এখন আপনারা দেদেমার গাওয়া 'আমি তৃণভূমি থেকে এসেছি' গানটি শুনছেন। ৬০ বছর বয়সী দেদেমা উত্তর চীনের অন্তর্মঙ্গোলিয়া স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের আলাশান জেলার একটি পশুপালক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা-মা ছিলেন প্রসিদ্ধ স্থানীয় কণ্ঠ শিল্পী। বিস্তীর্ণ তৃণভূমি ও সুন্দর চারণভূমি দেদেমাকে দিয়েছে সংগীতের সহজাত প্রতিভা ।
১৩ বছর বয়সে দেদেমা উলানমুছি সাংস্কৃতিক প্রচার দলে সদস্য মনোনীত হন। দু'বছর পর তিনি অন্তর্মঙ্গোলিয়া শিল্পকলা বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৬৪ সালে চীনের প্রথম সংখ্যালঘু জাতির শিক্ষার্থী দলের ছাত্রী হিসেবে দেদেমা চীনের সংগীত ইনস্টিটিউটে প্রবেশ করেন এবং একাগ্রচিত্তে লোকসংগীত শিক্ষালেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পর তিনি জন্মস্থান অন্তর্মঙ্গোলিয়ায় ফিরে গিয়ে শিল্পী জীবন শুরু করেন।
সমবয়সী শিল্পীদের মধ্যে অপেক্ষাকৃত দেরীতে দেদেমার খ্যাতি এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার দশ বছরে তিনি যথাক্রমে অন্তর্মঙ্গোলীয় লোক গীতিনাট্য দল ও অন্তর্মঙ্গোলীয় নৃত্য গীত দলের একক গায়িকা হন। কিন্তু তাঁর পরিবেশনা স্থানীয় দর্শকদের দৃষ্টিতে তেমন পড়ে নি। ৩১ বছর বয়সে তিনি দক্ষিণ চীনের কুয়াংচৌ শহরে একটি অনুষ্ঠানে 'সুন্দর তৃণভূমি আমার বাসা' গান গেয়ে সকল দর্শকের ব্যাপক করতালি পান। তাঁর বিশিষ্ট কণ্ঠ ও দরদী গায়কীর কারণে হঠাত্ করেই তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়ে। বন্ধুরা, এখন শুনুন দেদেমার বিখ্যাত সেই গান 'সুন্দর তৃণভূমি আমার বাসা'।
১৯৮২ সালে দেদেমা পেইচিংয়ে আসেন। তিনি কেন্দ্রীয় লোক নৃত্য গীত দলের একজন একক গায়িকা হন। এখানে তাঁর গায়কী দিন দিন পরিপক্ক হতে থাকে। তিনি মঙ্গোলীয় জাতির বৈশিষ্ট্যের ওপরে পাশ্চাত্য ও মঙ্গোলীয় গায়কীরীতি মিলিয়ে নিজের স্বকীয়তা গড়ে তুলেছেন। তাঁর গাওয়া বহু মঙ্গোলীয় লোকসংগীত চীনে ব্যাপক প্রচলিত রয়েছে।
নিজের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে দেদেমা বলেছেন, 'কেন্দ্রীয় লোক নৃত্য গীত দল একটি বহু জাতিক দল। পেইচিং এসে আমি অনেক জিনিস দেখেছি। আমার আশেপাশে যারা আছেন, সবাই আমার শিক্ষক। এখানে শেখার সুযোগ বেশি। শিক্ষকদের কাছ থেকে নিরন্তর শিক্ষা গ্রহণ করাই হচ্ছে গত ২০ বছর ধরে আমার অগ্রগতির প্রধান কারণ।'
1 2
|