বন্ধুরা, আপনারা শুনতে পাচ্ছেন শেননোংচিয়া এলাকায় বসবাস করা চীনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রানী সোনালী বাঁদরের কন্ঠ । শেননোংচিয়া এলাকার বন্য পশুপাখি ও উদ্ভিদের সংখ্যা অনেক বেশি । ৩০০০ বর্গকিলোমিটার আওতার মধ্যে নানা ধরনের পশু ও উদ্ভিদের সংখ্যা ৪৭০০টিরও বেশি এবং জাতীয় পর্যায়ের সংরক্ষিত প্রাণী রয়েছে ৬০টিরও বেশি ।
গত শতাব্দীর ৭০ -এর দশকে বনের প্রাচীন গাছগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে বন্য প্রাণীর জীবন হুমকি সম্মুখীন হয়ে পড়ে । প্রাকৃতিক পরিবেশের অবনতি চীনা সরকার ও বিশেষজ্ঞদের চিন্তিত করে তোলে। ২০০০ সালের মার্চ মাসে শেননোংচিয়া এলাকায় প্রাকৃতিক বনায়ন ও সংরক্ষণ প্রকল্প শুরু হয় ।এ অঞ্চলের গাছ কাটা এখন নিষিদ্ধ করা হয়েছে । ৭ বছর সংরক্ষণের পর এ অঞ্চলের বনায়নের হার ৮৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে এবং মূল অঞ্চলের বনায়নের হার ৯৬ শতাংশেরও বেশি হয়েছে । প্রাকৃতিক পরিবেশ উন্নত হওয়ার কারণে শেননোংচিয়ায় বন্য প্রাণীর বিচরণ এখন নির্ধিঘ্ন ও আরও আরামদায়ক হয়ে উঠেছে । বনাঞ্চলের বনরক্ষক চিয়াং লিং লিং কয়েক বছর ধরে শেননোংচিয়ার সংরক্ষণ কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, .২০০০ সালের পর বনায়ন সংরক্ষণ প্রকল্প চালু হওয়ার পর পাহাড়ের নানা অঞ্চলে সোনালী বাঁদর, লাল পেট মুরগী ও অনেক বন্য ছাগল দেখা যায় । পাহাড় আরও সবুজ এবং পানি আরও পরিস্কার হয়ে গেছে ।
শেননোংচিয়া আসার পর পর্যটকরা ভাল পরিবেশ ও স্থানীয় অধিবাসীদের প্রাকৃতিক কৃষি কাজের ধারা উপভোগ করতে পারেন । শেননোংচিয়া বনাঞ্চলের সরকারী কর্মকর্তা ছিয়ান ইউয়ান খুন বলেন, শেননোংচিয়ায় প্রকৃতির সংরক্ষণ কাজ ভালভাবে চালু করার পাশাপাশি পাহাড়ের সম্পদ ব্যবহার করে আমরা ওষুধ তৈরীর উদ্ভিদ এবং মধু সংগ্রহের কাজ করি । বর্তমানে আমাদের বনাঞ্চলের শ্রমিক পরিবারের আয় আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে ।
এ ধরনের উত্পাদন পদ্ধতি হচ্ছে শেননোংচিয়া অঞ্চলের প্রকৃতিগত কৃষি চাষ । এখানে ৮১টি প্রশাসনিক গ্রামের মধ্যে ৩৫টিই সুন্দর প্রাকৃতিক গ্রামে পরিণত হয়েছে । চাষাবাদ ও মত্স চাষ ছাড়াও এখানে বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন প্রাকৃতিক পর্যটন শিল্পও উন্নত হয়েছে ।
গোটা শেননোংচিয়া এলাকা সবুজ পাহাড়ের মধ্যে অবস্থিত । গ্রীষ্মকালে এখানে আসলেও অনেক আরাম ও ঠাণ্ডা আমেজ লাগবে । পাহাড়ের বাতাস হৃদয়ের অনেক আনন্দের সুর ছড়িয়ে দেবে । পর্যটকদের চোখে সকল সবুজ গাছ এবং নানা ধরনের পশুপাখির কন্ঠ ও পানির শব্দ স্বর্গীয় মনে হবে । সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বনাঞ্চলে ৪টি পর্যটন এলাকা নির্মিত হয়েছে এবং প্রতি বছর পর্যটকের সংখ্যা ৬ লাখেরও বেশি পার্সন টাইমস ।এর মধ্যে মুইউ মহকুমা নগরে পর্যটকের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি । অধিকাংশ স্থানীয় অধিবাসী পর্যটন ক্ষেত্রের চাকরি করেন । মুইউ মহকুমা নগরের শেননোংচিয়া পাহাড় হোটেলের পরিচালক লি শিখাই বলেন, শেননোংচিয়ায় প্রাকৃতিক পর্যটন শুরু হওয়ার পর, আমাদের অবস্থা আরও উন্নত হয়েছে । বিশেষ করে ১ মে সোনালী সপ্তাহে এবং গ্রীষ্মকালে পর্যটকের সংখ্যা অনেক বেড়ে যায় । এ কারণে আমি ঋণ নিয়ে এ ছোট হোটেলটি চালাচ্ছি। গত কয়েক বছরে আমাদের আয় ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেয়েছে ।
1 2
|