ইরানের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ ২ জানুয়ারী বলেছেন, ইরান অব্যাহতভাবে পারমাণবিক পরিকল্পনার উন্নয়ন করবে এবং ইরানকে শাস্তি দেয়া সংক্রান্ত জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত অকার্যকর। একই দিন ইরান সরকারের মুখপাত্র বলেছেন, যদি পাশ্চাত্য দেশগুলো পারমাণবিক সমস্যায় নিরন্তরভাবে ইরানের ওপর চাপ দিতে থাকে, তাহলে ইরানের "পারমাণবিক অস্ত্র অবিস্তার চুক্তি" থেকে সরে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকবে। দশ দিন আগে নিরাপত্তা পরিষদে ১৭৩৭ নং সিদ্ধান্ত অনুমোদনের পর আহমাদিনেজাদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত মূল্যহীন কাগজের মতো। এবার ইরান "পারমাণবিক অস্ত্র অবিস্তার চুক্তি" থেকে সরে যাওয়ার কথা বলে যে হুমকি দিয়েছে, তা আগের চেয়ে আরো শক্ত ও বাস্তব বিষয়বস্তুর অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কিন্তু ইরান কেন তার পারমাণবিক সমস্যায় বার বার শক্ত অবস্থান দেখায়? এ সম্পর্কে পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, এর প্রধান কারণ হচ্ছেঃ
প্রথমতঃ শক্তি দেখানো হচ্ছে ইরানের আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগাযোগের এক রকম কৌশল এবং তার আলোচনার প্রয়োজন। ২০০৫ সালের অক্টোবরে আহমাদিনেজাদ ক্ষমতাসীন হওয়ার পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশেষ করে পাশ্চাত্য দেশগুলোর ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক সমস্যা নিয়ে বিবাদ তীব্রতর হয়েছে। ২০০৬ সালে ইরান পারমাণবিক সীলমোহর ছিঁড়ে ফেলে ইউরেনিয়ামের রূপান্তর অভিযান আবার শুরু করেছে এবং ঘনিভুত ইউরেনিয়াম উত্পাদনের কথা ঘোষণা করেছে। ইরান হেভি ওয়াটার রি-এ্যাক্টর বসিয়েছে, সেন্ট্রিফিউগ্যাল মেশিনের সংখ্যা বাড়িয়েছে, ধারাবাহিকভাবে তার পারমাণবিক কর্মসূচী সামনে এগিয়ে নিয়েছে। প্রতিবার যখন বৃটেন, ফ্রান্স, জার্মানী, যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়া এই ছয়টি দেশের সঙ্গে আলোচনার সন্ধিক্ষণে অথবা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রবল চাপ মোকাবেলায় ইরান কিছুটা সমঝোতার ইঙ্গিত দেয়, যাতে মনে হবে ইরান বর্তমান কর্মসূচীর ভিত্তিতে কিছুটা আপোষ করতে পারে। ইরানের এ কৌশল প্রয়োগের মূল কারণ হচ্ছে নিজেকে সময় ও সুযোগ অন্বেষণ করা। আসলে ইরান পারমাণবিক সমস্যায় কোন গুরুত্বপূর্ণ আপোষ করবে না।
1 2
|