প্রথম নাটক রচনার সার্থকতায় সুনাম সেরিংয়ের প্রত্যয় ও আগ্রহ ব্যাপকভাবে উদ্বুদ্ধ হয় । এর পর তার জীবন ও শিল্পকলা অনুশীলনের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হওয়ার পাশাপাশি তিনি একটানা তিব্বতের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন বহু নাটক রচনা করেছেন । এর মধ্যে স্বচ্ছলতা নামে তিব্বতী কৌতুকপূর্ণ সংলাপ খুব জনপ্রিয় হয়েছে। এতে সংস্কার ও উন্মুক্ততা প্রবর্তনে তিব্বতের কৃষকদের স্বচ্ছলতা তুলে ধরা হয়েছে । এই অনুষ্ঠান দেখার জন্য বহু দর্শক দূর থেকে লাসায় এসেছেন । এই অনুষ্ঠান দেখার অভিজ্ঞতা বিনিময় করার জন্য তারা শিল্পীদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছেন । এই অনুষ্ঠানের অন্যতম অভিনেতা তুবদাইন বলেছেন ,
এই কৌতুকপূর্ণ সংলাপ বারংবার মঞ্চস্থ করা হয়েছে । সুনাম সেরিংয়ের নাটক তার জীবনের প্রচুর অভিজ্ঞতা ও জনসাধারণের পছন্দের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ । এটা অভিনেতা-অভিনেত্রী এবং দর্শকদের মনে গভীর রেখাপাত করেছে ।
গত ২০ বছরেরও বেশি বছর ধরে সুনাম সেরিং মোট ৫০টিরও বেশি তিব্বতী ভাষায় নাটক ও কৌতুকপূর্ণ সংলাপ রচনা করেছেন । এর মধ্যে ৯০ শতাংশ মঞ্চস্থ করা হয়েছে । তার রচিত তিব্বতী ভাষার সংগীত জনসাধারণের মধ্যে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ।
গত শতাব্দির নব্বইয়ের দশকের প্রথম দিকে তিব্বতী জাতির প্রাচীন শিল্পকলা সংরক্ষণ করার জন্য তিব্বতের সংশ্লিষ্ট বিভাগ তিব্বতের লোক শিল্পকলা বিষয়ক বিপুল সংখ্যক বই ও অডিও-ভিডিও দ্রব্য প্রকাশ করেছে ।
তিব্বতের প্রাচীন অপেরা ও শিল্পকলা গবেষণা করার জন্য গত ১৫ বছরে সুনাম সেরিং তিব্বতের বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে দেখেছেন । তিনি লোক শিল্পকলার নানা রকম তথ্য সংগ্রহ করেছেন এবং বিপুল পরিমাণ বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া লোক অপেরা ও নাটক উদ্ধার করেছেন । তিব্বতী জাতির অপেরা ও শিল্পকলা উত্তরাধিকার সূত্রে গ্রহণ করার জন্য তিনি সম্পাদনের কাজে নিয়োজিত হন । তার সম্পাদনার কাজ তিব্বতী জাতির নৃত্য , বাদ্যযন্ত্র , নাটক ও তিব্বতী অপেরাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের সঙ্গে জড়িত ।
তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের জাতীয় শিল্পকলা গবেষণাগারের মহাপরিচালক কালসাং ছইকেই বলেছেন ,
তিব্বতের অপেরা ও নাটকের ইতিহাস কয়েক হাজার বছরের পুরনো । দুঃখের বিষয় এই ক্ষেত্রে কোন লিখিত তথ্য সংরক্ষিত হয় নি । তিব্বতের অপেরা ও নাটকের ব্যাপারে সুনাম সেরিং যে গ্রন্থ রচনা করেছেন , তার জন্য তিনি নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়েছেন । তিনি তিব্বতের জাতীয় শিল্পকলার উন্নয়নের জন্য আত্মনিয়োগ করেছেন ।
সুনাম সেরিং বলেছেন , তিব্বতের রাজা গেসারের জীবনী এ পর্যন্ত বিশ্বের দীর্ঘতম ঐতিহাসিক মহাকাব্য । এটা এমন একটা বিশ্বকোষ , যার মাধ্যমে তিব্বতী জাতির সমাজ ও ইতিহাস , রাজনীতি ও অর্থনীতি , আচার ব্যবহার এবং সংস্কৃতি ও শিল্পকলা তুলে ধরা হয়েছে । 1 2
|