Web bengali.cri.cn   
ব্রিটেনের রাজপ্রাসাদের নিরাপত্তারক্ষী ভুল করে রাজকুমারকে গ্রেফতার করেছে
  2013-09-16 18:29:03  cri



নিজ বাড়ির বাগানে বেড়াতে গিয়ে চোর হিসবে ধরা পড়া আর এ জন্য নানান বিড়ম্বনার মুখোমুখী হতে হবে এমন উদ্ভট ঘটনা কি কল্পনা করা যায় কখনো? ব্রিটেনে কিন্তু এমন ঘটনা ঘটেছে, হতভাগ্য এই বেচারা আর কেউ নয় স্বয়ং ব্রিটেনের রাজকুমার। কয়েক দিন আগে ব্রিটেনের রাজকুমার এ্যান্ড্রু সন্ধ্যা বেলা রাজপ্রাসাদের বাগানে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন, সেদিন তার প্রাত্যহিক কাজে এত এত ঝক্কি ঝামেলা ছিল, তাই মনে মনে ভাবলেন, প্রাদাসের ভিতরে অবস্থিত বাগানের গভীরে ছায়া শীতল কোন স্থানে গিয়ে কিছুক্ষণ প্রকৃতির মাঝে প্রকৃতির নির্মল ছায়া-বাতাস উপভোগ করে ক্লান্তি দূর করবেন। এই ভেবে হেলে দুলে আস্তে আস্তে হাটতে হাটতে তিনি বাগানের গহীনে একটি স্থানে চলে যান। হঠাত্ দু'ই দিক থেকে দু'জন পুলিশ তার দিকে এগিয়ে আসে। এ্যান্ড্রু প্রথমে ভেবেছিল এ দু'জন পুলিশ তাঁর নিরাপত্তার জন্যই তার আসে পাশে আছে। কিন্তু তাকে অবাক করে দিয়ে হঠাত্ পুলিশ দু'জন বন্দুক তাক করে উচ্চস্বরে চিত্কার করে রাজকুমারকে বলে: হ্যান্ডস্ আপ এন্ড গেট ডাউন অন দ্য ফ্লোর। কি আশ্চর্য বিষয়! তারা রাজকুমারকে চিনতে পারছে না, তাই না? আসলেই তাই তদন্তের পর জানা গেলো যে, রাজপ্রাসাদের এই দুই নিরাপত্তা পুলিশ মাত্র দু'দিন আগেই দু'জন পুরুষকে গ্রেফতার করেছে, যারা প্রাসাদের ভিতরে চুরি করতে ঢুকেছিল। কি সাহসী, তাই না? আর এই ঘটনার কারণে নিরাপত্তারক্ষীদের অতিরিক্ত সতর্ক হওয়া ফলেই ভুল করে রাজকুমারকেই চোর হিসেবে ধরে ফেলে এবং হাত উচিয়ে মাটিতে শুইয়ে রেখে তারপর গ্রেপ্তার করা হয়।

যদিও ঘটনাটি বেশ মজার তবুও এ থেকে একটি বিষয় সুস্পষ্ট হয় যে, রাজপ্রাসাদের নিরাপত্তারক্ষীরা বেশ পেশাদারিত্ব ও দক্ষতার সাথেই নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে প্রাসাদের ভিতরেই যাদের দায়িত্ব তারা কি করে রাজ পরিবারের সদস্যের চিনতে ভুল করতে পারে? এটা নিশ্চয়ই উচিত নয়। রাজপ্রাসাদে চোরের সাহসী অনুপ্রবেশের ঘটনা কিন্তু এই প্রথম নয়, ইতিহাসে ব্রিটেনের রাজপ্রাসাদে আরও একজন চোর ঢুকেছিল। সেই চোরের নাম ছিল মাইকেল ফাগা। সে একটি বড়সড় পানি নিস্কাশন পাইপের ভিতর দিয়ে রাণীর ব্যক্তিগত কক্ষে ঢুকেছিল, সে সময় রাণী ঘুমিয়ে ছিলেন। জেগে উঠার পর তিনি দেখেন যে অপরিচিত এক পুরুষ তার বিছানায় বসে আছে এবং হাতে একটি ভাঙা কাঁচের টুকরা, রক্ত তার হাত থেকে বিছানায় গড়িয়ে পড়ছে। রাণী এই দৃশ্য দেখে বেশ বিচক্ষনতার সাথেই পরিস্থিতি মোকাবেলা করলেন। সে আর দশজন মানুষের মতো চিত্কার চেচামেচি না করে বেশ ঠান্ডা মাথায় সেই ব্যক্তির সাথে আলাপ করতে শুরু করেন, প্রায় দশ মিনিট ধরেই তারা আলাপ করেন। এরপর নিরাপত্তা কর্মী এসে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

এ দুটি 'ঘটনা থেকে যে শিক্ষা নিতে পারি তা হলো, রাজপ্রাসাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থার আরও উন্নয়ন করা উচিত, ঠিক না?

এখন আমরা দ্বিতীয় গল্পটি বলতে চাই ।

১ পাউন্ড ব্যয়ের বিয়ে অনুষ্ঠান

ব্রিটেনে একটি দম্পতি বিয়ে করতে শুধু মাত্র ১ পাউন্ড ব্যয় করেছে, আর তাদের বিয়ে অনুষ্ঠানে রিং, ফূল, কেক, পেশাদার ফোটগ্রাফার, সব কিছুই ছিল!

আসলে পুরো বিয়ে অনুষ্ঠানে শুধু বধুর কাপড় কেনার জন্য খরচ হয়েছে, বধুর কাপড় একটি সেকেন্ডহ্যান্ড পণ্য বিনিময় ওয়েবসাইট থেকে ভাড়া করা হয়েছে আর তার দাম শুধু মাত্র এক পাউন্ড। বরের কাপড় হল অনেক বছর আগের পুরোনো কাপড়, বধুর মা এ অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন, তাই এর জন্য কোনো খরচ হয় নি। হরিণের শিং দিয়ে তৈরি একটি বিয়ের রিং পড়ানো হয় আঙ্গুলে।তুমি জানো হরিণের শিং-এর তৈরী এই রিং কোথায় পেয়েছে? বধু নিজের বাসার উঠানে কুড়িয়ে পেয়েছে। তাদের বিয়ে অনুষ্ঠানটি তাদের নিজ বাড়ির শস্য গুদামে অনুষ্ঠিত হয়েছে, তাই অবশ্যই এর জন্যও কোনো খরচ করতে হয় নি। আমরা জানি পাশ্চাত্য দেশের খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীর বিয়ে অনুষ্ঠানে সাধারণত যাজক এবং ফোটগ্রাফার থাকেন। কিন্তু এক্ষেত্রেও তাকে কোনো খরচ করতে হয়নি, বিয়ে অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া আত্মীয়স্বজন চার্চের জন্য চাঁদা দিয়েছে, তাই যাজকের ফি'র প্রয়োজন হয়নি। আর ফোটগ্রাফার হলেন নবদম্পতির বন্ধু, অবশ্যই তিনি তাদের বিয়ে অনুষ্ঠানের জন্য সাহায্য করবেন, তাই না? বিয়ের জন্য নিশ্চয়ই ভোজসভার আয়োজন করতে হয়। এক্ষেত্রেও নবদম্পতির খুব ভালো একটি আইডিয়ার কারণে খরচের হাত থেকে বেঁচে গেছে। তারা এটাকে ভোজসভা না বলে বনভোজন বলে সবাইকে দাওয়াত দিয়েছে। ফলে সব খাদ্য খাবার বিয়ে অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আসা অতিথি নিজেরাই নিয়ে এসেছেন। আর রাতে একটি সঙ্গীতানুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। বধুর বাবা হলেন একজন সঙ্গীত শিল্পী, তিনিই ছিলেন এ সঙ্গীতানুষ্ঠানের প্রধান শিল্পী। তাই সবমিলিয়ে এ পর্যন্ত এ বিয়ের অনুষ্ঠানের খরচের যে হিসেব তা যোগবিয়োগ করে দেখা যায়, সর্বমোট খরচের পরিমান শুধু মাত্র এক পাউন্ড।

এটা খুব ভালো একটি উদাহরণ, বিয়ে মানে ভালোবাসা, মানে দু'জনের একসাথে পথচলা, পরিবার এবং পরস্পরের সুখের নীড় তৈরী করা, মানে দায়িত্ব ও কর্তব্য একত্রে ভাগাভাগি করা। ফলে বিয়ে অনুষ্ঠানের জন্য এত বেশি টাকা ব্যয় করেই বা লাভ কি? তাই যে পদ্ধতি ভালোবাসা প্রকাশ করা যায়, সে পদ্ধতিতে বিয়ে করা উচিত।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
লিঙ্ক