

আথুনিব আরান্দার সবজি বাগান
তাইওয়ান থেকে আগত ব্যবসায়ী মাদাম চেন আই লিং বলেন, মূলভূখণ্ডের মেলায় এটি তাঁর প্রথম অংশগ্রহণ নয়। তবে শোকুয়াং শাকসবজি মেলা তাঁর মনে সবচেয়ে গভীর ছাপ ফেলেছে। তিনি বলেন, "আমি মনে করি এ শাকসবজি মেলা খুব ভালো। আমি এখানে অনেক নতুন জিনিস দেখেছি। তাইওয়ান অপেক্ষাকৃত ছোট। আধুনিক বারান্দায় সবজি বাগানের মতো প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে আমাদের নিজের বাড়ির বারান্দায়ও বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি চাষ করতে পারি। আমি মনে করি, এ প্রযুক্তি তাইওয়ানেও জনপ্রিয় হবে।"
উচ্চ-প্রযুক্তি ছাড়া এবারের শাকসবজি মেলায় সবুজ কৃষি, পরিবেশ রক্ষার কৃষি এবং জ্বালানি সাশ্রয় কৃষিও লক্ষণীয় প্রদর্শনের বিষয় ছিল।
সমাজের ক্রম-অগ্রগতি আর জনগণের আয় বৃদ্ধির সাথে সাথে শাকসবজির নিরাপত্তাও দিন দিন আরো বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। যদিও এখন ব্যবহৃত কীটনাশক ওষুধ অত্যন্ত কার্যকর এবং কম বিষসম্পন্ন, তবুও শাকসবজির ওপর কিছু পরিমাণ কীটনাশক থাকতে পারে। ফলে এবারের মেলায় রাসায়নিক কীটনাশকের বিকল্প জৈব কীটনাশক প্রযুক্তি প্রদর্শিত হয়। এ মেলার আয়োজক কমিটি কার্যালয়ের উপপরিচালক সুই শেন লি বলেন,"প্রথম উপায় হচ্ছে জৈব ভরাট বাতি ব্যবহার করা। এ বিশেষ বাতির আলোর দ্বারা ফসলের উত্পাদন পরিমাণ ও গুণগত মান উভয় উন্নত হয়। দ্বিতীয় উপায় হচ্ছে পোকা দিয়ে পোকা নিয়ন্ত্রণ করা। তৃতীয় উপায় হচ্ছে অনিষ্টকারী কীটপতঙ্গের প্রাকৃতিক শত্রু হরমোনের মাধ্যমে সেগুলোর গন্ধ অনুসরণ করে উড়ে এসে অনিষ্টকারী কীটপতঙ্গকে খেয়ে ফেলবে। অথবা ফসলের ওপর অনিষ্টকারী কীটপতঙ্গের প্রাকৃতিক শত্রু র গাঁয়ে জল স্প্রে করা, যার গন্ধ পেয়ে অনিষ্টকারী কীটপতঙ্গ পালিয়ে যাবে।"
শাকসবজি মেলার ১৩ নম্বর প্রদর্শনী হলে ছিল ব্যাপক ভিড়। স্থানীয় অধিবাসী মাদাম লি বলেন, "শাকসবজি মেলায় আমি কৃষিযন্ত্রপাতি ও কৃষিজাত পণ্য সম্পর্কে জানতে পেরেছি এবং কিছু কিছু পণ্যও কিনেছি। আমি মনে করি, এ মেলা খুব ভালো। এ মেলার মাধ্যমে স্থানীয় কৃষকরা তাদের পণ্য উন্নত করার উপায় খুঁজে পাবে এবং প্রযুক্তি রপ্ত করতে পারবে।"
এ মেলার আয়োজক কমিটি কার্যালয়ের উপপরিচালক সুই শেন লি মনে করেন, শাকসবজি মেলা আয়োজনের উদ্দেশ্য হচ্ছে গবেষক আর চীন তথা সারা বিশ্বের কৃষক ও ব্যবসায়ীদের জন্য এক বিনিময় ও সহযোগিতা করার সুযোগ ও প্লাটফর্ম যোগানো এবং শাকসবজির নতুন প্রজাতি ও নতুন প্রযুক্তি সম্প্রসারণ করা। তিনি বলেন, "প্রতি বছর শাকসবজি মেলায় অনেক ধরনের নতুন প্রজাতি ও নতুন প্রযুক্তি প্রদর্শিত হয়। চীনের বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষক এখানে এসে শিক্ষা গ্রহণ করেন। এ মেলা চীনের কৃষকদের জন্য কল্যাণ সৃষ্টি করে। মেলা চলাকালে লাখ লাখ মানুষ চীনের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এখানে এসে মেলা পরিদর্শন করেন। কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ, অধ্যাপক ও গবেষণালয়ের উন্নত মানের সফলতা এখানে প্রদর্শনের পর শিগগির সেগুলো উত্পাদনে যায়। গবেষণালয়, একাডেমি আর কিছু শিল্পপ্রতিষ্ঠানের উন্নত পণ্য এখানে প্রদর্শনের পর তাদের বিক্রির পরিমাণ বাড়বে এবং খুব ভালো মুনাফা পাবে। এখন চীনের বাজারে খুব জনপ্রিয় রঙিন মরিচ, ক্ষুদ্র টমেটো আর ক্ষুদ্র শসা সবই শাকসবজি মেলা থেকে জনপ্রিয়তা পেয়েছে।" (ইয়ু/এসআর)

| ||||



