v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-04-02 20:51:13    
চীনের নামকরা চারুকলা শিল্পাচার্য থু চিয়ে

cri

    থু চিয়ের আরেকটি শখ হলো ছবি তোলা । তিনি ছুটির সময় চীনের অনেক দশর্নীয় স্থান ঘুরে ঘুরে অনেক ছবি তুলেছেন এবং নানা আকারের পাথর সংগ্রহ করেছেন । তিনি এই সব পাথর দিয়ে চীনের পাহাড় ও নদীর টব সৃষ্টি করেন । ফলে ১৮ বছর বয়সেই তিনি চীনের উদ্যান শিল্প সমিতির সদস্য হন ।

    গত শতাব্দীর সত্তরের দশকে চীনের তথাকথিত সাংস্কৃতিক বিপ্লবের কারণে চীনের সংস্কৃতি ও শিল্পের প্রসার বিঘ্নিত হয়েছিল। সেই সময় চীনের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চারুকলা কোর্স ছিল না । তাই থু চিয়ের পক্ষে বিজ্ঞান কোর্স পড়া ছাড়া বিকল্প ছিল না । তিনি অবসর সময়ে পাথর ভাস্কর্য ,টেরাকোটা ও টবে দৃশ্য সৃষ্টির কাজ করেন এবং চীনের সাহিত্য , সংগীত , বৌদ্ধসংস্কৃতি ও চিত্রকলা সম্পর্কিত বই পড়েন ।

    থু চিয়ে ব্রিটেন , যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর ইউরোপে দশ বছর ছিলেন । জীবিকা নির্বাহের জন্য তিনি লেখাপড়ার ফাঁকে ফাঁকে রাস্তায় পর্যটকদের জন্য ছবি আঁকা এবং রেস্তোরাঁয় প্লেট ধোঁয়ার কাজ করতেন । এভাবে জমানো দেয়া অর্থ দিয়ে তিনি দশ-বারোটি দেশ ভ্রমণ করেন এবং সেসব দেশের শিল্পকলা জাদুঘর পরিদর্শন করেন । অন্য দেশের শিল্পকর্ম উপভোগ ও অধ্যয়নের প্রক্রিয়ায় তিনি শিল্পকর্ম সৃষ্টি করে চীনের ঐতিহ্যিক শিল্প প্রচারের সিদ্ধান্ত নেন । তিনি বলেন , আমার দাদী ও তার সমবয়সী শিল্পীরা ভাস্কর্যকর্ম দিয়ে চীনের পাঁচ হাজার বছরের সংস্কৃতি , সভ্যতা ও প্রজ্ঞা প্রকাশের চেষ্টা করেছিলেন ।এগুলো চীনের সংস্কৃতির উপাদান। বিদেশীরা এ সব শিল্পকর্ম দেখেই বুঝতে পারেন এটা চীনের সংস্কৃতির একটি অংশ । আমি এ ধরনের চেষ্টা ও ধারাবাহিকতা বন্ধ করতে পারি না ।

    দেশে ফিরে থু চিয়ে হংকংয়ে একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন এবং উপযুক্ত কাঠ সংগ্রহের জন্য দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে গিয়েছেন । চীনের সব চেয়ে ঐতিহ্যবাহী কাঠ ভাস্কর্যের কাঠ হল চন্দন ও হুয়ান হুয়া লি কাঠ । থু চিয়ের পূর্বপুরুষরা চন্দন দিয়ে অনেক ভাস্কর্যকর্ম সৃষ্টি করেছিলেন । ভালো গুণগত মানের চন্দন সংগ্রহের জন্য থু চিয়ে নিজের কোম্পানির শেয়ার বিক্রি কর দেন । ভাস্কর্যের জন্য যথেষ্ট অর্থ যোগাড় করার তিনি তার কোম্পানিকে আরো শক্তিশালী করে তোলার জোর চেষ্টা চালান ।

    দেশবিদেশের অনেক মানুষ থু চিয়ের ভাস্কর্যকর্ম পছন্দ করেন । গত বিশ বছরে তার তিন শ'টি ভাস্কর্য রাষ্ট্রীয় উপহার হিসেবে বিভিন্ন দেশের অতিথিকে দেয়া হয়েছে। ১৯৯৯ সালে থু চিয়ে তার তৈরী একটি মাতা বৌদ্ধমূর্তি আর্থিক সংকটে জর্জরিত থাইল্যান্ডকে উপহার হিসেবে দেন। এ বৌদ্ধমূতি তৈরী করতে তার চার বছর সময় লেগেছিল । মূল্যবান হুয়ান হুয়া লি কাঠ দিয়ে তৈরী এ বৌদ্ধমূর্তিরউচ্চতা ছয় মিটার , এতে মোট ১৩ টন কাঠ ব্যবহার করা হয়েছে । থাই জনগণ এ বৌদ্ধমূর্তিটি খুব পছন্দ করেন । থাইল্যান্ডের রাজা ও রানী এ জন্য থু চিয়েকে থাইল্যান্ড –চীন সাংস্কৃতিক বিনিময়ে বিশেষ অবদানের জন্য পদক দিয়েছেন । থু চিয়ে বলেন , এ বৌদ্ধমূতি তৈরির আগে তিনি শতাধিক নমুনা তৈরি করেছেন । তিনি বলেন , বৌদ্ধমূর্তিটি তৈরির আগে আমি থাইল্যান্ডের সংস্কৃতি নিয়ে গবেষণা করেছি । এর আগে আমি জাপান , সিংগাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়া গিয়েছিলাম । বৌদ্ধমূর্তির ভঙ্গী গবেষণার জন্য আমি এক শ'রও বেশি নমুনা তৈরি করি ।

    থু চিয়ের শিল্পকর্ম বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রদর্শিত হয় এবং জাদুঘরে সংরক্ষণ করা হয়। তিনি চীনের একজন বেসরকারী মৈত্রী দূত হিসেবে কাজ করছেন । এখন তিনি সাংহাইয়ে ' চীনের আধুনিক রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের শিল্পকর্ম জাদুঘর প্রতিষ্ঠার প্রস্তুতি নিচ্ছেন । তিনি জানান , এ জাদুঘরের আয়তন ৫০ হাজার বর্গমিটার , এতে চীনের আধুনিক শিল্পীদের সৃষ্ট শিল্পকর্ম দেখানো হবে । এর পাশাপাশি এ জাদুঘর বিদেশের সঙ্গে সাংস্কৃতিক বিনিময়ের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে । (ফেং সিউ ছিয়েন)


1 2