
কুরিজাবু বলেন, প্রতি বছর বসন্তকাল, গ্রীষ্মকাল, শরত্কাল এবং শীতকালে চেঙ্গিস খানের সমাধিতে সবচেয়ে বড় আকারের উত্সর্গিত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় । তখন সমাধির কাছে উত্সর্গিত অনুষ্ঠান পর্যটকদের পরিদর্শনের জন্য উঁচু টাওয়ার স্থাপন কর হয় । এ সময় স্মরণ সংগীত বাজানো হয়, উত্সর্গিত উপহার দেয়া হয় এবং শ্রদ্ধা নিবেদন করে উত্সর্গিত শাস্ত্র পড়া হয় । অনুষ্ঠানটি মধ্যরাত পর্যন্ত চলার পর শেষ হয় । অনুষ্ঠানে আকাশ, পূর্বপুরুষ ও বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা এবং পুরনো মঙ্গোলিয় জাতির পশু উত্সর্গ, আগুণ উত্সর্গ, দুধ উত্সর্গ, মদ উত্সর্গ এবং গান উত্সর্গ করা হয় ।

প্রতি বছর ৪বার বৃহত্তম উত্সর্গিত অনুষ্ঠান ছাড়াও , এ সমাধিতে নিয়মিত বিভিন্ন উত্সর্গিত অনুষ্ঠানও আয়োজিত হয় । সব উত্সর্গিত অনুষ্ঠানেই ১৩ শতাব্দীর ঐতিহ্য বজায় থাকে । ওরটোস গবেষণা পরিষদের প্রধান ছি ছাও লু বলেন, সকল মঙ্গোলিয় জনগণের উত্সর্গিত স্থান হিসেবে চেঙ্গিস খানের সমাধি প্রাচীনকাল থেকেই অব্যাহতভাবে ওরটোসের মঙ্গোলিয় লোকজনের উত্সর্গ অনুষ্ঠানটি চেঙ্গিস খানের দেহরক্ষার কাজের অভ্যসে পরিণত হয়েছে । উতসর্গ অনুষ্ঠানের ইতিহাস প্রায়৭০০ বছরের ।
ঐতিহাসিক সংস্কৃতিকে সম্মান ও সংরক্ষণের ভিত্তিতে চেঙ্গিস খানের সমাধিতে কয়েকটি নতুন পর্যটন স্থানও নির্মিত হয়েছে । সমাধির কাছে নির্মিত পর্যটন এলাকায় পর্যটকরা এসব দৃশ্য পরিদর্শনের মাধ্যমে আরও গভীরভাবে মঙ্গোলিয় জাতির বিশেষ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারেন ।
চেঙ্গিস খানের সমাধি এলাকায় একটি মঙ্গোলিয়ার ঐতিহাসিক যাদুঘর রয়েছে । এটা হলো বিশ্বের একমাত্র বিশেষভাবে মঙ্গোলিয় জাতির ইতিহাস ও সংস্কৃতি সংগ্রহ ও গবেষণা করা বৃহত্তম বহুমুখী যাদুঘর । সেখানে মঙ্গোলিয়ার অনেক শ্রেষ্ঠ সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার ,জাতীয় সংগীত যন্ত্র এবং একটি ২০৬ মিটার দৈর্ঘ্যের শিল্পকর্মও রয়েছে । চিত্রকলায় মঙ্গোলিয় জাতির উত্স্য থেকে শুরু করে চেঙ্গিস খানের জন্ম ও চীনের ইউয়ান রাজংশের শেষ সময়সহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক মুহুর্তচিত্রিত রয়েছে ।
এছাড়াও পর্যটকরা পর্যটন এলাকার মঙ্গোলিয় জাতির লোকজনের বাসায় গিয়ে মঙ্গোলিয় বয়স্ক পশুপালকদের নিজেদের তাঁবুতে ঐতিহ্যিক পদ্ধতিতে পশমী সুতো তৈরী দেখতে পারেন এবং বিশ্বের প্রথম মঙ্গোলিয় তাঁবুতে মঙ্গোলিয় খাবার খেয়ে জাতীয় নাচ গান উপভোগ করেন । প্রতি বছর এখানে আসা পর্যটকের সংখ্যা অনেক বেশি । চীনের উত্তরপূর্বাঞ্চল থেকে আসা চাং রেন মনে করেন, চেঙ্গিস খানের সমাধি অনেক সুন্দর । তিনি বলেন, এ সমাধি দেখতে অনেক মহান ।বিশেষ করে এর ভাষ্কর্য । এর আগে আমি অনেকবার অন্তঃর্মঙ্গোলিয়ায় এসেছি , তবে প্রথমবারের মতো এত বড় তাঁবু দেখলাম । এ সমাধির প্রচুর ঐতিহাসিক গল্প ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কথা রয়েছে । 1 2
|