v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-01-17 17:18:19    
থাওইউয়ান গ্রাম

cri

    ছেংতু শহর সম্পর্কে জানার পর আমরা এখন আপনাদেরকে ছেংতু শহরের লোংছিউয়ানই এলাকার থাওইউয়ান গ্রাম যার অর্থ পিছ ফুল কবিতার গ্রাম সেখানে নিয়ে যাবো । আপনারা এই মাত্র পাহাড়ের যে গান শুনছেন তার নাম হলো'লোংছুয়ান থেকে ছেংতু যায়' । গায়কের নাম চেং মিংফাং, তাঁর বয়স ৭২ বছর । তিনি ছেংতু লোংছুয়ানই এলাকার শানছুয়ান জেলার থাওইউয়ান গ্রামের কৃষক । ৭০ বছর আগে এক বসন্তকালে থাওইউয়ান গ্রামের কৃষক চিন সি থিয়েন পিছ ফল চাষ করা সকল কৃষকদের একত্রিত করে একটি কবিতা পাঠের আয়োজন করেন । তখন সবাই কমপক্ষে একটি বাক্যের হলেও কবিতা পড়ে ফসলের প্রতি নিজেদের আশাআকাঙ্খার মনোভাব প্রকাশ করে এবং গ্রামাঞ্চলের সুখী জীবনযাত্রার প্রশংসা করে । তখন থেকে কবিতা পাঠ করা এ গ্রামের কৃষকদের অবসর সময়ের একটি সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে ।

    এ গ্রামে যেতে চাইলে আপনাদের অবশ্যই লোংছুয়ান পাহাড়ে আরোহণ করতে হবে । কারণ , এ গ্রাম পাহাড়ের শীর্ষ দেশে অবস্থিত । বসন্তকালে গোটা পাহাড়  জুড়ে সুন্দর সুন্দর রঙয়ের পিছ ফুল দেখা যায় । দু'চোখ জুড়িয়ে যায় । থাও ইউয়ান গ্রামটি ও উচুঁ পাহাড়ের ওপর । এ গ্রামের পিছ ফুলগুলো একটু দরীতে ফোটে । ফুলগুলো একে একে পাহাড়ের নিচে পাহাড়ী ফুলের ওপর পড়ে যায় । আর তখন পাহাড়ী ফুলগুলো আরো আনন্দের বন্যায় দুলতে থাকে । পরে এ কারণেই গ্রামের নাম থাও ইউয়ান গ্রাম হয়েছে । চীনাভাষায় থাওইউয়ানের অর্থ হলো পিছ ফুলে জন্মস্থান । ছোট পাহাড়ী পথ অতিক্রম করার পর আপনারা গ্রামের কৃষকদের সুন্দর বাসভবন ও ঝক ঝকে আঙিনা দেখতে পাবেন। তাঁদের আঙিনা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন, দরজার চৌকাঠ এবং দোয়ালে নানা ধরনের কবিতা লিপিবদ্ধ রয়েছে । এদের মধ্যে দেশী -বিদেশী কবির বিখ্যাত কবি তার পাশাপাশি কৃষকদের কবিতাও রয়েছে ।

    আঙিনায় প্রবেশ করলে খুব সম্ভবত কবিতা পাঠ করা কৃষকদের সঙ্গে আপনাদের দেখা হবে । স্থানীয় কৃষকরা গর্বিত কন্ঠে বলেন, বৃদ্ধ এবং কয়েক বছর বয়সের শিশু সবাই কবিতা লেখা পছন্দ করেন । অবসর হলে তাঁরা একসাথে মিলে নিজেদের লেখা কবিতা পড়েন এবং পরস্পরের অভিজ্ঞতা ও ভাব বিনিময় করেন । তাদের কবিতার ভাষা সহজ ,সুন্দর ও অলংকরণ সমৃদ্ধ। বিভিন্ন অক্ষরের মধ্য দিয়ে কৃষকদের অভিজ্ঞতা ও বুদ্ধি মত্তা প্রতিফলিত হয়েছে । যদি আপনারা প্রথমবারের মতো তাদের কবিতা শোনেন, তাহলে গ্রামীন জীবনযাত্রার সহজ ও আন্তরিক তাকে নিবিড়ভাবে অনুভব করবেন । আপনাদের আনন্দ লাগবে।

     কৃষকরা বলেন, তাঁদের কবিতা পর্যটকদের কাছে অনেক জনপ্রিয় । এবং এ কারণে গ্রামে আসা পর্যটকদের সংখ্যাও অব্যাহতভাবে বাড়ছে । পিছ ফুল পড়ে যাওয়ার পর কেউ কেউ কবিতার জন্য এখানে আসেন । কবিতা সংস্কৃতির জন্য অনেক কবিতা পছন্দকারী পর্যটকদের আকর্ষণ করেছে । চীনের আধুনিক কবি শু থিং, মাং কে এবং লেই শু ইয়ান এ গ্রামে এসেছিলেন । পাহাড়ের কৃষকদের পরিবারে সবসময় নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়, স্থানীয় লোকেরা এসব অনুষ্ঠানকে 'পিছ ফুল জীবনযাত্রা' বলে থাকে । তাহলে কবিতা সংস্কৃতি কেন এখানে উত্তরাধিকারের মর্যাদা পেলো? এ গ্রামের প্রধান কৃষক কবি ওয়েই পিং আমাদেরকে সে সম্পর্কে বর্ণনা করে বলেছেন, যে কোনো অঞ্চলে কবিতা ভালভাবে উত্তরাধিকারের অধিকার পাবে তা হয়তো সম্ভব নয় । কিন্তু এখানে ভালভাবে উত্তরাধিকারের মর্যাদা পেয়েছে গুনগত কারণেই । পিছ ফুলের সঙ্গে দীর্ঘকাল ধরে কবিতার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে । প্রাচীনকালে চীনা জাতির সাধুভাষায় রচিত কবিতা পিছ ফুলের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং এখানকার অধিবাসীদের কবিতা পাঠের অভ্যেস রয়েছে । আমাদের গ্রাম শহরের কাছেই অবস্থিত। তাই গ্রামাঞ্চলের পর্যটন উন্নয়নের অনেক সুবিধা রয়েছে এবং পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন আমাদের কবিতা পাঠের বিষয়টিকে জোরদার করেছে ।


1 2