ছিন শিহুয়াং সমাধিস্থল হল চীনের সম্রাটদের জন্য নির্মিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমাধিস্থল। এর কাঠামো অদ্ভূত এবং সমৃদ্ধ। ছিন শিহুয়াং এর সঙ্গে কবর-দেওয়া সৈনিক ও ঘোড়ার টেরাকোটা গুহার সুনাম ও ঐতিহ্য মিসরের পিরোমিডের মতো । একে বিশ্বের অষ্টম বিস্ময় বলে ধরা হয়। সাম্পতিক বছরগুলোতে ছিন শিহুয়াং সমাধির টেরাকোটা সৈনিক ও ঘোড়া চীন ও বিভিন্ন দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক যোগাযোগের দূতে পরিণত হয়েছে। এই টেরাকোটা সৈনিক ও ঘোড়া সংরক্ষণে পুরাকীর্তি কর্মীরা প্রচুর গবেষণা ও পরিশ্রম করেছেন। কোন পদ্ধতিতে তারা ছিন শিহুয়াং সমাধির টেরাকোটা সৈনিক ও ঘোড়া রক্ষা করেছেন?
১৯৭৪ সালের বসন্তকালে , স্থানীয় কৃষকরা কুয়া খনন করার সময় বিপুল পরিমাণের চীন মাটি তুলে আনেন। কৃষকরা বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেননি। তারা এ সব চীনামাটি ফেল দিতে চেয়েছিলেন। একজন পুরাকীর্তি সংরক্ষণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি চীনামাটিগুলো দেখে এর গুরুত্ব উপলদ্ধি করে। সঙ্গে সঙ্গে জেলার পুরাকীর্তি ব্যুরোর কর্মকর্তাদেরকে রিপোর্ট করলেন। এর পর শুরু হলো ছিন রাজবংশের সৈনিক ও ঘোড়ার মূর্তি উদ্ধারে খখন কাজ, যা বিশ্বব্যাপী আলোডন তোলে। উদ্ধার করা এ সব মূর্তির মধ্যে ৫০০টি সৈনিকের মূর্তি, ১৮টি হলো কাঠের গাড়ী এবং ১০০টি ঘোড়ার মূর্তি। এ সব সৈনিকের শারীরিক গঠন শক্তিশালী ও আকারে বড়। বিরাট, তাদের গড়পড়তা ১ দশমিক ৮ মিটারের কাছাকাছি। নানা ভঙ্গীতে তারা দাঁড়িয়ে আছে। এতে ছিং রাজবংশ আমলের ভাষ্কর্যশৈলী প্রতিফলিত হয়েছে। অধিকাংশ সৈনিক ও ঘোড়ার রঙ ধুসর। কোনো কোনোটার শরীরের রঙও স্পষ্ট।
ছিন শিহুয়াং সমাধির টেরাকোটা সৈনিক ও ঘোড়ার জাদুঘরের গবেষক চৌ থিয়ে আমাদেরকে বলেছেন যে, " ছিন শিহুয়াং সমাধির টেরাকোটা সৈনিক ও ঘোড়ার শরীরের রঙ খারাপ হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে: ২০০০ বছর আগে কবর দেয়ার পর, দীর্ঘকালীন প্রাকৃতিক দুর্যোগে সৈনিক ও ঘোড়ার শরীরের রঙ বিবন হয়ে গেছে।"
এই সমস্যা সমাধানে ছিন শিহুয়াং সমাধির টেরাকোটা সৈনিক ও ঘোড়ার জাদুঘরের কর্মকর্তারা একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা গ্রুপ গঠন করেছে। তারা অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষার পর রঙ লাগিয়ে টেরাকোটা রক্ষার পদ্ধতি প্রাথমিকভাবে রপ্ত করেছে। তাছাড়া, বৈজ্ঞানিক গবেষণা গ্রুপটি আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সংস্থা ও বিশেষজ্ঞের সঙ্গে এ বিষয় নিয়ে ব্যাপক আলোপ আলোচনাও করেছে।
1 2
|