নববর্ষ ও চীনাদের ঐতিহ্যিক বসন্ত উত্সব অথার্ত চীনা পঞ্জিকার নববর্ষের সময় আনন্দময় ও হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্র উপভোগ করা চীনাদের একটি রেওয়াজ। প্রতি বছর চলচ্চিত্রাঙ্গনের কর্মীরা এসব চলচ্চিত্র তৈরী করে থাকেন । এ ধরনের চলচ্চিত্রকে নববর্ষ উদযাপনী চলচ্চিত্রও বলা হয় । এ বছর নববর্ষ উদযাপনী চলচ্চিত্রের সংখ্যা এবং বিষয়বস্তুর বৈচিত্র অনেক বেশি । নববর্ষ উদযাপনী চলচ্চিত্রের নামটি এসেছে হংকং থেকে । এ সব চলচ্চিত্রের মধ্যে কুংফু নির্ভর ও মিলনান্তক ছবি বেশি । ছবিগুলোতে তারকা অভিনেতা-অভিনেত্রীরাই বেশি অভিনয় করেন । নববর্ষের ছুটিতে চীনারা প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে ছবি দেখতে পছন্দ করেন।

দশ বছর আগে চীনের মূলভূভাগ নববর্ষ উদযাপনী চলচ্চিত্র তৈরী করতে শুরু করে । ১৯৯৭ সালে পরিচালক ফোং সিয়াও কানের পরিচালিত ' চিয়া ফান ই ফান 'হল মূলভূভাগের প্রথম নববর্ষ উদযাপনী চলচ্চিত্র । তার পরিচালিত অন্যান্য নববর্ষ উদযাপনী চলচ্চিত্রের মধ্যে আরো আছে ' তা উয়ান ' , ' সৌ চি ' , ' থিয়েন সিয়া উ চেই ' । তবে এ বছর পরিচালক ফোং সিয়াও কান নববর্ষ উপলক্ষে একটি ভিন্ন ধরনের বিষয়বস্তু নিয়ে চলচ্চিত্র তৈরী করেছেন। এ চলচ্চিত্র কোনো কমেডি ছবি নয় , এর নাম হল ' চি চিয়ে হাও ' । এ চলচ্চিত্রে গত শতাব্দীর চল্লিশের দশকের একটি যুদ্ধের কাহিনী বণর্না করা হয়েছে । সেনাবাহিনীর একটি কোম্পানি নেতা কু চি তি ও তার সৈন্যরা একটি খন্ডযুদ্ধে অংশ নেন । রেজিমেন্ট নেতা কো চি তিকে বলেছেন , সমবেত হওয়ার সিঙ্গা ধ্বনি শোনার সঙ্গে সঙ্গে তার সৈন্যরা রণক্ষেত্র ত্যাগ করে । কিন্তু রণক্ষেত্রে তার সহযোদ্ধারা একের পর এক শত্রু র হামলায় নিহত হয় , গোটা কোম্পানিতে একমাত্র কু চিতি একা বেঁচে রইলেন । এ খন্ড যুদ্ধের পর কোম্পানি নেতা কু চিতির মনে প্রশ্ন জাগল ,রেজিমেন্ট নেতার আদেশে সমবেত সিঙ্গা বাজানো হয়েছে কিনা ? তিনি নিহত সহযোদ্ধাদের জন্য এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজের বের করার জন্য সংকল্প করলেন । এ চলচ্চিত্র সাধারণ যুদ্ধের চলচ্চিত্র নয়। এটা যুদ্ধে সাধারণ সৈন্যের ভাগ্য বিপর্যয়ের ওপর নির্মিত ছবি । এ চলচ্চিত্রে যুদ্ধের নিষ্ঠুরতা চিত্রায়নের মাধ্যমে মানুষের মযার্দা রক্ষার দৃঢ সংকল্প প্রতিফলিত হয়েছে । পেইচিং চলচ্চিত্র ইন্সটিটিউটের প্রফেসর ছেন সান বলেন , পরিচালক ফোং সিয়াও কান সৃজনশীলতার সঙ্গে এক আধুনিক যুগের যুদ্ধ নিয়ে ছবিটি তৈরী করেছেন ।। এ ছবির প্রথমার্ধের চলচ্চিত্রায়ন হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। এতে রণক্ষেত্রে যুদ্ধের নির্মমতা পরিপূর্ণভাবে ফুটে উঠেছে । ছবিতে রণক্ষেত্রের দৃশ্য চিত্রায়নে অনেক উচু মানের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে । ছায়াছবির দ্বিতীয়ার্থে সাধারণ সৈনিকের নিয়তি অন্বেষণের জন্য কোম্পানি নেতার মানসিক অবস্থার জীবন্ত প্রকাশ ঘটেছে । আমি মনে করি তিনি যুদ্ধ বিষয়ের একটি ভালো ছবি তৈরী করেছেন ।

1 2 3 4
|