১৭ আগস্ট আজকের আবহাওয়া বেশ ভালো, ভোরবেলায় বৃষ্টি থেমে গেছে । সুর্য উঠেছে । নাস্তা খাওয়ার পর আমরা থাশিলুনপো মন্দিরে যাই । আমাদের হোটেল থেকে থাশিলুনপো মন্দিরে যেতে গাড়িতে শুধু মাত্র ২০ মিনিট লাগে । লাসার পর্যটক সংখ্যার চেয়ে এখানে একটু কম । আজকে আশিলুনপো মন্দিরে আসার উদ্দেশ্য পানছেনলামার বৌদ্ধ ধর্মের গবেষণা স্থান প্রদর্শন করার পাশাপাশি মন্দিরের দায়িত্বশীল সন্ন্যাসীর সাক্ষাত্কার নেয়া । তাঁর নাম সালোংপিংলা । তিনি হচ্ছেন থাশিলুনপো মন্দিরের উর্ধতন সন্ন্যাসী । সিগাজে শহরের রাজনৈতিক পরামর্শ পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান এবং থাশিলুনপো মন্দির প্রশাসনিক কমিটির পরিচালক । কিন্তু তিনি ভালভাবে চীনা ভাষা বলতে পারেন না শুধু সিগাজে অঞ্চলের তিব্বতীয় ভাষা বলেন । এ কারণে আমাদের তিব্বতীয় জাতির অনুবাদক লুওসোংও ভালভাবে তাঁর কথা বুঝতে পারেন না । সিগাজে শহর সরকারের কর্মকর্তা নিমা প্রথমবারের মতো আমাদের জন্য সন্ন্যাসী সালোংপিংলার কথা অনুবাদ করেন । আমরা সন্ন্যাসীকে থাশিলুনপো মন্দিরের ইতিহাস , সংস্কৃতি এবং পর্যটনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের ওপর প্রশ্ন করি । বিশেষ করে পানছেনলামার বসবাস স্থান হিসেবে থাশিলুনপোর গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা নিয়ে অনেক প্রশ্ন করি । যদিও উনি শুধু অনুবাদক নিমার মাধ্যমে আমাদের প্রশ্ন বুঝান, কিন্তু তিনি খুব মনোযোগ দিয়ে আমাদের কথা শুনেন এবং ধৈর্যের সঙ্গে আমাদের সব প্রশ্নের উত্তর দেন । এক ঘন্টার সাক্ষাত্কার শেষে উর্ধতন সন্ন্যাসী আন্তরিকভাবে আমাদের সঙ্গে ছবি তুলেন এবং আমাদের বিদায় দেন ।
নীল আকাশ , সাদা মেঘ ও উজ্জ্বল সুর্যালোকে থাশিলুনপো মন্দির দেখতে অপুর্ব সুন্দর লাগে । পর্যটকরা নিজেদের ক্যামেরা এবং ভিডিওতে সুন্দর এই মন্দিরের অপরূপ দৃশ্যের ছবি তুলেন । আমরা অব্যাহতভাবে মন্দিরের বিভিন্ন বৌদ্ধ ধর্মীয় ঘর এবং সিঁড়ি পরিদর্শন করি । মাখন বাতি এবং ধুপকাঠির সুগন্ধ উপভোপ করে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা পর্যটকদের সঙ্গে মিশে নীল আকাশের নীচে মন্দিরকে দেখে মনের ভেতর এক অপার মুখ অনুভব করি । থাশিলুনপো মন্দির পানছেনলামার ধর্মীয় গবেষণার স্থান । এখানে নানা পর্যায়ের পানছেনলামার স্মৃতিময় প্যাগোডা রয়েছে । এসব প্যাগোডা নানা ধরনের মূল্যবান পাথর এবং স্বর্ণ দিয়ে নির্মিত । প্যাগোডায় পানছেনলামার মরদেহ এবং তাঁদের ব্যবহৃত সব বৌদ্ধ ধর্মীয় বই রয়েছে । মন্দিরের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ একটি ধর্মীয় মূর্তি হল মাইট্রেয়া নামক ভবিষ্যত দেবতা । এর উচ্চতা ২৬.২ মিটার । ১৯১৪ সালে তা ৮০০০ লিয়াং স্বর্ণ দিয়ে নির্মিত হয় এবং এ মূর্তি হল তিব্বতের সবচেয়ে বড় মূর্তি ।
1 2
|