ইয়ানথাই শহরের তথ্য জানার পর এখন আমরা শ্রোতাদেরকে ইয়ানথাই শহরের সংস্কৃতির উত্স , ৭০০০ বছরেরও বেশি ঐতিহাসিক পাইশি পুরাকীর্তি দেখতে নিয়ে যাবো । পাইশি পুরাকীর্তি ইয়ানথাই শহরের জিফু এলাকার পাইশি গ্রামে অবস্থিত । পুরাকীর্তির কাছাকাছি ব্যাপক উচুঁ -নিচু জমি রয়েছে । পাইশি পুরাকীর্তির অনুসন্ধানের কারণে পাইশি গ্রাম বিখ্যাত হয়েছে । এ গ্রামের পূর্ব, পশ্চিম ও দক্ষিণ দিকে সবই পাহাড় । তাহলে কেন এ পুরাকীর্তি এ গ্রামে অবস্থিত ? ইয়ানথাই জাদুঘরের প্রধান ওয়াং সি পিং বলেন, কারণ এ গ্রাম পাহাড় ও সমুদ্রের কাছে থাকায় ,প্রাচীনকালে লোকজন এখানে মাছ ধরার মাধ্যমে জীবনযাপন করতো । তিনি বলেন, এ গ্রাম সমুদ্র থেকে প্রায় ২ / ৩ কিলোমিটার দূরে । সেখানে থোংশেন নামক নদী রয়েছে । এ পুরাকীর্তি চিনহুয়াংতিং নামক ঢালের একটি উচুঁ স্থানে নির্মিত এবং সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা ৭০০ মিটার । কেন এতো উচুঁ স্থানে তা নির্মাণ করা হয় ? কারণ তখন সমুদ্রের সমতল থেকে উচুঁ স্থানে তা নির্মাণ করলে, সমুদ্রের পানি পুরাকীর্তিকে ধ্বংস করতে পারবে না । এখান থেকে সমুদ্র গিয়ে মাছ ধরাও সুবিধাজনক ।
১৯৭২ সালে ইয়ানথাই শহরে একবার সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তির অনুসন্ধান হয় এবং পাইশি সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি খুজেঁ পাওয়া যায় । বহুবার উদ্ধার অভিযানে অনুসন্ধানের মাধ্যমে শানতুং জাদুঘর ও ইয়ানথাই শহরের সাংস্কৃতিক প্রশাসন বিভাগ আদিযুগের এ গ্রামে অনেক সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার খুঁজে বের করেছে । বিজ্ঞানসম্মত পরীক্ষা ও বিশ্লেষণের পর জানা যায় যে, এসব উত্তরাধিকারের ইতিহাস ৭০০০ বছরেরও বেশি এবং পাইশি পুরাকীর্তি চীনের শানতুং প্রদেশের সবচেয়ে পুরনো সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তিতে পরিণত হয়েছে ।
পাইশি পুরাকীর্তিতে অনেক ঐতিহাসিক উত্তরাধিকারের অনুসন্ধান করা হয়েছে এবং এসব জিনিস ইয়ানথাই যাদুঘরে প্রদর্শিত হয় । পাইশি পুরাকীর্তি পছন্দ করলে, আপনারা যাদুঘরে গিয়ে পরিদর্শন করতে পারেন । ইয়ানথাই যাদুঘর ইয়ানথাই শহরের কেন্দ্রীয় অঞ্চল ইউলান সড়কে অবস্থিত । এর আগে তার নাম ছিল দেবীর বাসা , ফুচিয়ান প্রদেশের নৌ ব্যবসায়ীদের পুঁজি বিনিয়োগে সমুদ্রের দেবীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য একটি মন্দির নির্মিত হয় । এ পর্যন্ত তার ইতিহাস ১০০ বছরেরও বেশি । ১৯৫৮ সালে ইয়ানথাই যাদুঘর নির্মিত হয় । যাদুঘরে প্রবেশ করে, আপনারা কয়েকটি পুরনো পাইন গাছ দেখতে পাবেন । গোল আকারের দরজা অতিক্রম করার পর পর্যটকরা পাইশি পুরাকীর্তি থেকে অনুসদ্ধান করা সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারও পরিদর্শন করতে পারবেন ।
ইয়ানথাই জাদুঘরের প্রধান ওয়াং শিপিং ব্যাখ্যা করে বলেন, একটি জায়গা ধ্বংস হওয়ার পর বাইরে থেকে দেখলে বোঝা যাবে না যে তা পুরাকীর্তি হবে কীনা ? বর্তমানে পাইশি পুরাকীর্তিতে শুধু রাস্তার বিভিন্ন স্তরে থাকা সাদা রঙয়ের ঝিনুক এবং চীনা মাটির ছিন্ন অংশ দেখা যায় । তবে ইয়ানথাই শহরের যাদুঘরে পাইশি সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তির রোডম্যাপ থেকে পর্যটকরা আরও বেশি তথ্য জানতে পারবেন । এ সম্পর্কে ওয়াং শিপিং বলেন, . প্রথম স্তর হলো আবাদী স্তর , এর উচ্চতা প্রায় ৩০ সেন্টিমিটার । প্রথম স্তরের নিচে দেখা যায় ঝিনুক ও হাড় । তা থেকে বোঝা যায়, প্রাচীনকালে লোকজন পশু পালন করতে শুরু করে । এ পুরাকীর্তির মোট ছয় স্তর রয়েছে, পঞ্চম ও ষষ্ঠ স্তরের ইতিহাস সবচেয়ে দীর্ঘ ।
পাইশি সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তির রোডম্যাপে আমরা দেখেছি , গোটা পুরাকীর্তি মোট ছয় স্তর নিয়ে গঠিত । সবচেয়ে গভীর স্থান মাটির নিচে ৬ বা ৭ মিটারে অবস্থিত । সবচেয়ে উপরে ৩০ বা ৪০ সেন্টিমিটার আবাদী স্তর, দ্বিতীয় স্তর থেকে ষষ্ঠ স্তর পর্যন্ত বালির তলানি । পাইশি পুরাকীর্তিতে চীনা মাটি, পাথর ও হাড়সহ বিভিন্ন জিনিসসহ ৭০০টিরও বেশি এবং মেরামত হওয়া ছোট চীনা মাটির অংশসহ ৪০ হাজারেরও বেশি পাওয়া গেছে । এর পাশাপাশি দু'টি সমাধিও খুঁজে বের করা হয়েছে । তা চীনের শানতুং প্রদেশের প্রাচীনকালের সংস্কৃতির উত্স গবেষণা করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এনে দিয়েছে । পাইশি পুরাকীর্তির সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার সম্পর্কে ইয়ানথাইয়ে স্থানীয় ইতিহাস বিশেষজ্ঞ ওয়াং হুয়ান লি মনে করেন, প্রদর্শনী দ্রব্যের মধ্যে একটি ক্ষুদ্র হাড়ের নিডলের দাম সবচেয়ে বেশি ।
1 2
|