সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আবহাওয়ার উষ্ণায়ন হলো বিশ্বে একমাত্র আলোচ্য বিষয়। উষ্ণায়ন রোধে চীন সরকার বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সহযোগিতা করছে। যাতে গ্রিন হাউস গ্যাসের নিসরণ হ্রাস করে চীন জ্বালানী সম্পদ দূষণরোধ সংক্রান্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারে।
কার্বন-ডাই-অক্সাইড এবং মিথেন গ্যাসসহ নানা ধরণের গ্রিন হাউস গ্যাসের নিঃসরনের পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় পৃথিবীর গ্রিন হাউস গ্যাসের প্রতিক্রিয়া তীব্রতর হয়ে উঠছে। এর ফলে সারা পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন চীনে গ্রিন হাউস গ্যাসের প্রতিক্রিয়ায় উষ্ণ আবহাওয়ার সৃষ্টি হয়েছে । গত ৫ ফেব্রুয়ারী পেইচিংয়ের তাপমাত্রা ছিলো মোট ১৬ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড । এটি হলো ১৬৭ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা । চীনের রাষ্ট্রীয় আবহাওয়া ব্যুরোর প্রধান ছিন তা হে বলেছেন, আবহাওয়ার উষ্ণায়নের কারণে কৃষি জমিতে রোগজীবাণুর আক্রমণ এবং খরা পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুতর আকার ধারণের সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন:" সংশ্লিষ্ট গবেষণা ক্ষেত্রের ফলাফল থেকে দেখা গেছে যে, বিশ্বে আবহাওয়ার উষ্ণায়ন প্রকৃতির ওপর নানা প্রভাব ফেলেছে। এর কারণে উচ্চ তাপমাত্রা, খরা পরিস্থিতি এবং টাইফুন দেখা দিচ্ছে। গতবছর চীনে টাইফুনের আঘাতে কয়েক বার জনগণের জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এটি বিশ্বে আবহাওয়ার উষ্ণায়নের সঙ্গে সম্পর্কিত।"
আবহাওয়ার উষ্ণায়নের ফলে সারা বিশ্বের একটি গুরুতর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তার মধ্যে অন্তর্ভূক্ত রয়েছেঃ দক্ষিণ -উত্তর মেরু অঞ্চলের তুষার গলে যাওয়ার ফলে সমুদ্রের পরিধি বেড়ে যাওয়া, উপকূলীয় অঞ্চলের নিম্ন জমিতে পানি জমে থাকা, উপকুল ও সমুদ্রতীরের জমিতে প্রচুর লবন পানি ঢুকে পড়া, সমুদ্র পরিবহন এবং জলজ খাদ্য চাষের ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টিসহ বিভিন্ন পর্যায়।
এ জন্য সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন সরকার গ্রিন হাউস গ্যাসের নির্গমণ হ্রাস করার ব্যবস্থা বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। ২০০২ সালে, চীনে " চিং তু প্রস্তাব" অনুমোদিত হয় । এ প্রস্তাব অনুযায়ী বিদেশের আধুনিক প্রযুক্তি গ্রহণ করে চীন দূষণ রোধের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। গত জানুয়ারী পর্যন্ত চীন সরকার মোট ৩০০টি দূষণ রোধ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে বিদ্যুত্ শক্তি, কয়লা এবং রাসায়নিক শিল্পসহ বিভিন্ন বিষয়।
জানা গেছে, বিদ্যুত্ ক্ষেত্রের দূষণ রোধ পরিকল্পনা জ্বালানী সম্পদ ব্যবহারের হারকে উন্নত এবং দূষণমুক্ত জ্বালানীসম্পদ উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে। এর ফলে গ্রিন হাউস গ্যাসের নির্গমণ হ্রাসের বিষয়টিও ত্বরান্বিত হয়েছে। যেমন, চীনের উত্তরাঞ্চলের মঙ্গোলিয়া স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত মোট ১ লাখ কিলোওয়াট্ বিদ্যুত্ শক্তি কেন্দ্রে প্রতিবছর প্রায় ২.৫ লাখ টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড জাতীয় গ্রিন হাউস গ্যাসের নির্গমণ হ্রাসে সক্ষম হয়েছে।
1 2
|