v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-12-22 15:59:50    
বৃদ্ধকালের প্রেম

cri

    ২০০১ সালের ১৭ এপ্রিল ৭৪ বছর বয়সী হুয়াং ত্যইয়ু সুচৌগামী রেলগাড়িতে উঠে চুপেচুপে তাঁর গোপনীয় ভ্রমণ শুরু করেন । হুয়াং ত্যইয়ু যার সঙ্গে দেখা করতে চান তাঁর নাম উ ফোংচেন –তিনি একজন অপেশাদারী লেখিকা । লেখিকা উ এক বই লিখেছেন ,সাধারণ সময় তিনি যা দেখেছেন , শুনেছেন এবং প্রত্যক্ষভাবে অনুশীলন করেছেন তাঁর বইটিতে এসবই লিপিবদ্ধ রয়েছে । বইটি বুড়ো হুয়াং ত্যইয়ুর মন কেড়ে নেয় । তিনি চিন্তা করেন যে , যিনি সুক্ষ্ম চোখে দৈনন্দিন জীবন দর্শন করেন এবং লিপিবদ্ধ করেন তিনি কেমন মানুষ ? তাই তিনি অত্যন্ত আবেগের সঙ্গে লেখিকা উ ফোংচেনের সঙ্গে দেখা করার প্রতীক্ষায় আছেন ।

    রেলগাড়ী তাড়াতাড়ি সুচৌ শহরে পৌঁছে যায় । রেলস্টেশনের বাইরে হাতে ম্যাগাজিন ধরা এক ভদ্র মহিলা দাঁড়িয়ে আছেন । তিনি বুড়ো হুয়াংয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন । ভদ্র মহিলা দেখতে কিছু মোটা হলেও তিনিই তার অপেক্ষার লোক বলে বুড়ো হুয়াং মনে করেন ।

    সেই রাতে বুড়ো হুয়াং বুড়িমা উর বাড়ির কাছে এক হোটেলে থাকেন । সারা রাত তার ভাল ঘুম হয়নি । তিনি শুধু বুড়ি মা উ ও নিজের কথা ভেবেছেন । বুড়ো হুয়াং চিয়াংসু প্রদেশের হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত ক্যাডার । ছ'মাসের আগে তার স্ত্রী মারা যান । ভাল বন্ধুরা বুড়িমা উয়ের সঙ্গে তাঁর পরিচয়ে করিয়ে দেন । সদ্য স্ত্রী মাত্র মারা যাওয়া তিনি বুড়িমা উয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে তিনি রাজী হননি । কিন্তু তিনি বুড়িমা উর লেখা খুব পছন্দ করেন । তাই তিনি তাঁর সঙ্গে একবার দেখা এবং বন্ধুত্ব করতে চান । তিনি ভাবতে পারেনিন যে , বুড়িমা উ তাঁর মনে গভীর রেখাপাত করেছেন । সুতরাং তিনি সারা রাত ভাল করে ঘুমাতে পারেননি । এদিকে বুড়িমা উও ভালভাবে বিশ্রাম নেননি। ৬৮ বছর বয়সী বুড়িমা উর এক সুখী পরিবার ছিল । স্বামী সুচৌ শহরের এক প্রধান উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের উচ্চপদস্থ অধ্যাপক ছিলেন । স্বামীস্ত্রী দুজনের একমাত্র ছেলের বিয়ে হয়েছে এবং ভাল চাকরী পেয়েছে । কিন্তু তিন বছর আগে স্বামী হঠাত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান । যার ফলে তার শান্ত জীবনের পরিবর্তন হয় । যখন তিনি নিরাশ হচ্ছিলেন তখন তার প্রবীণ বন্ধুরা নানচিংয়ের বুড়ো হুয়াংয়ের সঙ্গে তার পরিচয় করিয়ে দেন ।

    দ্বিতীয় দিন কথাবার্তা বলার সময় বুড়ো হুয়াং বুড়িমা উকে জানান , স্ত্রী মরে যাওয়ার পর তার ছেলেমেয়েরা স্পষ্টভাবে তাকে বলেছিল যে , তারা ভালভাবে তাঁকে যত্ন নেবে এবং দেখাশোনা করবে । কিন্তু তিনি আবার বিয়ে করুক তারা চায় না । তাই ছেলেমেয়েরা তাঁর এবারের সুচৌ যাত্রা সম্পর্কে কিছুই জানে না অর্থাত তিনি গোপনে সুচৌ শহরে এসেছেন ।

    ৭৪ বছর বয়সী বুড়ো হুয়াং ও ৬৮ বছর বয়সী বুড়িমা উ ৫ মাস ধরে প্রেমালাপ করার পর বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন । বুড়ো হুয়াং মনে করেন , নিজের বিয়ের কথা ছেলেমেয়েদের জানাতে হবে । কিন্তু ছেলেমেয়েরা কি রাজী হবে ? তিনি সর্বপ্রথমে কথাটা বড় মেয়েকে বলে তার মতামত জেনে নিতে স্থির করেন । তিনি বড় মেয়েকে জানালেন ।

    খুশি না হলেও বাবাকে ভালবাসায় বড় মেয়ে মনে করে যে , শুধু নিজের পক্ষ থেকে ব্যাপারটা দেখলে হবে না বরং বাবার পক্ষ থেকে দেখতে হবে । বড় মেয়ের সমর্থন পেয়ে বুড়ো হুয়াং আস্থাবান হন । এক সুযোগে তিনি আবার কথাটা ছেলেকে বললেন । বাবার দৃঢ়তা দেখে ছেলে নিজের মতে আর অটল থাকে না । কিন্তু বুড়ো হুয়াং ভাবতে পারেন নি যে , মার বেশি আদরনীয় ছোট মেয়ে তাঁর ফোন পেয়ে কেঁদে উঠবে । সে বুড়ো হুয়াংকে বলল, মা'র মৃত্যু বেশি দিন হয়নি বলে সে বাবার আবার বিয়েতে রাজী না । যদি বাবা তার অনুভূতি উপেক্ষা করে বিয়ে করেন তাহলে বাবার সব কিছু সে দেখবে না ।

   

1  2