লাসায় আসার পর হৃদয়ের ভেতর একটা সুখের অনুভূতি কাজ করে । তিব্বতের রাস্তায় হাতে প্রার্থনাচক্র নিয়ে মুখে বৌদ্ধ ধর্মের বাণী-উচ্চারণ করতে করতে হাটতে থাকা উপাসনাকারীরা নির্মল শান্তিময় পরিবেশের সৃষ্টি করে । লাসার অধিবাসীরা এ ধরনের হাঁটাকে উপাসনা বলে থাকে । লোকজন নিয়মিত গোল চক্রে ঘড়ির কাঁটার দিক অনুযায়ী হাঁটে । আসলে এ হাঁটা হল লাসার অধিবাসীদের জীবনযাত্রা ও বৌদ্ধ ধর্মের এক অপুর্ব সম্মিলন। প্রথম দিকে প্রতি বছরের তিব্বত ইস্ত্রিখানায় ১৫ এপ্রিল অর্থাত্ বৌদ্ধ ধর্মের আদি পুরুষ শাক্যমুনির জন্মদিনে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা নানা ধরনের স্মরণীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে । হাজার বছরের উত্তরাধিকার হিসেবে এর উন্নয়নের মাধ্যমে বর্তমানে লাখ লাখ ধর্মাবলম্বী প্রতিদিন উপাসনার ভেতর নিজেদের নিমগ্ন করে দেন ।
লাসার উপাসনা সড়ক চক্র মোট তিনটি । প্রথম সড়ক চক্রের তিব্বতী ভাষার নাম হল নাংর্খোর। এর অর্থ হল অভ্যন্তরীণ গোল । এর দৈর্ঘ্য ৫০০ মিটার । আসল সড়ক চক্র হল তাচাও মন্দিরের প্রধান ভবনকে ঘিরে থাকা একটি গোল চক্র। দ্বিতীয় সড়ক চক্রের নাম বার্খোর ।এর অর্থ মাঝারি গোল । এর দৈর্ঘ্য ১০০০ মিটার । আসল চক্র তাচাও মন্দিরের বাইরে ঘিরে থাকা একটি গোল চক্র । তৃতীয় সড়ক চক্রের নাম লিনর্খোর অথবা বাইরের গোলচক্র । এর দৈর্ঘ্য ৫০০০ হাজার মিটার । আসল চক্র লাসার পুরনো শহর এলাকা ঘিরে একটি গোল চক্র । তিনটি সড়ক চক্রের মধ্যে তাচাও মন্দিরের সঙ্গে দু'টির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে । তা থেকে বোঝা যায় যে, তিব্বতের বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের মনে তাচাও মন্দিরের অবস্থান কত গুরুত্বপূর্ণ । তাহলে তাচাও মন্দির কেন বিশেষভাবে এতোটা পবিত্র । যার জন্য অনেক ধর্মাবলম্বী হাজার হাজার কিলোমিটার দূর থেকেও উপাসনা করে তাকে সামনে রেখে ?
1 2
|