Web bengali.cri.cn   
কিভাবে বিশ্বের সবচেয়ে ছোট চিকিত্সা-মাইক্রোস্কোপ দিয়ে ক্যান্সার রোগীদের জন্য কল্যাণ সৃষ্টি করছেন অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানী
  2013-10-11 15:20:22  cri

ক্যান্সার রোগীদের জন্য অস্ত্রোপচার হচ্ছে অপরিহার্য এক পদ্ধতি। কিন্তু অস্ত্রোপচারের প্রক্রিয়ায় অনেক সময় দেখা যায় ক্যান্সার কোষ পুরোপুরিভাবে কেটে বাদ না দেওয়া সম্ভব হয় না।

সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার একজন বিজ্ঞানী বিশ্বের সবচেয়ে ছোট হাতেধরা মাইক্রোস্কোপ তৈরি করেছেন। মাইক্রোস্কোপটি দেখতে একটি সুচের মতো। সুচের ভেতরে মাইক্রোস্কোপের আতস কাচ বা লেন্স স্থাপন করা। লেন্সের ব্যাস ০.৩ মিলিমিটারেরও কম। চিকিত্সক অস্ত্রোপচারের যে কোনো সময় এটা ব্যবহার করতে পারেন।

প্রথম দিকে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্তদের ওপর অস্ত্রোপচারে সাহায্য করার জন্য এ মাইক্রোস্কোপটি আবিস্কার করা হয়। কারণ এ ধরনের অস্ত্রোপচারে ক্যান্সার-কোষ সবসময় পুরোপুরিভাবে কেটে বাদ দেওয়া যায় না। অস্ত্রোপচারে এ ধরনের সুচ শল্যচিকিত্সকদেরকে আরো স্পষ্টভাবে ক্যান্সার-কোষ দেখতে সাহায্য করে। ওয়েস্ট অস্ট্রেলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহযোগী অধ্যাপক ব্যাখ্যা করে বলেন,

"আমাদের প্রত্যাশা, অস্ত্রোপচারে সকল ক্যান্সার-কোষ কেটে বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে এ গবেষণা শল্যচিকিত্সকদেরকে সাহায্য করবে। এটা আমাদের সত্যিকারের লক্ষ্য।"

একজন অস্ত্রচিকিত্সক বলেন, সুচ মাইক্রোস্কোপের ইমেজিং খুবই স্পষ্ট। তিনি বলেন,

"এই ধরনের মাইক্রোস্কোপে আমরা স্পষ্টভাবে দেখতে পাই ক্যান্সার-কোষ কোথায়। ঠিক আল্ট্রাসাউন্ড ছবির মতো স্পষ্ট। কিন্তু এটা শুধু মাইক্রোস্কোপ দেখা যাওয়ার পর্যায়ে।"

অস্ট্রেলিয়ায় প্রায় এক-চতুর্থাংশ স্তন-ক্যান্সার রোগীকে টিউমার কেটে বাদ দেওয়ার পর দ্বিতীয়বার শল্যচিকিত্সা নিতে হয়। ভার্জিনিয়া হচ্ছেন সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়া একজন স্তন-ক্যান্সার রোগী। তাঁর প্রত্যাশা নতুন ধরনের মাইক্রোস্কোপ এ ক্ষেত্রে তাঁকে সাহায্য করবে। তিনি বলেন,

"প্রতিদিন আমি চিন্তা করি, সে সব খুদে স্পট ছড়িয়ে পড়বে। এমন ভাবনা আমাকে বিচলিত করে। প্রতিটি দিন আমার জন্য খুবই টানাটানির। যদি এ ধরনের মাইক্রোস্কোপ পুনরায় ক্যান্সার আক্রমণের সম্ভাবনা দূর করে, তবে সেটা খুবই ভালো হবে।"

গবেষকরা বলছেন, ক্যান্সারের শল্যচিকিত্সায় ব্যবহার করা ছাড়াও এ ধরনের মাইক্রোস্কোপ মস্তিষ্ক ও ফুসফুস রোগের চিকিত্সায়ও ব্যবহার করা যায়। ওয়েস্ট অস্ট্রেলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক রবার্ট ম্যাকলাফলিন বলেন,  

"যদি এ ধরনের মাইক্রোস্কোপ ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি, এমফিসেমার মতো রোগ কিভাবে শরীরে হয়, তাহলে বিজ্ঞানীদেরকে আরো ভালো ওষুধ নিয়ে গবেষণা ও তৈরিতে সাহায্য করতে পারবো, যাতে এ ধরনের রোগের প্রতিকার করা যায়।"

বর্তমানে সুচ-মাইক্রোস্কোপ পরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছে। গবেষকরা বলেছেন, যদি ডাক্তারি পরীক্ষা সফল হয়, তাহলে ১০ বছরের মধ্যে এ মাইক্রোস্কোপ শল্যচিকিত্সায় বিশ্বজনীন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
লিঙ্ক