v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-11-13 19:52:15    
চিত্রশিল্পী শি কুও লিয়াং

cri

 

    চিত্রশিল্পী শি কুও লিয়াং একজন বৌদ্ধ ধর্মাবলাম্বী। তিনি কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন।

    ৫১ বছর বয়স্ক শি কুও লিয়াং বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার আগে চীনের চারুকলা মহলে পোট্রিট পেইন্টিং-এ তার সুনাম রয়েছে। তিনি সাধারণ জীবনের ব্যক্তি জীবনের ছবি আঁকেন। কৃষক, সুচী শিল্পের নারী ও সাধারণ ব্যবসায়ী সবাইকে তার ছবিতে তিনি তুলে ধরেন।

    ছোটবেলা থেকেই শি কুও লিয়াং ছবি আঁকতে পছন্দ করতেন। বিংশ শতাব্দীর ৭০র দশকে তিনি চীনের বিখ্যাত শিল্পী চৌ সি ছুং ও হুয়াং চৌর কাছ থেকে চীনের ঐতিহ্যিক ছবি আঁকার পদ্ধতি সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করেন। পশ্চিমা দেশের তেলচিত্র আর চীনের ঐতিহ্যিক জলারঙ দুটি ভিন্ন প্রকৃতির। শি কুও লিয়াং'র এই দু'জন শিক্ষকের কাছ থেকে মানুষের পোট্রেট আঁকতে শিখেছেন। দু'জন শিক্ষকের কথা ভেবে শি কুও লিয়াং খুব মুগ্ধ। তিনি মনে করেন তাদের কাছ থেকে ছবি আঁকতে শিখতে পারে এটা সত্যিই একটা ভাগ্যের ব্যাপার। তিনি বলেন:

    "আমি মনে করি আমি খুব ভাগ্যবান। কারণ আমি এত ভাল একটি সময়ে ছবি আঁকা শিখেছি যে সব এই ক্ষেত্রে এখন অনেক অভিজ্ঞ ও জ্ঞানী শিল্পী রয়েছেন। তারা আমাকে শিখিয়েছেন। তাদের কাছ থেকে আমি ছবি আঁকার জন্য খুব ভাল ভিত্তি স্থাপন করেছি। তাই সবসময় মনে করি যে আমি খুব ভাগ্যবান।"

    শি কুও লিয়াং বলেন, ভাল শিক্ষক পাওয়ায় তার ছবি আঁকার মান দ্রুত উন্নত হয়েছে। বিংশ শতাব্দীর ৮০'র দশকে শি কুও লিয়াং চীনের সেন্ট্রল একাডেমি অব ফাইন আর্টের ঐতিহ্যিক চীনা শিল্পকলা বিভাগে নিজেকে উন্নীত করেছেন। এর মধ্যে তিনি কয়েক বার একক চিত্রকলা প্রদর্শনীর আয়োজন করেছেন। ৮০'র দশকের শেষ দিকে শি কুও লিয়াং কানাডায় পশ্চিমা তেলচ্চিত্রের রীতিনীতি সম্পর্কে শিখতে শুরু করেন। মাতৃভূমি থেকে দূরে থাকা শি কুও লিয়াংয়ের খুব একা একা লাগতো। মনের ভেতরে তার কিছু খুঁজে বের করার ইচ্ছা জাগ্রত। ১৯৯৫ সালে একটি দাতব্য প্রতষ্ঠানে শি কুও লিয়াং-এর সঙ্গে একজন বৌদ্ধ ভিক্ষুর দেখা হয়। ওই বৌদ্ধ ভিক্ষু বলেছে শি কুও লিয়াং'র মুখে বুদ্ধের ছাপ আছে। তখন থেকে শি কুও লিয়াং হঠাত বুঝেছেন যে তার মন কী চায়। তিনি বলেন:

    "তিনি আমার মনের কথা বলেছেন। এই কথা শুনে আমার দু'চো আশ্রুতে ভিজে যায়। সত্যি তখন বিদেশে থাকি খুব একা একা লাগে। বন্ধুও খুব কম। তাই বৌদ্ধ ধর্ম আমার মনের একটি শক্তি হয়ে দাঁড়ায়। আগে আমি বুদ্ধের জীবন খুব পছন্দ করতাম। এটা একটি সুযোগ।

    ১৯৯৫ সালে শি কুও লিয়াং আনুষ্ঠানিকভাবে বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষিত হয়েছেন। চীনের চারুকলা মহলে বৌদ্ধ ধর্মবলম্বী শিল্পীর সংখ্যা খুব কম নয়। তারা প্রধানত প্রাকৃতিক দৃশ্য বা বুদ্ধের মূর্তী নিয়ে ছবি এঁকে থাকেন। কিন্তু শি কুও লিয়াং তাদের চেয়ে কিছুটা ভিন্ন। শি কুও লিয়াংয়ের চিত্রকলার বিষয় জীবন ঘনিষ্ঠ। তিনি সাধারণ মানুষ ও তাদের জীবনযাত্রার উপরে দৃষ্টি রাখেন। বৌদ্ধের দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি একজন সাধারণ মানুষের জীবনকে যাচাই করেন। তিনি ছবির মাধ্যমে সত্য, দয়া ও সৌন্দয্য বোধের কথা প্রচার করেন। তিনি বলেন একজন বৌদ্ধ হলেও তিনি আশা করেন, সমাজ ও মানুষের জন্য কিছু করতে পারবেন। তিনি বলেন:

    "আমার বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার কারণ শুধু নিজেকে মুক্ত করা তা নয়। আমি নিজের মুক্তি পাওয়ার অভিজ্ঞতা অন্যকে জানাতে চাই। কারণ মানুষের জীবনে দুঃখই বেশি। তাদের দুঃখ থেকে মুক্ত করা আমার একরকম দায়িত্ব। যদি সত্য ও দয়ার কথা প্রচার করতে চাই তাহলে নিজেই আবার কিছু দায়ত্ব বহন করতেই হবে।"

    শি কুও লিয়াং বহু বার তিব্বতে গিয়ে ছবি এঁকেছেন। সেখানে বৌদ্ধ ধর্মের পরিবেশ আছে। তিব্বতের সংস্কৃতি ও মানুষ নিয়ে তিনি অনেক ছবি এঁকেছেন। তিনি বলেন অনেক বার দেখেছেন যে বৌদ্ধরা তাদের তীর্থ যাত্রার মাইলের পর মাইল তিন পদক্ষেপ পর নেমে তেঁটে হেঁটে লাসায় পৌঁছার অতি কষ্ঠে। এতে তিনি খুব মুগ্ধ। এ তীর্থ যাত্রার ওপর তার আঁকা একটি ছবি তার বাসায় রয়েছে। ছবিতে হাটারত মানুষের মুখে প্রশান্ত ও তৃপ্তি বোধের ছাপ রয়েছে।


1 2