Web bengali.cri.cn   
শান্ত ও সুন্দর আর মনোরম রিসোর্ট
  2013-06-06 19:14:18  cri

ফেসবুক, টুইটার, ইমেইল বিদায় তোমাদের। এ রকম একটি নজরকারা কথা দিয়েই বর্ণনা করা হয়েছে শান্ত, মনোরম প্রকৃতির রিসোর্টিকে। কেবল ফেসবুক, টুইটার, ইমেইল নয়, এই রিসোর্টতে এমনকি বিদ্যুত সংযোগও থাকে সম্পূর্ণ বিছিন্ন। বর্তমানে প্রযুক্তির সাথে সঙ্গিতপূর্ণ করে গড়ে তোলা হয়ে বিশ্বের নামি দামি খ্যাতনামা সব হোটেল আর রিসোর্টগুকে। আমরা আজ যে রিসোর্টটির কথা বলছি এটি সম্পূর্ণ প্রযুক্তি বিরোধী এবং বলা যায় প্রযুক্তিপূর্ব যুগের একটি রিসোর্ট এটি। প্রযুক্তির বিন্দুমাত্র ছোঁয়া না থাকাতেই যেন মনে হবে স্বপ্নের মতো অসম্ভব কোনো রূপকথার রিসোর্ট। কেননা এখানে নেই কোনো ঝাকঝমকপূর্ণ রঙীন আর ফ্যাশনবল মডেল বা চলচিত্রের অথবা পর্যটনের ছবির দেখা মিলবে না এবং এমন কি বিদ্যুত না থাকার স্বপ্নের মত জগত সৃষ্ট হয়েছে। প্রযুক্তি আর হাইটেকে আপাদমস্তক ডুবে থাকা এই আমরা যান্ত্রিক মানুষেরা, আমাদের উচিত স্বপ্নের ঘোরে হলেও প্রকৃতির কোলে মাথা রেখে কিছুটা সময়ের স্বপ্ন সুখ স্পর্শকরা।

‌‌‌‌‌‌মেক্সিকোর তুলুমের ৮০ মাইল দক্ষিণে কানকুন শহরের কাসা দ্য ওলাস নামে রয়েছে একটি রিসোর্ট। বলা যায় শহুরে কোলাহলের বাইরে সমূদ্রের বিচ সংলগ্ন একটি রিসোর্ট এই কাসা দ্য ওলাস। আপনিন যদি এই রিসোর্টের বাসিন্দা হতে চান তাহলে শুরুতেই আপনাকে একটি ওরিয়েন্টেশন কোর্স করতে হবে, যেখানে ইলেকট্রনিক সামগ্রীর সাথে আপনার যতই নেশাকাতর সম্পর্ক থাকুক না কেন, এই কোর্স আপনাকে যন্ত্র আর প্রযুক্তির-মোহ থেকে মুক্তি দিবে। আপনার ব্যবহার্য ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী রিসোর্টের বিশেষ একটি কক্ষ যেখানে সৌরশক্তি রয়েছে সেখানে জমা রাখতে হবে। আপনার ইলেক্ট্রনিক সামগ্রীগুলো যদি সৌরবিদ্যুত চালিত হয়ে থাকে, বিশেষ কিছু গুরুত্বপূর্ণ এবং অতি জরুরী বিষয়ের ক্ষেত্রেই কেবল ঐ কক্ষে বসে ইলেট্রনিক সামগ্রী ব্যবহার করা যেতে পারে। পুরো রিসোর্টে ওয়াই ফাই নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন এমনকি এখানে টেলিভিশন, টেলিফোন ও এসি কিছুই নেই। রিসোর্টের বাইরে বেশ দূরের নির্দিষ্ট কিছু পাবলিক জায়গায় যেখানে ওয়াই ফাই এর নেটওয়ার্ক রয়েছে বিশেষ অনুমতি সাপেক্ষে সেখানে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যেতে পারে। এখানে প্রত্যেক অতিথির কক্ষের সাথে নিজস্ব বিচ রয়েছে আবার সাধারণ বা কমন বিচও রয়েছে। এই রিসোর্টের অতিথিরা পাহাড়ের দূর্গম গুহা, স্পরিং ও বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ডুবো পাহাড়সহ বেশকিছু প্রাকৃতিক বিস্ময় আর সৌন্দর্যের চ্যালেঞ্জিং অভিজ্ঞতার স্বাদ গ্রহন করতে পারেন।

সেন্ট লুসিয়া জেড মাউন্টেনে আছে স্যাঙ্কচুয়ারিজ রিসোর্ট। এখানে দেখতে পারেন বিশাল পাহাড়ের আর সাগরের মোহনীয় সৌন্দর্য। শ্রোতা এখানে কিন্তু সময় নির্ধারণক করা হয় প্রাকৃতিক ঘড়ি দেখে অর্থাত্ চন্দ্র সূর্যের গতিবিধি দ্বারাই সময় নির্ধারণ করে নিতে হবে। কেননা এখানে যন্ত্রের ঘড়ি, টেলিফোন, ওয়েব নেটওয়ার্ক, টেলিভিশন কোনো কিছুরই দেখা পাবেন না, এমনটি ব্যক্তিগত সামগ্রীর ব্যবহারও সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এই রিসোর্টে রয়েছে সুবিশাল এবং দৃষ্টিনন্দন পুল বা পুকুর।

ভূটানের আমানকোরা অরণ্য উপত্যকায় রয়েছে আরেকটি রিসোর্ট। প্রাকৃতিক পরিবেশে এবং প্রকৃতি থেকে সংগ্রহীত উপাদান দ্বারা নির্মাণ করা হয় এই রিসোর্টটি। এ রিসোর্টে বেশ পরিপাটি করে সাজানো এবং প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে পরিচালিত একটি স্পা কেন্দ্র বা শরীর মাসাজ কেন্দ্র রয়েছে। এখানেও আপনি কোনো ওয়েব সেবা, টেলিভিশন এবং তথ্য প্রযুক্তির সেবা পাবেন না। বরং এর বিপরীতে আপনি বৌদ্ধ ধর্মীয় কৃত্য আর আচার দ্বারা পরিবেশিত নানান অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আপনার চিত্ত প্রশান্ত করনের মন্ত্র উপভোগ করতে পারেন। এখানে আপনি অতিত পুরান মন্দির দর্শন, প্রার্থনা এবং মেডিটেশন করতে পারেন।

মঙ্গোলিয়ার থ্রি ক্যামেল লজ

শ্রোতা আপনি যদি মঙ্গোলিয়ার থ্রি ক্যামেল লজে যেতে পারেন তাহলে এটা আপনার জন্য আজীবনের একটি অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে। প্রথমত এখানে যাওয়া রীতিমত কঠিন একটি ব্যপার কেননা এটি হচ্ছে সীমানা হারা গহীন এক মরুভূমির মাঝে। সেখানে যেতে চাইলে প্রথমে এক ঘণ্টার বিমান, এবং এরপর দেড় ঘন্টার গাড়িতে চড়ে অবশেষে পৌঁছে যেতে পারেন থ্রি ক্যামেল লজে। এই লজে এসে আপনাকে সম্পূর্ণতই প্রযুক্তির সংসর্গ ত্যাগ করতে হবে, ভুলে যেতে হবে প্রযুক্তি জগতের ভূত-ভবিষত্। এই রিসোর্টি এমন একটি জায়গায় অবস্থিত যেখানে রয়েছে ৫৪০ লাখ বর্ষের প্রাচীন আর ঐতিহাসিক আগ্নেয়গিরি। এই আগ্নেয়গিরির কোল ঘেষেই তৈরী করা হয়েছে ৫০টি সুন্দর তাঁবু। এখানে অজানা অনেক কিছু আবিস্কারের নেশায় মত্ত হতে পারেন এবং মরু পাখির অনুসন্ধানের মতো এ্যডভেঞ্চারের যুক্ত হতে পারেন। বরাবরে মতো এখানেও কোনো ওয়েবনেটওয়ার্ক, টেলিভিশন বা মোবাইল সংযোগ পাবেন না। কেবল বিশেষ জরুরী অবস্থা মোকাবেলার জন্য রয়েছে কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে সংকেত আদান প্রদান করা যায় এমন একটি ফোন এবং একটি স্ট্যান্ডবাই জেনারেটর।

জানজিবার

জানজিবার উপকূল থেকে অনেক দূরে মেনেমবা দ্বীপে রয়েছে আরেকটি রিসোর্ট। এই দ্বীপটিতেও আপনি যেকোনো প্রকার ডিজিটাল সংসর্গ থেকে বঞিত হবেন। এখানে রয়েছে দূর্লভ সাদা বালুর বিচ। মূলত ডাইভিং, ডলফিনের সাথে খেলা করা, সাঁতার কাটা এবং ব্যক্তিগত বিচে ডিনার উপভোগ করা প্রভৃতি এখানকার প্রধান আকর্ষণ। বরাবরের মতো এখানেও আপনি কোনো টেলিভিশন পাবেন না। তবু ছোট লাইব্রেরীতে আপনি দাবা, মেগাজিন এবং বই পেতে পারেন।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
লিঙ্ক