৫৯ বছর বয়স্ক ছাও নাই ছিয়েন হলেন চীনের শান সি প্রদেশের একজন পুলিশ। একই সঙ্গে তিনি একজন লেখকও। তার ৩০টিরও বেশি উপন্যাস জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং সুইডেনে বর্তমানে খুব জনপ্রিয়। নোবেল পুরষ্কার কমিটি'র সদস্য গোরান মামকভিস্ট মনে করেন চীনা লেখকের মধ্যে কয়েকজন নোবেল পুরষ্কার পেতে পারেন আর ছাও নাই ছিয়েন হলেন এদের মধ্যে একজন।
ছাও নাই ছিয়েনের জন্ম চীনের শান সি প্রদেশের ইং জেলার সিয়া মা ইয়ু গ্রামে। বিংশ শতাব্দীর ৬০ দশকে তিনি কয়লা খনিতে কাজ করেছেন। পরে পুলিশের কাজ করেন।
আমাদের সংবাদদাতা দেখতে পান যে, ছাও নেই ছিয়েন চীনের কৃষকদের প্রিয় সুতার জুতা পরেছেন। তিনি হাসি মুখে লোকের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি তার উপন্যাসের কৃষকদের মতো সরল এবং দয়ালু।
১৯৮৭ সালে ছাও নাই ছিয়েন উপন্যাস লিখতে শুরু করেন। তিনি বলেন তার লেখা শুরু হয়েছে তার একজন বন্ধুর সঙ্গে বাজি রাখার পর থেকে। তার বন্ধু বলেছেন তিনি উপন্যাস লিখতে পারেন না। তিনি প্রমাণ করার জন্য স্থানীয় পত্রিকার জন্য তার একটি লেখা পাঠিয়ে দিলেন। লেখাটি প্রকাশিতও হলো। তারপর তিনি পেইচিংয়ের কিছু ম্যাগাজিনের জন্য প্রবন্ধ লিখলেন। তখনকার একজন বিখ্যাত লেখক তার প্রবন্ধ পড়ে খুব মুগ্ধ হলেন। তার সাহায্যে ছাও নাই ছিয়েন আনুষ্ঠানিকভাবে উপন্যাস লেখা শুরু করেন।
তার প্রথম উপন্যাস তার নিজের এবং একজন বৌদ্ধের গল্প নিয়ে লেখেন। এই উপন্যাসের নাম হলো "ফো দা কু তু" অর্থাত বুদ্ধের একাকীত্ব। ৯ বছর থেকে ছাও নাই ছিয়েন ও তার পরিবারের সবাই একটি মন্দিরে থাকতেন। একজন বুড়ো বৌদ্ধ ভিক্ষু ছাও নাই ছিয়েনের বন্ধু হলেন। ছাও নাই ছিয়েন তার সঙ্গে আইগো খেলতেন ও বই পড়তেন। ছাও নাই ছিয়েন মনে করেন বুদ্ধের সঙ্গে তার এক অবচেতন সম্পর্ক রয়েছে। তিনি বলেন:
"৯ বছর বয়স থেকে আমি মন্দিরে থাকতাম। সেখানে প্রায় ৪০ বছর থেকেছি। মন্দিরে বৌদ্ধরা ছিল। আরো ছিল বুদ্ধোর মূর্তী। ওই উপন্যাস লেখার সময় আমার কোনো স্পষ্ট ধারণা ছিল না। তবু সেই গল্পগুলো বলতে চেয়েছি।"
ছাও নাই ছিয়েন বলেন সেই বুড়ো বৌদ্ধ ভিক্ষু তার খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। তিনি তাকে পড়িয়েছেন এবং বুদ্ধোর তত্ত্ব তাকে ব্যাখ্যা করে শুনিয়েছেন। ছাও নাই ছিয়েনের সঙ্গে কিছু ক্ষণ থাকলে তার জীবনের এই অভিজ্ঞতা জানা যাবে। কিছু ক্ষণ বসার পর তিনি বৌদ্ধের মতো জা-জিন করে বসে থাকেন।
এই অভিজ্ঞতা ছাও নাই ছিয়েনের চরিত্রের উপরেও গভীর প্রভাব ফেলেছে। নাম, খ্যাতি ও টাকার ব্যাপারে তার কোন শোক নেই। তিনি সহজ সরল জীবন পছন্দ করেন। সমালোচকরা তার বই নিয়ে কী কী বললো তা নিয়ে তার মাথা ব্যাথা নেই। কেউ যদি তার বই পছন্দ করে তিনি খুব খুশি। কিন্তু কেউ পছন্দ না করলেও তার লেখা তিনি চালিয়ে যাবেন।
1 2
|