v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-06-21 19:43:18    
চীনের প্রথম জলময় নগর -- লুচি

cri

    চিয়াংসু প্রদেশ হচ্ছে চীনের বিখ্যাত জলময় অঞ্চল । এখানে অনেক প্রাচীন নগর আছে। এখন আমরা চীনের প্রথম জলময় নগর নামে সুপরিচিত "লুচি" নগরে যাবো। লুচি নগরের ইতিহাস প্রায় ২৫০০ বছরের।

    লুচি নগর চিয়াংসু প্রদেশের সুচৌ শহরে অবস্থিত। এর আয়তন কেবল ১ বর্গকিলোমিটারের একটু বড়। লুচি নগরের প্রতীক হচ্ছে একটি শিং-এর প্রাণী , এর নাম লুতুয়েন। কাহিনী অনুযায়ী, লুতুয়েনের দুটি বিশেষ স্বভাব রয়েছে। একটা হলো তার গতি অতি দ্রুত। আরেকটি হলো খুবই ঘ্রাণ-শক্তি প্রবণ। লুতুয়েন নানা ধরণের আঞ্চলিক ভাষা বুঝে । ফলে স্থানীয় লোকেরা লুতুয়েনকে শান্তিরক্ষী প্রাণী মনে করেন।

    পথনির্দেশক ওয়াং ইয়ে প্রাচীন নগর লুচি সম্পর্কে পরিচয় দিতে গিয়ে বলেছেন, "প্রাচীন নগর লুচি চীনের বসন্ত ও শরত্ এবং যুদ্ধমান যুগে প্রতিষ্ঠিত । এর ইতিহাস প্রায় ২৫০০ বছরের। প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা থেকে জানা গেছে, ৫৫০০ বছর আগে থেকেই এখানে লোকজন ছিল। প্রাচীন নগরে এখনো একটি নদীর দু'পাশে রাস্তা ও বাড়িঘর থাকার বৈশিষ্ট্য রয়ে গেছে। বাড়িঘরগুলোর সামনের ঘরটি দোকান এবং পিছনের ঘরটি বা দু'তলার ঘর হচ্ছে থাকার জায়গা।"

    লুচি নগরের প্রাচীন রাস্তায় বা গলির ভেতর দিয়ে হেঁটে গেলে প্রায়শই চোখে পড়ে প্রাচীনকালের দৃশ্য। এখন লুচি নগরে নয়টি প্রধান রাস্তা আছে। এখানকার অধিকাংশ স্থাপত্য তিন চার শ বছর আগের মিং ও ছিং রাজবংশের সময় নির্মিত। রাস্তাগুলোর সবই নূড়ি বা গ্র্যানাইট পাথর দিয়ে তৈরি। রাস্তাগুলো নদীর পাশে নির্মাণের ফলে অধিবাসীরা এখন জলপথেও বাইরে যাতায়াত করতে পারেন।

    রাস্তার দু'পাশে অনেক দোকান-পাট আছে, পর্যটকদের আসা-যাওয়ার ফলে এসব দোকানে ভীড় লেগেই থাকে। উল্লেখ্য যে, রাস্তার দু'পাশের দোকানগুলো অথবা নদীর পাশে দাঁড়ানো অধিবাসীদের বাড়িঘরগুলোর সবই কালো রংয়ের টালি ও সাদা রংয়ের দেয়াল এবং কাঠ দিয়ে তৈরি দরজা ও জানালা রয়েছে। অনেক দেয়ালে সুন্দর সুন্দর ভাস্কর্য আছে।

    লুচি নগরে জলপথ প্রচুর। নদী ও সেতুর সংখ্যা বেশি। লুচির জলপথের দৈর্ঘ্য প্রায় পাঁচ বা ছয় কিলোমিটার। একটি সেতুর পর আরেকটি সেতু। একটি নদীর সঙ্গে আরেকটি নদীর সংযোগ। শিয়ামেন থেকে আসা পর্যটক ম্যাডাম লিউ লি মেই দ্বিতীয়বার লুচি নগরে এসেছেন। তিনি বলেছেন, "এই প্রাচীন নগরের সংস্কৃতি সমৃদ্ধ। এর পাশাপাশি তার জলময় অঞ্চলের বৈশিষ্ট্যও রয়েছে। পর্যটকরা এখানে আসলে জাহাজ করে ঘুরতে পারেন। বিশেষ কাপড় পড়া মাঝি আপনার জন্য জাহাজ চালিয়ে আঞ্চলিক গান গাইবে। খুব মজা।"

    লুচি দক্ষিণ চীনের সেতুর রাজধানী নামে সুপরিচিত। এক বর্গকিলোমিটার প্রাচীন নগরে বিভিন্ন রাজবংশের ৭২টি পাথরের তৈরী সেতু রয়েছে। অনেক পর্যটক বলেন, লুচি নগর ভ্রমণ করা মানে একটি প্রাচীন সেতু জাদুঘর পরিদর্শন করা।

    লুচি প্রাচীন নগরের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে প্রাচীন গাছ। এখন লুচি নগরে সাতটি প্রাচীন ফার্ণ গাছ আছে। এর মধ্যে বৃহত্তম গাছের বয়স ১৫০০ বছর। এই ফার্ণ গাছের উচ্চতা ৫০ মিটার। তিন জন সুঠাম দেহি পুরুষ দু হাত দিয়ে জড়িয়েও পুরো গাছকে পরিবেষ্টন করতে পারবে না।

    পথনির্দেশক ওয়াং ইয়েন জানিয়েছেন, লুচি নগরের পশ্চিম রাস্তায় অবস্থিত বাওশেং মন্দির ৫০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। তার ইতিহাস ১৫০০ বছরের। বর্তমান মন্দিরটি পুননির্মিত হয়েছে। মন্দিরে সংরক্ষিত রয়েছে চীনের থাং রাজবংশের পাথরের ভাস্কর্য ও মিং রাজবংশের স্থাপত্যসহ বিভিন্ন ধরণের পুরাকীর্তি। তবে মন্দিরের সবচেয়ে মূল্যাবান পুরাকীর্তি হচ্ছে দেয়ালে খোদাই করা দেবতাগুলো।

1 2