ডক্টর মুহম্মদ ইউনুস, যিনি ২০০৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী এবং বাংলাদেশের গ্রামীন ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান পদ্ধতিতে বাংলাদেশের অনেক দরিদ্র লোককে সাহায্য করার জন্য চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনগণের কাছে তিনি বিখ্যাত ও জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব । চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা বিভাগের কর্মী পাই খাই ইউয়ান এবং চিয়াং চিন ছেংয়ের চেষ্টায় ডক্টর ইউনুস ও গ্রামীন ব্যাংক প্রসঙ্গে নানা ধরনের তথ্য সংগ্রহ করার পর , তাঁরা ইউনুসের গল্প অনুযায়ী চীনাভাষায় 'দরিদ্র মানুষের বন্ধু'নামক একটি বই প্রকাশ করেছেন । চীনের আনহুই শিল্প ও সাহিত্য প্রকাশনা গ্রুপের উদ্যোগে ২০০৮ সালের ৯ জানুয়ারী পেইচিংয়ের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী কেন্দ্রে এ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠান সাড়ম্বরে অনুষ্ঠিত হয়েছে । আনহুই প্রকাশনা গ্রুপের প্রধান, চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমেদ , চীনের সমাজ ও বিজ্ঞান ইনস্টিডিউটের দারিদ্র বিমোচন গবেষণা কেন্দ্রের উপ-পরিচালক তু সিয়াওশানসহ চীনের দারিদ্র বিমোচন কেন্দ্রের কর্মকর্তা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ।

বইয়ের প্রধান লেখক পাই খাইইউয়ান চীনে বাংলাভাষার একজন বিশেষজ্ঞ হিসেবে আগের অনুষ্ঠানে আপনাদের সাথে তাকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে ছিলাম । কয়েক দশক বছরে তিনি বাংলাভাষা ভালবাসা এবং আরও বেশি চীনাদের বাংলাদেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার জন্য বাংলাদেশের বিখ্যাত কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং নজরুল ইসলামের অনেক কবিতা অনুবাদ করেছেন । ডক্টর মহাম্মদ ইউনুসের লেখাগুলো অনুবাদ করার উদ্দেশ্য চীনের দারিদ্র্য বিমোচন কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত।
১৯৯৩ সালে চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের দারিদ্র্য বিমোচন কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক গ্রুপ গ্রামীন ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য বাংলাদেশ গিয়েছিলেন ।তখন পাই খাইইউয়ান বাংলাদেশে বাংলাভাষার ওপর লেখাপড়া করেন । পর্যবেক্ষক গ্রুপ বাংলাভাষার অনুবাদকের প্রয়োজনের তাগিদে তিনি অনুবাদক হিসেবে গ্রুপের সঙ্গে গ্রামীন ব্যাংক পরিদর্শন করেন এবং প্রথমবারের মত ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে পরিচিত হন ।

(পাই থাই ইউয়ান)
ডক্টর ইউনুসের সঙ্গে পরিচিত হওয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি আমাদের পর্যবেক্ষক গ্রুপের সঙ্গে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের কুমিল্লা গিয়েছিলাম । ঢাকার গ্রামীন ব্যাংকের দপ্তরে আমি ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে দেখা করে ছিলাম । তখন তিনি সাধারণ কাপড় এবং সাধারণ জুতা পরিহিত ছিলেন, দেখতে ঠিক স্বাভাবিক মানুষের মত, আমি বিশ্বাস করতে পারি নি তিনি একজন ডক্টরেট ।তাঁর সঙ্গে কথাবার্তার পর আমার মনে হলো, তিনি দারিদ্র্য বিমোচন ক্ষেত্রের নতুন পদ্ধতি সৃষ্টি করতে পারবেন । অর্থনীতিবিদ হিসেবে তিনি দরিদ্র মানুষের জীবনযাপন উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালান এবং নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার সময় সাহসের বুদ্ধি নিয়ে তা মোকাবিলা করেন । এটাই তার গ্রামীন ব্যাংকের সাফল্যের মূল কারণ ।
1 2
|