ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এ কথা সবারই জানা রয়েছে। প্রতি বছর প্রায় ১০ লাখ চীনা ধূমপানের কারণে রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। ধূমপান ছেড়ে দেয়ার লক্ষ্যে সহায়তার উদ্দেশ্যে একটি সুষ্ঠু সামাজিক পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য সম্প্রতি পেইচিংয়ে কিছু নীতিমালা প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে যে, রেস্তোঁরা, হোটেল এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন পাবলিক স্থানে ধূমপান করা নিষিদ্ধ। এর ওপর সমাজের ব্যাপক সজাগ দৃষ্টি রয়েছে।
" ধূমপান আমার কাছে অনেক বিঃরক্তিকর। সে সিগারেট খেলে আমি অন্য জায়গায় চলে যাবো।"এইমাত্র শুনলেন পেইচিংয়ের ওয়াং চিং কমিউনিটির অধিবাসী সুন সিও ইয়া তার স্বামীকে ধূমপানের জন্য তীব্র অসন্তোষের সঙ্গে বলা কথা। তার স্বামী লি চিয়া হুয়া ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ধূমপান করছেন। সিগারেট খাওয়া ইতোমধ্যেই তার নিত্য দিনের একটি অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে । ম্যাডাম সুন বলেন, স্বামীর কাছে সিগারেট খাওয়া ত্যাগের কথা বললে তিনি সব সময়ই নানা ধরণের অজুহাত ব্যাখ্যা করে থাকেন। লি বলেন:" আনন্দ বা দুঃখ লাগলে বা বন্ধুদের সঙ্গে একসঙ্গে খাওয়া দাওয়া করলে , তখন হয়তো ধূমপান করা যায়।"
সম্প্রতি পেইচিংয়ের গণ-ব্যবহার্য স্থানে ধূমপান নিষিদ্ধ সংক্রান্ত একটি নতুন নিয়ম পেইচিং সরকারের সংশ্লিষ্ট ওয়েব-সাইটে প্রকাশিত হয়েছে। এ নীতিমালা গণ-ব্যবহার্য স্থানে ধূমপান নিষিদ্ধের বিষয়টি সম্প্রসারণে সহায়ক করছে। এতে প্রথমবারের মতো স্টেডিয়াম, হোটেল এবং রেস্তোরাঁসহ বিভিন্ন পাবলিক স্থানে সিগারেট না খাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে নীতিমালায় আরো বলা হয়েছে, যে সব ধূমপায়ী এ আইন ভঙ্গ করবে তাদেরকে শাস্তিস্বরূপ কমপক্ষে ৫০ ইউয়ান জরিমানা করা হবে।
জানা গেছে, এ নিষেধাজ্ঞা মে মাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হবে। এ থেকে বুঝা যায় যে, পেইচিং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের কর্মীরাও আসন্ন অলিম্পিক গেমস --২০০৮কে ধূমপান পরিত্যাগের একটি উপযুক্ত সুযোগ হিসেবে কাজে লাগাবেন। এ নতুন নীতিমালা ব্যাপক অধিবাসীদের সমর্থন পেয়েছে। তারা মনে করেন, ধূমপান নিষিদ্ধ করায় স্বাস্থ্য রক্ষা, আসন্ন অলিম্পিক গেমস আয়োজন এবং একটি সুষ্ঠু সামাজিক পরিবেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অনেক সহায়ক হবে। সুন সিয়াও ইয়া হচ্ছেন সমর্থনকারীদের মধ্যে অন্যতম। তিনি বলেন:" আমি অনেক সমর্থন করি। পাবলিক স্থান বা নিজের পরিবারে ধূমপান করলে আপনি নিজেসহ আপনার আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধুদের বিশাল ক্ষতি হবে । তাই সবারই ধূমপান করা অনুচিত।"
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ সূত্রে জানা গেছে, সিগারেট খাওয়ার সময় মোট ৪০টিরও বেশি ধরণের ক্যান্সারের সৃষ্টি হয়। এতে মানুষের শরীরের সর্বোচ্চ ক্ষতিকর দিক হচ্ছে নিকোটিন, কার্বোন মনোক্সাইড এবং অন্যান্য ধাতুর মিশ্রণ। একটি সিগারেটের মধ্যে থাকা নিকোটিনই যথেষ্ট একটি ছোট্ট ইদুরকে মেরে ফেলার জন্য। তবে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সিগারেট খেলে ধূমপানকারীর পাশে থাকা অন্যদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি ধূমপায়ীর তুলনায় আরও বেশি হয়।
1 2
|