বাইজ্যু মন্দির দেখার পর আমরা তিব্বতের বিখ্যাত খাংবু ঝর্নায় যাই । শুনেছি এ ঝর্না গ্রন্থিবাত রোগীদের জন্য অনেক সহায়ক । প্রতিদিন এ ঝর্নায় গোসল করে এবং শরীরকে ঝর্নায় ডুবিয়ে রাখলে, ২০ দিনের মধ্যে গ্রন্থিবাত রোগ ভালো হয়ে যায়। তিব্বতের অনেক পশুপালক গ্রন্থিবাত রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে একটু বয়সী লোকের মধ্যে অনেকই গ্রন্থিবাত রোগে ভুগছেন । তারা গ্রন্থিবাত রোগ চিকিত্সা করার জন্য অনেক দূর দিক থেকে খাংবু ঝর্নায় এসে নিজেদের রোগ প্রতিরোধ করে থাকে । ফলে অনেক লোকই খাংবু ঝর্না থেকে ফিরে যাওয়ার সময় নিজের ক্র্যাচ ফেলে দেয়া । কারণ তখন ভালভাবে তারা হাঁটতে পারে । তাছাড়া এ ঝর্না পেট ব্যথার চিকিত্সার জন্যও সহায়ক । যাওয়ার পথে আমরা ভালা জেলায় অতিক্রম করি । এ জেলার দৃশ্য খুবই সুন্দর। পাহাড়ের নিচে অবস্থিত, রাস্তার দুই পাশে নানা রঙয়ের ফুল ফুটে রয়েছে । হলুদ, নীল, পিন্ক ও সাদা । দূরদুরান্তে দেখে নীল আকাশের নীচে এসব ফুল বাতাসের সঙ্গে দুলছে । খুবই সুন্দর । আমরা গাড়ি থামিয়ে ফুলের সঙ্গে অনেক ছবি তুলি । পাহাড়ের নিচের আবহাওয়াও সহজভাবে পরিবর্তন হয় । সুর্যালোকের দেখার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টিও পড়ে । আমাদের গাড়ি সুর্যের আলোর নিচে আসার সাথে সাথে বৃষ্টির সম্মুখীন হয় । অবশেষে বিকেলে ৫টায় খাংবু ঝর্না পৌঁছাই । দীর্ঘসময় গাড়িতে থাকার কারণে সবাই অনেক ক্লান্ত ।
দুঃখজনক একটি ঘটনা ঘটে, যদিও এখন আগস্ট মাস কিন্তু তিব্বতের তাপমাত্রা অন্য প্রদেশের গ্রীষ্মকালের তাপমাত্রার চেয়ে অনেক ঠাণ্ডা। ঠাণ্ডা লাগতে প্রতিরোধ করার কারণে আমাদের ঝর্নায় প্রবেশ করতে ভয় লাগে । ফলে আমরা সবাই সরাসরি ইয়াতুং জেলায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই । আমরা পুনরায় গাড়িতে উঠে করে ইয়াতুং যাওয়ার জন্য রওয়ানা হই । ইয়াতুং অঞ্চল হচ্ছে তিব্বতের সীমান্ত অঞ্চল । সেখানে যেতে প্রতিরক্ষা বিভাগের অনুমোদন লাগে । স্থানটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩০০০ মিটার উচুঁতে । এ কারণে ফুল ও গাছ রয়েছে অনেক । পাহাড়ের পথ খুবই বিপদজনক । আমাদের পাশে বিস্তীর্ণ নদী দেখতে পারি, গাড়ি চলার সময় সবাই উত্তেজনায় কাপতে থাকি । ২ ঘন্টা ধরে চলার পর সন্ধ্যা ৭টায় আমরা ইয়াতুং জেলায় পৌঁছি। এখন খুব ক্লান্ত । আজকের বিশ্রাম নেবো। বিছানায় শরীর এলিয়ে দিলাম । কখন যে ঘুমিয়েছি জানি না ।
1 2
|