Web bengali.cri.cn   
বিশ্বের ছোট ও সুন্দর দেশ
  2013-12-19 12:38:13  cri


সারা বিশ্বে অনেক ছোট ছোট দেশ আছে। সে দেশগুলোর সবগুলোই যে পৃথক এবং অখন্ড ভৌগোলিক সীমায় অবস্থিত তা নয়। কিছু কিছু ছোট দেশ আছে যে দেশগুলোর অবস্থান বড় দেশের ভৌগলিক সীমার মধ্যে। আসলে ছোট ছোট এই দেশগুলো বড় দেশগুলোর মধ্যে প্রাকৃতিক, সাংস্কৃতিক ভারসাম্য সৃষ্টি করছে। দেশ ছোট হলেও এ সব দেশে রয়েছে মনমাতানো আকর্ষনীয় প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পদ। শ্রোতা, আসুন, আজকের আসরে একসাথে ঘুরে আসি এমন কিছু ছোট সুন্দর দেশে।

প্রথমেই রয়েছে যে দেশ তার নাম সান মারিনো, স্বাধীন হয়েছে ১৫৯৯ সালে। পুরো দেশটির অবস্থান ইতালির ভৌগলিক সীমানার মধ্যে। এর আয়তন মাত্র ৬২ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা ৩০০০। এ দেশে রয়েছে বহু পাহাড় এবং মধ্য শতাব্দী ও রেনেসাঁ সময়ের ক্যাসল বা দূর্গ। প্রকৃতি এবং ঐতিহ্যের এই মহামিলন সত্যিই অভূতপূর্ব অনুভূতির সৃষ্টি করে। পর্যটকরা এখানে বেড়াতে খুব পছন্দ করেন। আপনি শুনে অবাক হবেন যে, গত বছর এই ছোট্ট সুন্দর দেশটিতে ২০ লাখেরও বেশি পর্যটক ভ্রমণ করেছিলেন।

লেসোথো রাজ্য যেটি দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে রয়েছে। এটি হচ্ছে বিশ্বের ছোট্ট দেশেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় দেশ, যেটি অন্য দেশের ভিতরে অবস্থান করছে। দেশটির অবস্থান সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৮০০ মিটার উপরে। সেজন্য দেশটি আকাশের রাজ্য হিসেবে খ্যাতি লাভ করে। শীত্কালে দেশটি বরফের চাদর মুড়িদিয়ে থাকে। এখানে আপনি হাইকিং, অশ্বারোহণ, স্কিইং করতে পারেন। আফ্রিকা মহাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে লেসোথো হচ্ছে একমাত্র অঞ্চল, যেখানে স্কিইং করা যায়।

লেসোথার একটি ঐতিহ্যবাহী ইতিহাস রয়েছে। গত ৬২০ শতাব্দির ৬০ দশকে লেসোথো স্বাধীন হয়। লোসোথা দক্ষিণ আফ্রিকার ভৌগলিক সীমানার মধ্যে থেকেও দক্ষিণ আফ্রিকার অন্তর্গত না হতে বা তার স্বাধীন অস্তিত্ব বিলীন না করতে বৃটেনের কাছে সহায়তা চেয়েছিল। এর ফলে বিগত শতাব্দি জুড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বব্যাপী বর্ণবাদের কালথাবা লেসোথোর ওপর কোনোই প্রভাব ফেলতে পারেনি।

ব্রুনেই

ব্রুনেই মালয়েশিয়ার পুর্ব উপকূলীয় অঞ্চলে অবস্থিত। সেখানে রয়েছে সমৃদ্ধ মত্স্য এবং শিপিং সম্পদ। এছাড়া দেশটিতে রয়েছে বিপুল তেল সম্পদ। গত ৬শ বছর ধরে ব্রুনেই একটি পরিবারের নেতৃত্বেই পরিচালিত হয়ে আসছিল। কিন্তু বর্তমানে ব্রুনেইয়ের রাজাপ্রাসাদ ও পার্লামেন্টের বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়েছে। কিন্তু পরিবারটি ৪ লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত দেশটিতে এখনও সবচেয়ে প্রভাবশালী।

ব্রুনেইয়ের তেল সম্পদ সমুদ্রের নিচে রয়েছে। সেজন্য দেশটির অনেক দ্বীপের উন্নয়ন করা হয়নি। প্রকৃতি বন-জঙ্গল, রঙিন ডুবো পাহাড়, সুন্দর নদনদী, আধুনিক স্থাপত্য এবং মালয়েশিয়া ও চীনা সংস্কৃতির সম্প্রীতির সহাবস্থান এ সবকিছু মিলিয়ে ব্রুনেই পরিণত হয়েছে এক ভিন্ন দৃশ্য ও গল্পের রাজ্যে।

লিচেনস্টাইন যেটি রয়েছে অস্ট্রিয়া ও সুইজারল্যান্ডের মাঝখানে। দেশটিতে জার্মান ভাষা ব্যবহৃত হয়। লিচেনস্টাইনও একটি সুন্দর পাহাড়ী দেশ। প্রতি বছর অনেক পর্যটক এখানে স্কিইং করতে যান। সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে দেশটির ব্যাপক অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক যোগাযোগ রয়েছে। সেজন্য দেশটিতে সুইস ফ্রান্ক মূদ্রার প্রচলন রয়েছে। দেশটির রাজধানীতে অনেক সুন্দর ও ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য এবং নামি দামি শপিং মল রয়েছে।

লিচেনস্টাইন ১০ম শতাব্দিতে প্রতিষ্ঠিত হয়। জনসংখ্যা ৩০০০০।

লুক্সেমবার্গ ইউরোপের আরেকটি ছোট দেশ। দেশটি ফ্রান্স, জার্মানি ও বেলজিয়ামের মাঝখানে রয়েছে। যেখানে আছে সুন্দর প্রাসাদ, দূর্গ আর গ্রাম। দেশটির রাজধানী লুক্সেমবার্গ সিটি। অধিকাংশ নাগরিক উপকণ্ঠে থাকেন। সুন্দর উপত্যকা আর রুপকথার মতো ক্লাসিক এবং মার্জিত দৃষ্টিনন্দন শহরের টানে তাই প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক ছুটে আসে এই ছোট্ট সুন্দর দেশটিতে।

সেখানে উন্নত ব্যাংকিং, প্রযুক্তি ও ইসপাত শিল্পের কারণে লুক্সেমবার্গ বর্তমানে ইউরোপের সবচেয়ে ধনী দেশের অন্যতম। বর্তমানে দেশটির জনসংখ্যা ৫ লাখ। আয়তন ২৫৯০০বর্গকিলোমিটার।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
লিঙ্ক