বন্ধুরা, এখন আপনারা দেদেমার গাওয়া 'আকাশের বাতাস'গান শুনছেন। তিনি মঙ্গোলীয় ভাষা ও চীনা ভাষায় গানটি গেয়েছেন। এটা মঙ্গোলীয় জাতির একটি প্রাচীন লোকসংগীত। গত শতাব্দীর ৯০'র দশকে দেদেমা গানটি নতুন করে গেয়েছেন। গানটিতে মঙ্গোলীয় জনগণের আশাবাদী জীবনাচরণ এবং তাদের ভবিষ্যত প্রত্যাশা প্রতিফলিত হয়েছে। গানের কথা এমন, 'সময় চিরস্থায়ী হবে না। আমার বর্তমানের সুন্দর ক্ষণটিকে আমি যেন দামী মনে করি। তারার আলো রাত্রিকে উজ্জ্বল করে তোলে। বুদ্ধি জীবনের শূন্যতাকে সবুজ করে। আমাদের আশাকে পাখা দাও, যাতে উড়তে পারে। আমরা দু'হাত দিয়ে আদর্শকে আলিঙ্গন করি।'
দেদেমা যখন গভীরভাবে তাঁর প্রাণপ্রিয় গান গাইছিলেন, তখন হঠাত্ করেই তাঁর জীবনে দুর্ভাগ্য নেমে আসে। ১৯৯৮ সালে আমন্ত্রিত হয়ে তিনি জাপানে গিয়ে একটি বড় সংগীতানুষ্ঠানে অংশ নেন। দ্বিতীয় গান গাওয়ার সময় হঠাত্ তাঁর জিহ্বা ও ডান হাতের নিয়ন্ত্রণে হারিয়ে যায়। মঞ্চ থেকে নামার পর তিনি সঙ্গে সঙ্গে চেয়ারে পড়ে অজ্ঞান হয়ে যান। মস্তিস্কে রক্তক্ষরণের কারণে তাঁর ডান পাশের দেহ সম্পূর্ণ অসাড় হয়ে পড়ে। তখন থেকে তিনি দীর্ঘস্থায়ী পঙ্গুত্বের সঙ্গে সংগ্রাম শুরু করেন। তত্কালীন দৃশ্য স্মরণ করে তিনি বলেন, 'যদি তুমি বেঁচে থাকতে চাও, তাহলে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। সকল পথ মানুষের পায়ে হাঁটা থেকে সৃষ্টি হয়। আমি মনে করি, আমি হামাগুড়ি দিয়েও নিজের জীবনের দাগ রাখবো।'
নয় মাস চিকিত্সার পর ১৯৯১ সালের অক্টোবর মাসে দেদেমা আবার মঞ্চে ওঠে। রোগমুক্তির পর তিনি গান গাইতে আরো বেশি আকর্ষণ বোধ করেন। ২০০১ সালের শেষ দিকে দেদেমার তৃতীয় অ্যালবাম 'পশুপালক' প্রকাশের কিছু দিন পর তাঁর চতুর্থ অ্যালবাম 'দেদেমার লাল ছাতা'ও বাজারে এসেছে।
এখন দেদেমা আবার চীনের লোকসংগীত মঞ্চে কর্মব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। তিনি প্রায়শই নানা রকম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা কল্যাণমূলক অনুষ্ঠানে অংশ নেন। ২০০৭ সালে তিনি পেইচিংয়ে একক সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করেন। অনুষ্ঠানের শেষ প্রান্তে শুনুন দেদেমার গাওয়া 'সময়ের মধ্য শরত্কাল' গানটি।
গানের কথা এমন, 'জীবনের মধ্য শরত্কাল এসেছে। আমার চুল সাদা হয়েছে। কত অতীত ঘটনা মনে পড়ছে। কিশোরবয়স ধরে রাখতে পারি না। নানা পরিবর্তন ও অভিজ্ঞতার পর মাত্র জীবনের পথ বুঝতে পেরেছি।' (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে) 1 2
|