্ন আবার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। প্রথমটি, চীনের কুয়াং সি ছাড়া বিশ্বের অন্য কোথাও শ্বেত টোপর হনুমান আছে কী? দ্বিতীয়টি বর্তমানে মোট কতটি শ্বেত টোপর হনুমান আছে? আপনারা চিঠি পাঠালে বাংলা সার্ভিস, সি আর আই-১১, চীন আন্তর্জাতিক বেতার, পি.ও. বক্স ৪২১৬, পেইচিং, পি.আর. চাইনা—১০০০৪০। আমাদের ইমেইল ঠিকানা হচ্ছে ben@cri.com.cn. এবারের প্রতিযোগিতা ২০০৮ সালের ৬ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে। ওয়েব-সাইটে ২০০৮ সালের ৬ অক্টোবর রাত ১২টা পর্যন্ত আপনি এতে অংশ নিতে পারবেন। আপনাদের অংশ গ্রহণকে আবারো স্বাগত জানাই। 1 2
|