কিন্তু এটা খুব একটা সহজ কাজ নয় । চা-য়ের গাছ লাগানোর প্রথম দিকে তাঁকে বেশ কিছু অসুবিধার মোকাবিলা করতে হয়েছিলো। একটার পর একটা ব্যর্থ হওয়ার পর ১৯৭০ সালে তিনি গ্রীণ হাউসে ২ কেজি চা উত্পাদন করতে সক্ষম হন । এ সম্পর্কে তিনি বলেন, এর পর আমি আমি চা-য়ের গাছগুলোকে পাহাড়ে চা বাগানে স্থানান্তরিত করেছি । কারণ গ্রীণ হাউসে নয় পাহাড়ে চা উত্পাদন করতে হবে । আমি ০.১৩ হেক্টর জমিতে চা চাষ করেছি । আমি সফল হয়েছি ।
১৯৭২ সালে তিনি মধ্য চীনের হুনান প্রদেশ গিয়ে সেখানকার চা বাগান পরিদর্শন করেছেন । স্থানীয় গণ সরকারের সমর্থনে সেখানকার মানুষরা চা উত্পাদনের মাধ্যমে ধনী হতে পেরেছেন দেখে মাদাম চাং সুচেন সাংনান জেলার নেতৃবৃন্দের কাছে বাগানে চা উত্পাদনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন । তিনি বলেন, জেলার নেতৃবৃন্দগণ আমার প্রস্তাবকে খুব আন্তরিকতার সঙ্গে গ্রহণকরেন । পরিদর্শন ও গবেষণা চালানোর পর তারা ব্যাপকাকারে চা বাগান স্থাপনেঅনুমোদন দেন । ১৯৭২ সাল আমাদের এখানে প্রায় ২০হাজার লোক পাহাড়ে চা উত্পাদন করতেন । বলা যায়, নেতৃবৃন্দের সমর্থন সাংনান জেলার চা উত্পাদন উন্নয়নের প্রধান কারণ ।
কিন্তু পরিকল্পনা মোতাবেকঅর্থনৈতিক ব্যবস্থার কারণে সে সময় সাংনান জেলার চা উত্পাদনের গতি মন্থর ছিল । আশির দশকের প্রথম দিকে সাংনান জেলার চা-য়ের আয়তন মাত্র ৪৬০ হেক্টর ছিল । রাষ্ট্রের সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ নীতি চালু হওয়ার সঙ্গেসঙ্গে মাদাম চাং জনসাধারণের দারিদ্র্য বিমোচন ও ধনী হতে চাওয়ার প্রবল ইচ্ছা অনুভব করতে পেরেছেন । ১৯৮৪ সালে তিনি সাংনান জেলা সরকারের সমর্থনে অন্য ৩৭টি চা ফারমের সঙ্গে যৌথভাবে চাষ, প্রক্রিয়াকরণ ও ব্যবসা একীকরণের লক্ষ্যেসাংনান জেলার চা কোম্পানি গড়ে তুলেন । কোম্পানি কৌশলগত দিক থেকে কৃষকদের সমর্থন করে । সার্বিকভাবে চা-চাষীদের সেবা করে এবং বাজার ও কৃষকদের মধ্যে একটি সেতু স্থাপন করে । এইভাবে চা-চাষীদের চা চাষ ও বিক্রির সমস্যা সমাধান করা যায় ।
কোম্পানির সাহায্যে ২০০৬ সালে সাংনান জেলায় চায়ের আয়তন ৪৬০০ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে । এর বার্ষিক উত্পাদনের পরিমাণ ৫ লাখ কেজি ছাড়িয়েছে এবং উত্পাদন মূল্য ছিল ২ কোটি ৩০লাখ ইউয়ান । এখন চা সাংনান জেলার তিনটি প্রধান উত্পাদন শিল্পের মধ্যে অন্যতম হয়েছে ।
সাংনান জেলার চা-য়ের উত্পাদনে মাদাম চাং সুচেনের বিশেষ অবদানের কারণে তিনি চীন সরকারের সর্বোচ্চ পুরস্কার---পয়লা মে শ্রম পুরস্কার পেয়েছিলেন । এ সম্পর্কে তিনি বলেন , চীনা কমিউনিষ্ট পার্টি ও জনগণের কল্যাণে আমি একটি ছোট মেয়ে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ছাত্রী হয়েছি । আমাকে সমাজকে প্রতিদান দিতে হবে । পাহাড়ি এলাকার জনসাধারণের কষ্ট ও দারিদ্র আমাকে কৃষকদের ধনী করানোর পদ্ধতি খুঁজে বের করতে উত্সাহ দিয়েছে । চা চাষ পাহাড়ী এলাকার জনগণের ধনী হওয়ার এক ভাল প্রকল্প । তাই আমি ভালভাবে এই কাজকে জনপ্রিয় করব ।
এখন বুড়িমা চাং সুচেনের নেতৃত্বে সাংনান জেলার চা কোম্পানি পাহাড়ে, কৃষিজমিতে , বনাঞ্চলে অথবা রাস্তার পাশে চা বাগান গড়ে তোলার লক্ষ্য বাস্তবায়িত হয়েছে । সাংনান জেলার চা-য়ের ভবিষ্যত সম্পর্কে তিনি বলেন, চা-য়ের গুণগতমান উন্নত করতে হবে । এইভাবে যেমন জনসাধারণের আয় বাড়বে তেমনি ব্যাপক ভোক্তাদের চাহিদা মেটাতে পারবে । তিনি আরও বেশি উন্নত মানের চা গাছ আমদানি করবেন । সাংনান উত্তর চীনে চা উত্পাদনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটিতে পরিণত হবে বলে তিনি আশা করেন । 1 2
|