Web bengali.cri.cn   
রাস্তায় নামছে অস্ট্রেলিয়ার পরিবেশবান্ধব সৌরশক্তিচালিত গাড়ি
  2013-10-11 15:20:22  cri

সবাই জানেন যে, সৌরশক্তিচালিত গাড়ির দূষণ ও শব্দ কম। কিন্তু এ গাড়ির শক্তির উত্স অর্থাত্ সূর্যালোকের সময় সীমিত এবং এর বহনক্ষমতা কম হওয়াসহ বিভিন্ন কারণে দৈনন্দিন জীবনে এটা ব্যবহার করা যায় না। তবে সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ডিজাইন করা গাড়ি পরিবহণ ও কার্যকারিতা - উভয় দিক থেকে সৌরশক্তিচালিত গাড়ির দৈনন্দিন ব্যবহারের সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। এখন শুনুন এ সম্পর্কে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সংবাদদাতার পাঠানো বিস্তারিত প্রতিবেদন।

সৌরশক্তিচালিত গাড়িটি ৪ চাকার; এর আসন ২টি। গাড়ির শরীর লাইটওয়েট কার্বন ফাইবার দিয়ে তৈরি, যার বেশিরভাগ সৌর প্যানেলে ঢাকা। এ গাড়ি সূর্যের আলোয় ১০ ঘন্টা রাখলে সৌরশক্তির সাহায্যে ৫শ' কিলোমিটার চলতে পারে। এ গাড়িতে লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি থাকে, যেটা দ্রুত চার্জ হয়। প্রথম দিকে 'বিশ্ব সৌরশক্তিচালিত গাড়ি চ্যালেঞ্জ ম্যাচ'-এ অংশ নেওয়ার জন্য সৌরশক্তিচালিত গাড়িটি ডিজাইন করা হয়। কিন্তু গাড়িটির ইঞ্জিনিয়ারের প্রত্যাশা যে, এটির আরো বেশি ব্যবহারিক মূল্য হবে। যেমন এটি শহরের সড়কে চালানো যাবে। তিনি বলেন,

"চ্যালেঞ্জ ম্যাচের প্রথম দিকে আমাদের লক্ষ্য ছিল এমন একটি সৌরশক্তিচালিত গাড়ি তৈরি করা যেটি সবাই চালাতে পারবে। ছোট আকারের মহাকাশযানের মানের সৌরশক্তিচালিত গাড়ি হবে না। এতে একদিকে মালামাল রাখার জায়গা নেই এবং অন্যদিকে এর ব্যবহারের খরচও বেশি না।"

অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০জন ছাত্র অহোরাত্র প্রায় ১৫ মাস কাজ করে সৌরশক্তিচালিত গাড়িটির সৃজনশীল অংশের কাজ সম্পন্ন করেছেন। সম্প্রতি সিডনি স্পিডওয়েতে পরীক্ষা শেষ হয়েছে এটির। সকল অংশগ্রহণকারীর জন্য এটা ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। এ গাড়িনির্মাণ প্রকল্পে অংশগ্রহণকারী একজন ইঞ্জিনিয়ার তখনকার স্মৃতিচারণ করার সময় খুবই উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। তিনি বলেন,

"এই প্রথম বার আমরা গাড়ির নিজের শক্তি দিয়ে ইঞ্জিন চালু করলাম। গাড়ি চালু হওয়ার সময় আমরা সবাই খুবই উত্তেজিত ও খুবই আবেগপূর্ণ হয়ে উঠেছিলাম।"

যন্ত্রাংশ যাতে খুব বেশি গরম না হয় সেজন্য প্রথম দফা পরীক্ষা ছিল খুব ধীর গতির। মাত্র ১০ শতাংশ শক্তি ব্যবহার করে গতিরোধক ও স্টিয়ারিংসহ গাড়ির মৌলিক কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়। দ্বিতীয় দফায় গতি দ্রুততর করা হয়। কিন্তু গাড়ির কর্কশ উচ্চশব্দ বাড়ে না। সৌরশক্তিচালিত গাড়ির প্রকল্প ব্যবস্থাপক পরীক্ষার ফলাফলে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন,

"গাড়িটির গতিরোধক ব্যবস্থা খুব ভালো। স্টিয়ারিং হুইল দ্রুত কাজ করে। দেখতেও খারাপ না। এ পর্যন্ত সৌরশক্তিচালিত গাড়ির কার্যকারিতায় আমরা খুবই সন্তুষ্ট।"

কয়েক সপ্তাহ আগে সৌরশক্তিচালিত গাড়ির প্রধান কাজ ছিল বিশ্ব সৌরশক্তিচালিত গাড়ি চ্যালেঞ্জ ম্যাচে অংশ নেওয়া। কিন্তু প্রথম বারের পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার পর পরই তার নতুন লক্ষ্য নির্ধারিত হয়েছে। সেটা হচ্ছে সত্যিকারভাবে সড়কে চলা সৌরশক্তিচালিত গাড়িতে পরিণত হওয়া। প্রকল্প ব্যবস্থাপক বলেন, ম্যাচটা শেষ হবার পর গাড়ির হেডলাইট ও সাইড মোল্ডিংস লাগানো হবে, যাতে সেটি সড়কে চলাচলের উপযোগী হয়। তিনি বলেন,

"প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার আগে আমরা নিবন্ধন প্রক্রিয়া প্রায় শেষ করে ফেলেছি। প্রতিযোগিতায় ব্যবহৃত না হওয়া কিছু যন্ত্রাংশ ফেলে দিয়েছি আমরা। প্রতিযোগিতা শেষ হওয়ার পর এটিকে সড়কে চলাচলের উপযোগী করে তোলার জন্য আমরা আবার কিছু কাজ করবো।"

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
লিঙ্ক