Web bengali.cri.cn   
বিশ্বের কাছে শান্তি ভালোবাসার বার্তা দিয়েছে চীন; যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রনীতি সমুন্নত হচ্ছে
  2015-09-11 19:27:20  cri

প্রিয় শ্রোতা আপনারা জানেন, 'চীনাদের জাপানি আগ্রাসনবিরোধী যুদ্ধ ও বিশ্ব ফ্যাসিবাদবিরোধী যুদ্ধ জয়ের ৭০তম বার্ষিকী' উপলক্ষে ৩ সেপ্টেম্বর পেইচিংয়ে এক স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এ সভায় গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দিয়েছেন। দক্ষিণ কোরিয়ার হোসেও বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বিষয়ক অধ্যাপক ছুন কা-লিম চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সাংবাদিককে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট সি'র ভাষণ বিশ্বের কাছে শান্তি ও ভালোবাসার বার্তা দিয়েছে। এ সময় চীনের আমন্ত্রণে প্রথমবারের মতো পেইচিং এসেছেন দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্ট পার্ক গেউন-হায়ে। এতে বোঝা যায়, চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার যে টানাপড়েন ছিল তা কিছুটা প্রশমিত হয়েছে। বিস্তারিত খবর জানতে, সিআরআই'র সংবাদদাতা ছেন মেংয়ের রিপোর্টটি শুনুন।

৩ সেপ্টেম্বর বিশ্বযুদ্ধের ৭০তম বার্ষিকীর স্মরণ সভায় চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের ভাষণ সম্পর্কে হোসেও বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ছুন কা-লিম বলেন, ইতিহাস স্মরণ এবং শান্তি প্রচারের পাশাপাশি চীনা বাহিনীর ৩ লাখ সেনা কমানোর ঘোষণা উল্লেখযোগ্য বিষয়। এতে বিশ্বের কাছে চীনের পক্ষ থেকে শান্তির বাণী প্রচারিত হয়েছে। ছুন কা-লিম বলেন, ভাষণে প্রেসিডেন্ট সি ইতিহাস স্মরণ ও সুন্দর ভবিষ্যত সৃষ্টির কথা বলেছেন। নতুন ভবিষ্যত্ অবশ্যই শান্তি ও উন্নয়নের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ঘোষণায় ৩ লাখ সেনা কমানোর কথা বলা হয়েছে। এটা এক দিক থেকে চীনের সামরিক ক্ষেত্রে আধুনিকায়নের সন্ধিক্ষণ, অন্যদিকে চীন সরকারের পক্ষ থেকে বিশ্ববাসীর কাছে পাঠানো শান্তি, উন্নয়ন ও ভালোবাসার বার্তা।

৩ সেপ্টেম্বর পেইচিংয়ের এ স্মরণ অনুষ্ঠানে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক গেউন-হায়ে অংশ নিয়েছেন। বিশ্বযুদ্ধ সংক্রান্ত চীনের আয়োজিত স্মরণসভায় যোগ দেওয়া প্রথম দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্ট তিনি। পেইচিংয়ের এ অনুষ্ঠানে যোগদান দক্ষিণ কোরিয়াবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ ও আলোচনার বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার জনগণের ধারণা ছিল, তাদের প্রেসিডেন্ট যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের সঙ্গে বন্ধুত্বের জন্য চীনের সঙ্গে সম্পর্ক এড়িয়ে চলবেন। কিন্তু চূড়ান্ত পর্যায়ে পার্ক গেউন-হায়ের আগমন কোরিয়ায় প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে নতুন ধারণার জন্ম দিয়েছে।

এ সম্পর্কে ছুন কা-লিম মনে করেন, দক্ষিণ কোরিয়া ও চীন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত দু'টো দেশ। তাই প্রেসিডেন্টের এ সিদ্ধান্ত 'স্নায়ুযুদ্ধের' সময়ের চিন্তা-চেতনাকে এড়িয়ে এশিয়ার এ অঞ্চলের শান্তি প্রতিষ্ঠাকে জোরালো করবে। ছুন কা-লিম বলেন, আগে দেশটির মতাদর্শ ও স্নায়ুযুদ্ধের সময়ের চিন্তা-চেতনার কারণে দক্ষিণ কোরিয়ার কোনো প্রেসিডেন্ট চীনের অনুষ্ঠানে অংশ নিতো না। কিন্তু এবার অনেক ভালো সুযোগ ছিল। কারণ, দক্ষিণ কোরিয়ার আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে। কিছু আন্তর্জাতিক ইস্যুতে চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার স্পষ্ট মতৈক্য হয়েছে। যেমন আঞ্চলিক শান্তি ও উন্নয়ন। চীনের উত্থাপিত 'দুই শতাব্দী', দক্ষিণ কোরিয়ার উত্থাপিত 'উত্তর-পূর্ব এশিয়ার শান্তি প্রক্রিয়া' ও 'কোরীয় উপদ্বীপের আস্থা প্রক্রিয়া'; এসব পদক্ষেপ আঞ্চলিক শান্তি ও উন্নয়নের ভিত্তি। সুতরাং, আমার মতে, এসব বিষয়ে চীনের সঙ্গে মতৈক্য প্রেসিডেন্ট পার্ক গেউন-হায়েকে এ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে সহযোগিতা করেছে।

এ ছাড়া ছুন কা-লিম বেশ জোর দিয়ে বলেন, বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়া আগের রাজনীতির অনুসরণ করে যুক্তরাষ্ট্র বা চীনকে পক্ষপাতের অভিযোগ প্রত্যাহার করে নতুন পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়নের চেষ্টা করছে। নিজ দেশের জন্য লাভজনক একটি মধ্যপন্থা নীতি বের করেছে দেশটি। ছুন কা-লিম বলেন, কোরীয় উপদ্বীপের শান্তি ও সংকট মোকাবিলার জন্য চীনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রকেও তাদের প্রয়োজন। এ অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়া একটি ভারসাম্যমূলক পথ খুঁজে বের করছে। দেশটি নিরাপত্তা ও অর্থনীতির ক্ষেত্রে পুরোপুরি যুক্তরাষ্ট্র ও চীন নির্ভরতা কাটাতে চায়। এটা দেশটির জন্য কল্যাণকর।

প্রেমা/তৌহিদ

মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040