

1212ruby
|
চাপ বিষয়টিকে আপনি ঠিক পানির ট্যাপ থেকে পড়া পানি এভাবে ভাবতে পারেন। অর্থাত, পানি হচ্ছে চাপ আর আপনার শরীর হচ্ছে সেই পানি ধারণের 'গ্লাস' বা পাত্র। এক্ষেত্রে সঠিক পরিমাণে আহার, নিয়মিত ঘুম এবং শরীর চর্চার অভ্যাস এগুলোই আপনার শরীর নামক 'গ্লাসটিতে' পানি বা চাপ ধারণ ক্ষমতা বাড়িয়ে দিতে পারে।
প্রাত্যহিক জীবনে আমাদেরকে ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতিতে ভিন্ন ভিন্ন আচরণ বা অন্যভাবে বলতে পারেন ভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করতে হয়। যেমন, অফিসের উর্ধতন বা অধঃস্তন কর্মকতা, দায়িত্বশীল ব্যক্তি, পরিবারে সন্তানের বাবা মা স্বামী বা স্ত্রী, পিতামাতার সন্তান প্রভৃতি নানা চরিত্রে আমাদের দায়িত্বের সাথে কাজ করে যেতে হয়। কখনো কখনো এত এত দায়িত্ব আর কাজ আমাদের শরীর আর মনকে ক্লান্ত করে দেয়। সেজন্য প্রতিদিন আপনাকে কর্মক্ষেত্রের দায়িত্ব শেষ করে বাসায় ফিরে পুনরায় পরিবারের প্রধানের বা দায়িত্বশীল ব্যক্তির চরিত্রে কাজ করে যেতে হয়। এটা আপনি করেন এজন্য, যাতে বাইরের সকল চাপ মোকাবিলা করা পর অন্তত যেন পরিবারের উষ্ণতা পর্যাপ্তভাবে উপভোগ করতে পারেন।
যখন আপনার ওপর অনেক বেশি চাপ সৃষ্টি হয়, তখন একজন নিঃস্বার্থ বন্ধুর সহায়তা নিতে পারেন, যাকে আপনার সকল চাপের কথা খুলে বলতে পারেন। এমন বন্ধু খুঁজে নিন যার ধৈর্য শক্তি বেশি এবং মন দিয়ে আপনার কথা শুনবে। অবশ্য এক্ষেত্রে আপনাকেও শান্তভাবে সব কিছু খুলে বলার ধৈর্য দেখাতে হবে, তাকে যথাযথ সম্মান ও গুরুত্ব প্রদান করতে হবে, যাতে এই সম্পর্কের ধারা দীর্ঘদিন বজায় রাখা যায়।
যখন অনেক বেশি মানসিক চাপের মধ্যে থাকবেন তখন মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণ করা বা স্বাভাবিক চিন্তা করা কঠিন হয়ে পড়ে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে অফিসের টেবিলে মুড ভালো করার প্রেসক্রিপশন স্বরূপ একটি মানসিক এইড কিড প্রস্তুত করে রাখতে পারেন। যেমন, ভালো বন্ধু'র সঙ্গে আড্ডা দেওয়া, কাউকে ফুল উপহার দেওয়া ইত্যাদি।
অত্যধিক চাপ সহ্য করতে না পারলে আপনি নিজের মনোযোগকে হৃদস্পন্দন, শ্বাস-নিশ্বাস ও হাতের তাপমাত্রার দিকে কেন্দ্রভূত করতে পারেন। এ সময় শরীরে বিভিন্ন মুভমেন্ট যেমন পালস, হার্টবিট শ্বাসপ্রশাসের শব্দ ইত্যাদি শুনে আপনার দুশ্চিন্তা দূর হয়ে যেতে পারে।
আপনি যদি রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম না হন, তাহলে মার্কিন মনস্তত্ববিদ Beck এর "জ্ঞান থেরাপি" প্রয়োগ করে দেখতে পারেন। নিজেকে তিনটি প্রশ্ন জিজ্ঞাস করেন। এক: এভাবে চিন্তা করার বা রাগ করার কোন যুক্তি আছে কি? দুই: যদিও যুক্তি থাকেও তবুও অপর পক্ষের কোনো যুক্তি বিবেচনায় নেওয়ার সুযোগ আছে কি বা রাগ না করার মতো বিকল্প কোনো চিন্তা ছিল কি? তিন: বিষয়টি কতটা খারাপ হলো তা একবার চিন্তা করে দেখেছেন কি? এ ভাবে চিন্তা করলে আপনি ধীরে ধীরে বুঝতে পারবেন, যে কারণে আপনি রাগ করছেন, আসলে বিয়ষটি অত খারাপ ছিল না। আর তখনই আপনি পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে সুষ্ঠভাবে চিন্তা করতে পারবেন।
পারস্পরিক যোগাযোগে বা অন্যের সহায়তায় নিজেকে যুক্ত করার প্রতি মনযোগী হোন। যদি কোনো সহকর্মী আপনার কাছে সহায্য চায় তবে আপনি তাকে সঠিকভাবে সহায়তা করতে পারেন। যদি সে মুহূর্তে সহায়তা দিতে না পারেন, অন্তত তাকে কিছু কার্যকর প্রস্তাব দিতে পারেন। একসাথে মতবিনিময় করে সৌহার্দের সাথে কাজ করলে মানসিক চাপ অনেকাংশেই দূর হয়ে যেতে পারে।
পারস্পরিক যোগাযোগ বা সম্পর্ক ভাল থাকা বা না থাকার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত রুচি ও চিন্তার পার্থক্য একটি বড় কারণ। সেজন্য অন্যের রুচি আচার আচরণ বা চিন্তাধারা জানার চেষ্টা করুন। এটা সম্পর্কের বন্ধন মজবুত করতে সহায়তা করতে পারে।




