"বাবা মাকে খোঁজার ২৭ বছর" নামে এক টেলিভিশন অনুষ্ঠান প্রচার হল । অনেক খবর এলো । সবাই সে সব খবর অনুযায়ী এবং সুন চিস্যুয়ের স্মুতিতে প্রাথমিক স্কুল ও হাসপাতালের জায়গায় গেলেন । কিন্তু কোনোটিও তার মনের সেই জায়গা নয় । পুলিশ বিভাগের মাধ্যমে তারা প্রমাণ করলেন , লিয়াওনিং প্রদেশ সুন চিস্যুয়ের বাড়ি নয় ।
২০০৬ সালের ২৭ মে লিয়াওনিং প্রাদেশিক টেলিভিশন কেন্দ্রের সংবাদদাতার সাহায্যে সুন চিস্যুয়ে স্বামী-স্ত্রী দুজন চিলিন প্রদেশের টেলিভিশন কেন্দ্রে আসেন । তাদের গল্প শুনে চিলিন টেলিভিশন কেন্দ্রের কর্মীরাও খুব মুগ্ধ হন । তারা এক বিশেষ অনুষ্ঠান তৈরী করেন । এই বিশেষ অনুষ্ঠান চিলি প্রদেশের পাইছেন শহরের এক পরিবারের দৃষ্টি আকর্ষণকরে । অনুষ্ঠানে সুন চিস্যুয়ে বলছিলেন, আমার বাবার নাম ছেন তুঙসিয়েন , মায়ের নাম মা সিউইং, বড়বোনের নাম সুন চিহোং । একথা শুনে পরিবারের কর্ত্রীস্থির কলেন যে , এটিই আমার নিখোঁজ ছোটো মেয়ে সুন চিস্যুয়ে । তিনি এক মিনিটও অপেক্ষা করতে পারলেন না , সঙ্গে সঙ্গে তিনি টেলিভিশন কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করলেন ।
২৭ বছর আগের ঘটনা মা সিউইংয়ের মনে ভেসে আসে । ৭ বছর বয়সী ছোটো মেয়ে তেল কিনতে যাওয়ার পর আর ফিরে আসেনি । পরিবারের সবাই তাকে অনেক খুঁজে বেড়িয়েছে । কিন্তু কোথাও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি । পরিবারের ওপরে যেন আকাশ ভেঙ্গেপড়ে ।২৭ বছর পার হয়ে গেলো । হঠাত টেলিভিশন ছোটো মেয়ের মতো এমন এক নারী বাবামাকে খুঁজছে দেখে পরিবারের সবাই একদিকে আনন্দিত হল, অন্যদিকে বিশ্বাস করতে পারছে না যে, এই মেয়েটিই সত্যি তাদের ছোটো মেয়ে ? ৪ বছর বয়সে তার ছোটো মেয়ের বাম পা সাইকেলে কেটে গিয়েছিল মা সিউইংয়ের কথা শুনে সুন চিস্যুয়ে কেঁদে কেঁদে উচ্চস্বরে বলল, মা, আপনিই আমার মা । ২০ বছর ধরে আপনার কথা সবসময় আমার মনে পড়ে , মা ।
২৭ বছর পর ২০০৬ সালের ৩১ মে সুন চিস্যুয়ে প্রথমবার বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করল ।এই সময় মা সিউইং ও পরিবারের সবাই রেলস্টেশনে ২৭ বছর পর নিখোঁজ ছোটো মেয়ের জন্য অপেক্ষায় রইল ।রেলগাড়িটি ধীরেধীরে স্টেশনে প্রবেশ করল । ২৭ বছরের অপেক্ষা, নিখোঁজ সুন চিস্যুয়ে অবশেষে মার কোলে ফিরে এলো । কত আনন্দ সবার মধ্যে । মেয়ে বারবার বলেন , মা আমাকে খুঁজে বের করতে সাহায্য করার জন্য লিয়াওনিং টেলিভিশন কেন্দ্রকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি । মাও বারবার বলেন যে , আমার মেয়ে খুঁজে বের করার জন্য চিলিন টেলিভিশন কেন্দ্রকে ধন্যবাদ জানাছি ।
এখন সু চিস্যুয়ে মাঝেমাঝে সময় করে চিলিন প্রদেশে গিয়ে আপন মা এবং সানতুং প্রদেশের চিনিং শহরে পালিত বাবামাকে দেখতে যান । বেশির সময় সানতুঙ প্রদেশের ওয়েই ফাং শহরে শ্বশুড়-শাশুড়ির বাড়িতে থাকেন । তিনি এবং তার পরিবার সবাই এখন সুখী জীবনযাপন করছেন ।
1 2
|