ডিনার শেষে আমরা হেঁটে হেঁটে তাচাও মন্দিরের বাইরে এবং বার্খোর রাস্তায় বেড়াতে যাই । তাচাও মন্দিরের বাইরে তিব্বতের নানা জায়গা থেকে আসা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা মনোযোগ দিয়ে পুঁজা করে । তারা মনের ধর্মীয় প্রত্যয় বাস্তবায়ন করার জন্য হাঁটার সঙ্গে সঙ্গে পূজা করার মাধ্যমে নিজেদের বাড়ি থেকে তাচাও মন্দির আসে । সাধারণত এতে অর্ধ বছর সময় লাগে । আসার পথে তারা একটি ছোট কাঠের গাড়িতে নিজের কাপড়-চোপড় ও খাবার নেয় । সাধারণত দু বা তিন জন একসাথে বাড়ি থেকে তাচাও মন্দিরে যায় । শুনেছি তিব্বতীয় লোকজন মনে করে, যদি কেউ জীবনে একবার হেঁটে পূজার মাধ্যমে তাচাও মন্দিরে যায়, তাহলে তার সারা জীবন সুখী ,শান্ত এবং দীর্ঘায়ু হবে । বিশেষ করে তাচাও মন্দিরের বাইরে একটি বিশেষ ঘর রয়েছে । ঘরে সারা বছর মাখন বাতি জ্বালানো থাকে । তাচাও মন্দির দেখার পর আমরা বার্খোর রাস্তার বিভিন্ন দোকানে বেড়াতে যাই । লাসার বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা প্রতিদিন কমপক্ষে একবার বার্খোর রাস্তায় আসে । বার্খোর রাস্তা হল তাচাও মন্দিরের আকার অনুযায়ী নির্মিত একটি ঘোরালো রাস্তা । পুরনো লাসা শহরাঞ্চল বার্খোর রাস্তা এবং তাচাও মন্দির নিয়ে গঠিত । এখন বার্খোর রাস্তা লাসার রীতিনীতি রাস্তায় পরিণত হয়েছে । চীনের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে আসা ব্যবসায়ীরা বার্খোর রাস্তায় নিজদের দোকান নির্মাণ করে ।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা পর্যটকরা তাচাও মন্দির প্রদর্শন করার পর অবশ্যই বার্খোর রাস্তায় তিব্বতের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন মালা, চুড়ি ও ছুরিসহ বিভিন্ন পণ্যদ্রব্য কেনে । বার্খোর রাস্তার একটি বিখ্যাত মিষ্টি মাখন চা দোকান মাচিয়ামি এখন বিশ্বে বেশ জনপ্রিয় । আমরা বার্খোর রাস্তা থেকে অনেক তিব্বতের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন মালা ও চুড়ি কিনেছি । খুবই সুন্দর এবং দাম খুব বেশি নয় । আমাদের বন্ধুর লুওসোং'র একজন তিব্বতীয় জাতির বন্ধু বার্খোর রাস্তায় একটি দোকান আছে । তাঁর দোকান অনেক প্রাচীনকালের জিনিস পাওয়া যায় । আমরা তাঁর দোকানে অনেক সুন্দর ও পুরনো জিনিস দেখি । খুবই ভালো লাগে । কালকে লাসা থেকে লিনজি জেলায় যাবো। আজকে এখানে বিদায় নিই । 1 2
|