বিভিন্ন কারণে মহাস্থানগড় প্রত্নতাত্ত্বিক এবং ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রাচীন নগর পুণ্ড্রবর্ধন বা মহাস্থানগড় পর্যটকদের মুগ্ধ করে।
পুণ্ড্রনগরের খোঁজে
ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের পাশে বগুড়া শহর। বগুড়া শহর থেকে আরও ১২ কিলোমিটার উত্তরের পথ পেরিয়ে পাওয়া যাবে মহাস্থানবাজার। বাজারের পাশেই মহাস্থানগড়ের শুরু। হজরত শাহসুলতান বলখীর মাজারও এখানে। মহাস্থানগড় জুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে প্রাচীন আমলের অসংখ্য নিদর্শন। প্রায়ই খননকাজের সময় মাটির নিচ থেকে উঠে আসছে হাজার বছরের পুরোনো ইটের টুকরা বা পোড়ামাটির তৈজসপত্রের ভগ্নাংশ। পাওয়া যাচ্ছে দেবদেবীর মূর্তি বা মুদ্রা। সমতল ভূমি থেকে দুর্গের দেয়ালের উচ্চতা ১৫ থেকে ৪৫ ফুট। ৫ থেকে ১০ ফুট প্রশস্ত এই দুর্গের দেয়াল অনেকটা চীনের প্রাচীরের মতো।
কী দেখবেন
প্রাচীরঘেরা দুর্গের ভেতরে রয়েছে প্রত্নযুগের নানা নিদর্শন। মূল দুর্গের ১০০ গজ উত্তরে গোবিন্দ ভিটার সামনে রয়েছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের জাদুঘর। এ জাদুঘরে রয়েছে মহাস্থানগড়সহ এ অঞ্চলে পাওয়া প্রাচীন যুগের নানা নিদর্শন। দেখতে কাটতে হবে টিকিট। গড়ের পূর্বপ্রান্তে হজরত শাহ্ সুলতান বলখীর মাহী সওয়ারের মাজার। মাজারের পাদদেশে প্রাচীন মসজিদটি নির্মিত হয়েছে ১৭১৯ খ্রিষ্টাব্দে।
মূল দুর্গ থেকে চার কিলোমিটার দূরে আছে বেহুলার বাসরঘর। এ বাসরঘর নিয়ে প্রচলিত রয়েছে বেহুলা-লখিন্দরের কিংবদন্তি। মহাস্থান থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে আরেক প্রত্নযুগের নিদর্শন ভাসুবিহার।
কীভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে সড়ক ও ট্রেন উভয় পথে বগুড়া আসা যাবে। কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ট্রেনেও বগুড়া আসা যায়। 'রংপুর এক্সপ্রেস' ও 'লালমনি এক্সপ্রেস' নামের দুটি ট্রেনে আসতে পারেন। রংপুর-দিনাজপুরগামী বাসে সরাসরি মহাস্থানগড়ে নামা যায়। বগুড়ায় নামলে চারমাথা বাসটার্মিনাল ও শহরের হাড্ডিপট্টি বাসস্ট্যান্ড থেকে বাস পাবেন। ভাড়া লাগবে পাঁচ টাকা। শহরের দত্তবাড়ি থেকে সিএনজি অটোরিকশায় ১৫ টাকা ভাড়ায় পৌঁছানো যাবে মহাস্থানগড়ে।
কোথায় থাকবেন
মহাস্থানগড়ে রাতযাপনের ভালো কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই থাকার জন্য বেছে নিতে হবে বগুড়া শহরের কোনো মোটেল, হোটেল বা বাংলো। বাজেট বেশি থাকলে থাকতে পারেন চারতারকা হোটেল নাজ গার্ডেন-এ। এ ছাড়া বাজেট মধ্যম হলে পর্যটন মোটেল, রেডচিলিস, হোটেল সেফওয়ে, নর্থওয়ে, সিয়াস্তা, সেঞ্চুরি কিংবা আকবরিয়া হোটেলে।